ঢাকা, ৪ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস): ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, অধিগ্রহণকৃত জমি যে কাজের জন্য নেয়া হচ্ছে সে কাজ ব্যতীত অন্য কাজে ব্যবহার করা যাবে না। জমি ব্যবহৃত নাহলে জেলা প্রশাসকের নিকট সেই জমি ফেরত দিতে হবে।
আজ ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে ভূমি উপদেষ্টার সভাপতিত্বে ‘অধিগ্রহণকৃত অব্যবহৃত ও বেদখল জমি ব্যবহার ও পুনরুদ্ধার’ বিষয়ক উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির প্রথম সভায় তিনি এ কথা বলেন।
ভূমি উপদেষ্টা বলেন, অধিগ্রহণ করা অব্যবহৃত ও বেদখলকৃত জমি পুনরুদ্ধার করা খুবই জরুরি। আমাদের ভূমি দিনে দিনে হ্রাস পাচ্ছে তাই জমির সঠিক ব্যবহারে নিশ্চিত করতে হবে। একসময় জেলা, উপজেলা এবং গ্রামে পোস্ট অফিস, টেলিফোন এক্সচেঞ্জ, টেলিগ্রাফ অফিস ছিল সেগুলো কোথায়? সেইসব প্রতিষ্ঠানের জমি উদ্ধার করে অন্ততপক্ষে বনায়ন করা হলেও ভূমিগুলো সরকারের দখলে থাকবে। এই ধরনের জমি পুনরুদ্ধার ও ব্যবহারের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া এখন সময়ের দাবি।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ভূমি উপদেষ্টা বলেন, অব্যবহৃত ও বেদখল জমি উদ্ধার করা রাষ্ট্রের জন্য খুবই কল্যাণকর। এতে রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে সাহায্য করবে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে, ভূমি রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে এবং পরিকল্পিত নগরায়ণ ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে, যা জীবনযাত্রার মান উন্নত করবে। অব্যবহৃত ও বেদখল জমি উদ্ধার করা রাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সভায় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, অধিগ্রহণকৃত অব্যবহৃত ও বেদখল জমির তথ্য জেলা প্রশাসকদের কাছ থেকে নিতে হবে। এছাড়াও মন্ত্রণালয় ও এর অধিদপ্তর থেকেও অব্যবহৃত ভূমির তথ্য নিতে হবে। উভয় তথ্য ক্রস চেক করলে প্রকৃত হিসাব পাওয়া যাবে। এছাড়া সরকারি প্রতিষ্ঠানের জমির প্রয়োজন হলেও কিনে নিতে হবে, নামমাত্র মূল্যে নয়। প্রকৃত মূল্যে কিনতে হবে। প্রয়োজনে আইনের সংশোধন ও নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, অর্পিত সম্পত্তি ও শত্রু সম্পত্তির ক্ষেত্রে আইনজীবী নিয়োগে আরো সতর্ক হতে হবে। অন্যথায় জমিগুলো সব বেদখল হয়ে যাবে। ঢাকা শহরের কয়েক হাজার অর্পিত সম্পত্তি রয়েছে যার অধিকাংশ বেদখলে। এসব ক্ষেত্রে আইনজীবীদের সম্মানী খুবই কম এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
সভায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকে কো-অপ্ট করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এছাড়াও ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ এর নেতৃত্বে ‘স্টক টেকিং’ কমিটি এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ এর সিনিয়র সচিব মো. এহছানুল হক এর নেতৃত্বে ‘ব্যবহার সংক্রান্ত’ কমিটি করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ এর সিনিয়র সচিব মো. এহছানুল হক, সেতু বিভাগের সচিব মোহাম্মদ আবদুর রউফ, কৃষি সচিব এমদাদ উল্লাহ মিয়ান, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান, ঢাকার বিভাগীয় কমিশনারসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।