রংপুর, ২৪ এপ্রিল, ২০২৫ ( বাসস): জেলার বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে পেঁয়াজের। সেইসঙ্গে বেড়েছে আদা, রসুনসহ কিছু সবজির দাম।
তবে দাম কমেছে আলু, ডিম ও পোলট্রি মুরগির। এছাড়া অপরিবর্তিত রয়েছে চাল, ডাল, তেল, মাছ ও মাংসের দাম।
আজ বৃহস্পতিবার নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহে বিক্রি হওয়া দেশি পেঁয়াজ ৩০-৩৫ টাকা থেকে লাফিয়ে ৫০-৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া টমেটো ১৫-২০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ২৫-৩০ টাকা, গাজর গত সপ্তাহের মতোই ২৫-৩০ টাকা, ঝিংগা ৬০-৭০ টাকা, বাঁধাকপি ১৫-২০ টাকা পিস, চালকুমড়া (আকারভেদে) ৪০-৫০ টাকা, কাঁচকলা ২৫-৩০ টাকা হালি, সজনে ৭০-৮০ টাকা থেকে বেড়ে ৮০-১০০ টাকা, চিকন বেগুন ৩৫-৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৪৫-৫০ টাকা, গোল বেগুন আগের মতোই ৫০-৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৫৫-৬০ টাকা, পটল ৫০-৬০ টাকা, শিম ৩০-৪০ টাকা, বরবটি ৩০-৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৫০-৬০ টাকা, পেঁপে ৩৫-৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৪৫-৫০ টাকা, শসা ৪০-৫০ টাকা, করলা ৫০-৬০ টাকা থেকে বেড়ে ৭০-৮০ টাকা, লাউ (আকারভেদে) ৫০-৬০ টাকা, কচুরলতি ৬০-৭০ টাকা, লেবুর হালি ২০-২৫ টাকা, ধনেপাতা ৩০-৪০ থেকে বেড়ে ৫০-৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ২৫-৩০ টাকা, শুকনা মরিচ ৪০০-৪৫০ টাকা এবং সব ধরনের শাক ১০ থেকে ২০ টাকা আঁটি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে কার্ডিনাল আলু গত সপ্তাহের তুলনায় সামান্য কমে ১৫-১৮ টাকা, শিল আলু ৩০-৩৫ টাকা, ঝাউ আলু ৩০-৩৫ টাকা এবং বগুড়ার লাল পাগড়ি আলু ২৫-৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে সিটি বাজারের ব্যবসায়ী মকবুল হোসেন বলেন, অনেকে পেঁয়াজ ঘরে সংরক্ষণ শুরু করেছেন। এ কারণে চাহিদার তুলনায় বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কমে গেছে। এছাড়া বাইরে থেকে পেঁয়াজ আমদানি না করায় দাম বাড়তে শুরু করেছে।
সিটি বাজারে সবজি কিনতে আসা আয়নাল হক জানান, হঠাৎ পেঁয়াজের দাম কেজিতে বৃদ্ধি পেয়েছে ৩৫ টাকা, আমরা সাধারণ ভোক্তারা খুব বিপাকে রয়েছি অন্য কিছু সবজি দামও বৃদ্ধি পেয়েছে।
সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা বাজারে পোলট্রি মুরগির ডিমের হালি ৪০-৪২ টাকা থেকে কমে ৩৮-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি কাঁচামরিচ আগের মতোই বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা, আদার দাম বেড়ে হয়েছে ১২০-১৪০ টাকা, রসুন ৯০-১০০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১১০-১২০ টাকা।
লালবাগ বাজারের সবজি বিক্রেতা শরিফুল ইসলাম বলেন, সবজি বাজারে ঈদের প্রভাব শেষ হয়েছে। চাহিদার তুলনায় যেসব সবজির সরবরাহ কম, সেগুলোর দাম বাড়ছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, ব্রয়লার মুরগি গত সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা কমে ১৭০-১৮০ টাকা, পাকিস্তানি সোনালি মুরগির দাম কমে ২৬০-২৮০ টাকা, পাকিস্তানি (হাইব্রিড) ২৫০ টাকা, দেশি মুরগি গত সপ্তাহের দরেই ৫০০-৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে গরুর মাংস অপরিবর্তিত ৭২০-৭৫০ টাকা এবং খাসির মাংস ১০০০-১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মুলাটোল আমতলা বাজারের মুরগি বিক্রেতা আমির হোসেন বলেন, বাজারে এখন মুরগির আমদানি বেশি। সে তুলনায় বিক্রি কম। এ কারণে গত সপ্তাহের চেয়ে দাম কিছুটা কমেছে।
এই বাজারে রসুন কিনতে আসা গৃহবধূ ফারিহা জানান, এক সপ্তাহ আগে রসুন কিনেছিলাম ৫০ টাকা এখন সেই রসুন ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের কোনো পদক্ষেপ দেখছি না।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা বাজারে এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন আগের মতোই ১৭৫-১৮০ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেল ১৮০-১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে মসুর ডাল (চিকন) আগের মতোই ১৩০-১৪০ টাকা, মাঝারি ১০০-১১০ টাকা, মুগডাল ১৬০-১৮০ টাকা, বুটের ডাল ১২০-১৩০ টাকা, চিনি ১২০-১২৫ টাকা, ছোলা ১১০-১২০ টাকা, প্যাকেট আটা ৫০ টাকা, খোলা আটা ৪০-৪৫ টাকা এবং ময়দা ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
চালের বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, খুচরা বাজারে আগের মতোই স্বর্ণা (মোটা) ৪৮-৫০ টাকা, স্বর্ণা (চিকন) ৫৮-৬০ টাকা, বিআর২৮, ৮০-৮৫ টাকা, জিরাশাইল ৭৩-৭৫ টাকা, মিনিকেট ৯০-৯৫ টাকা এবং নাজিরশাইল ৯৫-৯৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, আকারভেদে রুইমাছ ২৭০-৩৫০ টাকা, মৃগেল ২২০-২৫০ টাকা, কারফু ২০০-২২০ টাকা, পাঙাস ১৫০-১৬০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০-১৬০, কাতল ৪০০-৪৫০ টাকা, বাটা ১৬০-১৮০ টাকা, শিং ৩০০-৪০০ টাকা, সিলভার কার্প ১৫০-২৫০ টাকা এবং গছিমাছ ৮০০-১০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক রবিউল ফয়সাল জানান, বাজার নিয়ন্ত্রণে ভোক্তা অধিকার ও জেলা প্রশাসনের বিশেষ টিম কাজ করছে।