আব্বাছ হোসেন
লক্ষ্মীপুর, ২১ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে ভরা মৌসুমেও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ ইলিশ। জেলেদের কেউ কেউ নদী থেকে ফিরছেন খালি হাতে। এ সংকটে জেলায় চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, জালে মাছ আটকাচ্ছে কম, তাই সরবরাহ কম। এ কারণে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে ইলিশ।
তারা জানান, বর্তমানে এক কেজি সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৮০০ থেেক ৩ হাজার টাকায়, ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৩০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকায়, ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৫০০ থেকে এক হাজার ৬০০ টাকায়।
কটরিয়া মাছঘাটের আড়তদার আলমগীর মোল্লা, জুলফিকার ও জেলে আলী আহমেদ, আক্কাস, রবিউলসহ কয়েকজন জানান, নদীতে ইলিশের পরিমাণ কম। ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধি ও জাটকা সংরক্ষণে বছরে আড়াই মাস নদীতে নিষেধাজ্ঞা থাকে। এরপরও নদীতে ইলিশের পরিমাণ বাড়েনি। এক একটি নৌকা সারাদিন জাল মেরে ৪-৫টি থেকে বড়জোর ৮-১০টি ছোট ইলিশ পাচ্ছে। প্রাপ্তি কম বলেই দাম বাড়ছে। ইলিশের উৎপাদন বাড়লে জালেও বেশি ধরা পড়ত, দামও নাগালের মধ্যে হতো।
তবে সূত্র জানিয়েছে, অল্প কিছু মাছ ধরা পড়লেও দাম তুলনামূলক বেশি নিচ্ছেন মাছ ব্যবসায়ীরা। জেলার ২৫টি ঘাটেই হালি বা পিস অনুযায়ী ইলিশের নিলাম বা ডাক ওঠে। কেজি দরে বিক্রি হয় না। তাই দাম বেশি।
জেলা মৎস্য বিভাগ জানায়, লক্ষ্মীপুরে গত বছর ইলিশ উৎপাদন হয়েছে ২৩ হাজার টন। মাছঘাট রয়েছে ২৫টি।
এসব ঘাটের প্রতিটিতে গড়ে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে ৩ টন বা সাড়ে ৩ হাজার কেজি ইলিশ উৎপাদন হয়।
কিন্তু ঘাটের ব্যবসায়ীরা বলেন, জেলেরা নদী ও সাগর থেকে এসে ঘাটের আড়তদারদের বক্সে মাছ রাখে। এরপর উন্মুক্ত নিলামে হালি হিসেবে ইলিশ বিক্রি হয়। ইলিশের আকালে প্রতিদিন ঘাটগুলোতে মোটে ২০ টন ইলিশও পাওয়া যাচ্ছে না।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন জানান, জেলায় ২৫টি মাছঘাটের মধ্যে সদর, রামগতি, কমলনগরের মতো ১২টি বড় মাছঘাটে মৎস্য অফিসের পক্ষ থেকে ১২জন গণনাকারী রয়েছেন। প্রতি সন্ধ্যায় তারা মৎস্য অফিসে ইলিশ আহরণের হিসাব পাঠান। এর মাধ্যমেই মৎস্য বিভাগ ইলিশ উৎপাদনের হিসাব করেন।