যশোরে বোরো’র অধিক ফলন, ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত কৃষক

বাসস
প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১৬:৪৩
ছবি : বাসস

যশোর, ২৪ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : জেলায় বোরো ধানের অধিক ফলন হয়েছে। জেলার সর্বত্র মাঠের পর মাঠজুড়ে এখন পাকা ও আধা পাকা ধানের মিষ্টি ঝংকার। আশানুরূপ ফলন হলেও চাষীর মনে এখন বৈশাখী ঝড়-বৃষ্টির শঙ্কা। তাই আগেভাগেই ক্ষেত থেকে ধান ঘরে তুলতে এখন মহাব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। 

ঝড়-বৃষ্টির ক্ষতি এড়াতে জেলা  কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে চাষীদের নানারকম পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ৮০ শতাংশ পাকলেই ধান কেটে ফেলতে বলা হচ্ছে। দ্রুত ধান কাটতে ও মাড়াই করতে রিপার ও হার্ভেস্টার ব্যবহারে উৎসাহিত করা হচ্ছে। প্রয়োজনে অন্য জেলা থেকে মৌসুমী শ্রমিকদের নিয়ে আসারও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর তথ্য অনুযায়ী, আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলায় ২০ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে বেশিরভাগ ধান কাটা শেষ হবে বলে তারা আশা করছেন। তবে কিছু ধান দেরিতে রোপন করায় সেগুলো কাটতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। 

জেলায় এবার গতবারের চেয়েও তিন হাজার হেক্টর বেশি জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের  তথ্য অনুযায়ী, এবার এক লাখ ৬০ হাজার ৭৭৫ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হয়। এর মধ্যে এক লাখ ৩২ হাজার হেক্টর জমিতে উফশী (উচ্চ ফলনশীল) জাত এবং বাকি জমিতে হাইব্রিড জাতের ধান রয়েছে। 

গত মৌসুমে জেলায় বোরো আবাদ হয়েছিল এক লাখ ৫৭ হাজার ৮৮০ হেক্টর জমিতে। 

অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, এবার জেলায় উৎপাদিত ধান থেকে ৭ লাখ ২৮ হাজার মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে। এ পরিমান চালের বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা। 
জেলা সদর উপজেলার কৃষক রেজাউল এবার দুই বিঘা জমিতে ব্রি-২৮ জাতের ধানের আবাদ করেছিলেন। তার জমির ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ গত রোববার শেষ হয়ে গেছে। ধানের ফলনে খুশি রেজাউল বলেন, প্রতি কাঠায় তিনি দেড় মন ধান পেয়েছেন। 

বাঘারপাড়ার কৃষক আব্দুর রহমান বোরোর আবাদ করেছেন ৫ বিঘা জমিতে। ইতিমধ্যে ধান কাটা শুরু করেছেন তিনি। শেষ হতে আরও কয়েকদিন লাগবে বলে জানান। তিনি বলেন, ‘আগামী কয়েকদিনের মধ্যে যদি বড় ধরণের ঝড়-বৃষ্টি না হয় এবং বাজারে দাম যদি ভাল থাকে, চাষীরা লাভবান হবেন।  

সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক ফসিয়ার রহমান এক বিঘার কিছু বেশি জমিতে বোরোর আবাদ করেন। এই আবাদে তার খরচ হয়েছে ৬৫ হাজার টাকা। ফসিয়ার বলেন, ‘বাজারে বর্তমানে যে দাম আছে তাতে তিনি ৮০ হাজার টাকার ধান বিক্রি করতে পারবেন। দাম এর চেয়ে কম হলে লোকসান হবে। 

ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন পলাশ বলেন, অনেক ক্ষেত্রে বিনামূল্যে বীজ ও সার প্রদান, কৃষকদের জলবায়ুর ওপর প্রশিক্ষণ, ধানের বাজারমূল্য বৃদ্ধি, সারপ্রাপ্তি নিশ্চিত করা, আধুনিক প্রযুক্তির প্রসার এবং কৃষি বিভাগের সার্বিক তত্ত্বাবধানের কারণে এবার বোরোর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, যশোর জেলায় এবার যে পরিমান ধান হবে বলে আশা করা হচ্ছে তা থেকে ৭ লাখ ২৮ হাজার মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে। এর বাজারমূল্য প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা। 

তিনি বলেন, ‘ঝড়-বৃষ্টির ক্ষতি এড়াতে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে বেশিরভাগ ধান কেটে ফেলতে হবে। ৮০ ভাগ পাকলেই ধান কেটে ফেলার জন্য উপজেলা কৃষি অফিস থেকে চাষীদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ধান কাটতে রিপার ও হার্ভেস্টার ব্যবহার করতে বলা হচ্ছে। প্রয়োজনে অন্য জেলা থেকে মৌসুমী শ্রমিকদের আনতেও বলা হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত
ইবির ‘ল এন্ড ল্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ বিভাগের নতুন চেয়ারম্যান বিলাসী সাহা
দুবাই পালানোর চেষ্টা ব্যর্থ : গাজীপুরের আন্তঃজেলা ডাকাত দলের প্রধান গ্রেফতার
বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে বিভেদ কেন প্রশ্ন এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জুর
বাংলাদেশ ও মালদ্বীপ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে
বঙ্গোপসাগরে ট্রলারসহ ২৪ জেলেকে উদ্ধার করেছে নৌবাহিনী
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে বড় পতন, অধিকাংশ শেয়ারের দাম কমেছে
তথ্যপ্রযুক্তি খাতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে কারিগরি সহায়তা প্রদানের জন্য এটুআই-এ আইসিটিসি সেল খোলা হবে : ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব
টিকিট ছাড়া সিলেট টেস্ট দেখার সুযোগ পাচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
নাগরিক সেবা প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হলো ডিএনসিসি
১০