পা দিয়ে লিখে হাবিপ্রবিতে ভর্তি পরীক্ষায় ‘বি’ ইউনিটে মেধা তালিকায় স্থান পেয়েছেন প্রতিবন্ধী মানিক

বাসস
প্রকাশ: ১৩ মে ২০২৫, ১৬:৩৭
হাবিপ্রবি ভর্তি পরীক্ষায় পা দিয়ে লিখে ‘বি’ ইউনিটে মেধা তালিকায় ১৯২তম স্থান অধিকার করেছেন কুড়িগ্রাম ফুলবাড়ী উপজেলার শারীরিক প্রতিবন্ধী মানিক রহমান। ছবি: বাসস

দিনাজপুর, ১৩ মে, ২০২৫ (বাসস): দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) ভর্তি পরীক্ষায় পা দিয়ে লিখে ‘বি’ ইউনিটে মেধা তালিকায় ১৯২তম স্থান অধিকার করেছেন কুড়িগ্রাম ফুলবাড়ী উপজেলার শারীরিক প্রতিবন্ধী মানিক রহমান।

হাবিপ্রবি'র জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক মো. খাদেমুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন,ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর মানিকের এ সাফল্যের ধারাবাহিকতায় তার বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীসহ সবাই আনন্দ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।

জানা যায়, মানিক রহমান গত ২০২২ সালে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী জছি মিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেন। ২০২৪ সালে নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। তার বাড়ি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার সদর ইউনিয়নের চন্দ্রখানা গ্রামে। তিনি ওষুধ ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ও সহকারী অধ্যাপক মরিয়ম বেগমের বড় ছেলে।

শুধু এসএসসি-এইচএসসিতে নয়, বাবা-মা ও শিক্ষকদের অনুপ্রেরণায় নিজের আত্মবিশ্বাস ও মনোবলকে কাজে লাগিয়ে পিইসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫সহ ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি এবং জেএসসিতেও গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে সবার মুখ উজ্জ্বল করেছেন মানিক। 

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মানিক পা দিয়ে মোবাইল চালানো এবং কম্পিউটার টাইপিং এ যথেষ্ট পারদর্শীও। তাই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ভবিষ্যতে একজন দক্ষ কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন তার। কঠোর পরিশ্রম আর অধ্যবসায়ের কারণে অবশেষে তার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন পূরণের দ্বার উন্মোচিত হলো।

আজ মঙ্গলবার মানিকের বাবা মো. মিজানুর রহমান ও মা মরিয়ম বেগম বলেন, আমাদের দুই ছেলের মধ্যে মানিক বড়। ছোট ছেলে মাহীম নবম শ্রেণিতে পড়ে। মানিক জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। তার দু'টি হাত নেই, একটি পা অন্যটার চেয়ে অনেকাংশে খাটো, কিন্তু প্রতিবন্ধী হলেও আমরা তাকে প্রতিবন্ধী মনে করি না। হাত না থাকায় ছোট থেকেই আমরা তাকে পা দিয়ে লেখার অভ্যাস শিখিয়েছি। পা দিয়ে লিখলেও তার লেখা অনেক সুন্দর এবং পড়াশোনায় সে খুবই মনোযোগী।

মানিক বলেন, আমার দুটি হাত না থাকলেও আল্লাহর অশেষ রহমত, বাবা মা ও শিক্ষকদের দোয়া এবং অনুপ্রেরণায় আমি পিইসি থেকে এইচএসসি পর্যন্ত সব পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছি। এ বছর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে মেধা তালিকায় ১৯২ তম স্থান অধিকার করেছি। 

একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হতে চান মানিক।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
বিডা কর্মচারী সংসদ নির্বাচন ২০২৫ শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন
ডিএমপির বিশেষ অভিযানে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ৪১ জন গ্রেফতার
শিল্পী এস এম সুলতান বাংলাদেশের নতুন শিল্প আন্দোলনের অগ্রদূত : রুহুল কবির রিজভী
ঢাকা মহানগর উত্তর শ্রমিক লীগের সভাপতি গ্রেফতার
গত এক বছরে ১৫,৮৫১ পুলিশ, ৪৪৬৯ বিজিবি সদস্য, ৫৫৫১ আনসার সদস্য নিয়োগ : জাহাঙ্গীর
দুবাইয়ে ২৫ মিলিয়ন ডলারের চুরি হওয়া হীরা উদ্ধার
মিরসরাইয়ে দুই ঘন্টার ব্যবধানে পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু
ভোলায় আদালতের অভ্যন্তরে রাস্তা সংস্কার না করে দেয়াল নির্মাণ
ছেলেহারা বাবার কান্নায় ট্রাইব্যুনালে নিঃশব্দ নীরবতা
প্লাস্টিক বর্জ্যের ব্যবহার কমিয়ে আনতে না পারলে জলবায়ুর ঝুঁকি আরও বাড়বে 
১০