ঢাকা, ২১ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের নামে কোটি কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এবং জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাকে গেজেটভুক্ত করতে ঘুষ দাবি ও হয়রানির অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
কমিশনের প্রধান কার্যালয় থেকে সোমবার এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানকালে দুদক টিম মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে গৃহীত ৬টি প্রকল্পের রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে জানতে পারে, মোট বাজেটের মধ্যে প্রায় ৫ কোটি টাকা অর্থ ছাড় হয়েছে গৃহীত ১২ হাজার ক্লিপ ও প্রস্তুতকৃত একটি ডকুমেন্টারির জন্য। টিম অপর একটি প্রকল্পের বই ক্রয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান নির্বাচন প্রক্রিয়ার রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে, যা বিশ্লেষণ করে প্রাথমিকভাবে পরিলক্ষিত অসঙ্গতির সত্যতা যাচাই করা হবে।
অপর অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে দুদক টিম জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) থেকে রেকর্ডপত্র ও সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য বিশ্লেষণ করে। পর্যালোচনায় জামুকা’র একজন কর্মকর্তা আবেদনকারী মুক্তিযোদ্ধার দালিলিক প্রমাণ থাকার পরও মুক্তিযোদ্ধার গেজেটে নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য ঘুষ দাবির সত্যতা পায়। এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের লক্ষ্যে কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করবে এনফোর্সমেন্ট টিম।
এদিকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ওএমএস -এর চাল বিক্রয়, ফেয়ার প্রাইজ নির্ধারণ, খাদ্য শস্য সংগ্রহ ও বিভিন্ন প্রকল্পের অনিয়ম সংক্রান্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন অপর একটি অভিযান পরিচালনা করে। অভিযান পরিচালনাকালে কেরানীগঞ্জের কোনাখোলা খাদ্য গুদাম সরেজমিনে পরিদর্শন করা হয়। প্রাথমিক পর্যালোচনায় গুদাম থেকে ডিলারদের চাল সরবরাহে অনিয়ম টিমের কাছে পরিলক্ষিত হয়। পরবর্তীতে ওই অফিস থেকে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়।
এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে পাসপোর্ট সেবা প্রদানে গ্রাহক হয়রানি এবং দালালদের মাধ্যমে ঘুষ দাবির অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের একটি টিম নগরীর মনসুরাবাদস্থ বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে একটি অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানকালে টিম সেবাগ্রহীতার ছদ্মবেশে পাসপোর্ট সম্পাদন প্রক্রিয়ার যাবতীয় কার্যক্রম নজরদারি করে এবং সেবাগ্রহীতাদের বিভিন্ন সমস্যার বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে। এরপর পাসপোর্ট আবেদনকারীদের দাখিলকৃত প্রমাণিক রেকর্ডপত্রে বিভিন্ন অসঙ্গতি এবং রোহিঙ্গা শনাক্তকরণ সংক্রান্ত কতিপয় রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়। পাসপোর্টের আবেদন থেকে শুরু করে পাসপোর্ট সংগ্রহ করা পর্যন্ত প্রক্রিয়ায় প্রাতিষ্ঠানিক সীমাবদ্ধতার বিষয়টি স্বীকার করেন দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগীয় পরিচালক। সেবা প্রদানে গ্রাহক হয়রানি বন্ধে আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি দুদক টিমকে জানান। উপস্থিত সেবাগ্রহীতারা দুদকের এ অভিযানকে স্বাগত জানায়। অভিযানকালে সংগৃহীত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে টিম কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করবে।