ঢাকা, ৯ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে চার আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যাইব্যুনাল।
প্রসিকিউশনের আবেদনে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল আজ এই আদেশ দেন।
যে চার আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে তারা হলেন- সাবেক এএসআই আমির হোসেন, তাজহাট থানার কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরান চৌধুরী।
এদিকে আবু সাঈদ হত্যায় এখন পর্যন্ত ২৬ জনের বিরুদ্ধে অপরাধের প্রাথমিক প্রমাণ মিলেছে এবং তদন্ত শেষ পর্যায়ে বলে ট্রাইব্যুনালকে আজ জানিয়েছে প্রসিকিউশন।
গত ২ মার্চ প্রসিকিউশনের আবেদনে পরিপ্রেক্ষিতে এই চার জনকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশনা দেয়া হয়। সে অনুযায়ী আজ চার আসামিকে ট্র্যাইব্যুনালে হাজির করার পর প্রসিকিউশনের আবেদনে তাদের এই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়।
ট্র্যাইব্যুনালে আজ প্রসিকিউশন পক্ষে ছিলেন- প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, গাজী এমএইচ তামিম ও আবদুস সাত্তার পালোয়ান।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন যখন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল, তখন ১৬ জুলাই দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে গুলিবিদ্ধ হন আবু সাঈদ। ২৫ বছর বয়সী আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পুলিশ কর্তৃক নিরস্ত্র আবু সাঈদের গুলিবিদ্ধ হওয়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে, সারা দেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সোচ্চার হন বহু মানুষ, যাতে আরও গতিশীল হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন। ওই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা।