নাটোরে পদ্মার চরে বাহারী ফসলের মেলা

বাসস
প্রকাশ: ০৯ মার্চ ২০২৫, ১২:৪৪ আপডেট: : ০৯ মার্চ ২০২৫, ১৪:১৪
নাটোরের লালপুরে পদ্মার চরে চাষ হচ্ছে হলুদ সূর্যমুখীসহ বাহারী শস্য। ছবি: বাসস

॥ ফারাজী আহম্মদ রফিক বাবন ॥

নাটোর, ৯ মার্চ, ২০২৫ (বাসস) : জেলার লালপুরে পদ্মার চরে অনাবাদি বেদনার বালুচরে স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা। চাষ হচ্ছে বাহারী শস্য। বিস্তীর্ণ চর জুড়ে যেন রঙের মেলা বসেছে।

ধূসর পদ্মার বুক চিরে এখন যেন দিগন্ত বিস্তৃত সবুজের সমারোহ। এ সবুজের মধ্যে শুভ্র-সুন্দর ধনিয়া আর পেঁয়াজের ক্ষেত, হলুদ সূর্যমুখী, বেগুনী শিমের ফুল। রকমারী রঙের বর্ণছটা আর মৌমাছির গুঞ্জনে মোহনীয় সাজে সেজেছে পদ্মার চর।

লালপুর উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের বিলমাড়িয়া, রসুলপুর, চরজাজিরা, আরাজীবাকনাইসহ ১৮টি চরে শস্য আবাদ হচ্ছে । বিভিন্ন ধরনের অর্থকরি সবজি, ডাল ও মসলা জাতীয় শস্যে ভরপুর চরের তিন হাজার ৬৮৬ হেক্টর এলাকা। এরমধ্যে সর্বোচ্চ এক হাজার ৫৬৩ হেক্টর জমিতে আছে আখ, ৮৪১ হেক্টরে গম, ৪৮২ হেক্টরে মসুর, ৪৭৮ হেক্টরে চিনাবাদাম, সবজি ১২১ হেক্টরে, ধনিয়া ১৮ হেক্টরে, পেঁয়াজ ৩০ হেক্টরে, কালোজিরা পাঁচ হেক্টরে। এছাড়া ফলবাগান আছে ১২২ হেক্টরে। এরমধ্যে আম ৭৯ হেক্টরে, কুল ১৭ হেক্টরে, পেয়ারা ১৫ হেক্টরে, মাল্টা নয় হেক্টরে এবং লেবু দুই হেক্টরে। জেলায় শুধুমাত্র পদ্মার চরেই চিয়া সীড আবাদ করা হচ্ছে । উচ্চ মূল্য এ শস্য দ্রুত চরে সম্প্রসারিত হচ্ছে ।

কৃষি বিভাগ আরো জানিয়েছে, রবি মৌসুমেই সব চেয়ে বেশি চরের জমি আবাদ হয়। নদীতে পানির প্রবাহ আসায় খরিপ-১ মৌসুমে আবাদি জমি কমে হয় দুই হাজার ৯৪৬ হেক্টর এবং খরিপ-২ মৌসুমে সর্বনিম্ন এক হাজার ৭১৫ হেক্টর।

কৃষক মুনতাজ আলী জানান, উর্বর চরে অনায়াসে ফসল ফলানো যায়। তবে সেচ খরচ তুলনামূলকভাবে বেশি। বিএডিসি এ চরে সেচ স্ক্রীম চালু করলে আমরা উপকৃত হবো।

মুস্তাক আলী  বলেন, এবার দুই বিঘাতে ভুট্টা আবাদ করেছি। আশাকরি শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো থাকবে, অনেক ভালো ফলন পাবো।

পেঁয়াজের জমি পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক রাউফ মালিথা বলেন, বাজারে পেঁয়াজের উচ্চ ফলন দেখে পেঁয়াজ চাষ করেছিলাম, এখন বাজারে দাম কম। তাই মনে হয়, লাভ কম হবে এবার। অন্য ফসলে পুষিয়ে নিতে হবে।

লালপুর উপজেলা কৃষি অফিসার প্রীতম কুমার হোড় বলেন, কৃষি বিভাগ কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও প্রযুক্তি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। স্থাপন করা হয়েছে বিভিন্ন প্রদর্শনী খামার। বিশেষ করে ‘বাংলাদেশের চর এলাকায় আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্প’ এর আওতায় কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রদর্শনী খামারে সূর্যমুখী চাষ হচ্ছে ব্যাপকভাবে। চর এখন বৈচিত্র্যময় রকমারী শস্য উৎপাদনে অপার সম্ভাবনাময়। চরের উৎপাদিত উদ্বৃত্ত ফল ও সবজিসহ বিভিন্ন ফসল যাচ্ছে রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায়।

বিএডিসি (সেচ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সাজ্জাদ হোসেন পদ্মার চরে কৃষকদের প্রত্যাশিত সেচ স্কীম চালু করা প্রসঙ্গে বলেন, বিদ্যুৎ না থাকায় প্রচলিত সেচ সুবিধা প্রদান করা সম্ভব হচ্ছেনা। তবে পানাসী-২ প্রকল্পে প্রস্তাবিত সোলার সেচ প্রকল্প চালু করা হলে, পদ্মার চরে তা সংস্থাপন করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
জামায়াত আমির শফিকুর রহমানের শাশুড়ি ইন্তেকাল করেছেন
অপসংস্কৃতি থেকে শিশুদের রক্ষায় মঞ্চ নাটকের পুনর্জাগরণ প্রয়োজন : শারমীন এস মুরশিদ
৫ আগস্ট আমাদের লক্ষ্য ছিল গণভবন, এবার সংসদ : নাহিদ ইসলাম
দেশের জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় জনগণ ঐক্যবদ্ধ : মির্জা ফখরুল
আমার দেশ সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমানের মায়ের মৃত্যুতে তারেক রহমানের শোক
আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলার মধ্যেই নিহিত এতিম লালন পালনের স্বার্থকতা : ধর্ম উপদেষ্টা
আগামীকাল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংস্কার আলোচনা পুনরায় শুরু
নতুন বাংলাদেশ গড়তে ন্যায়বিচার, সংস্কার ও নতুন সংবিধান জরুরি : নাহিদ ইসলাম
নদীতে গোসল করতে নেমে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
ডিএমপির কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হলো তাজিয়া মিছিল
১০