।। নীলা হাসান।।
ঢাকা, ৫ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে স্থবিরতা কাটিয়ে গত এক বছরে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে ফিরে এসেছে প্রাণ চাঞ্চল্য। ফেডারেশন, জেলা ক্রীড়া সংস্থাগুলোতে ফিরেছে ব্যস্ততা। বিশেষ করে নতুনভাবে ঢেলে সাজানো জাতীয় ফেডারেশনগুলো এখন নতুন নেতৃত্বের মোড়কে নিজেদের প্রমানে যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এজন্য মিলেছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সার্বিক সহযোগিতা।
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সুচিন্তিত নেতৃত্বে এই এক বছরে যতটুকু পরিবর্তনই ক্রীড়াঙ্গনে হয়েছে তা নিয়ে আশাবাদী হওয়াই যায়।
দূর্নীতির কষাঘাত থেকে ক্রীড়াঙ্গনকে মুক্ত করার অংশ হিসেবে নেয়া হয়েছে বেশ কিছু পদক্ষেপ। যেখানে রয়েছে নতুনত্বের ছোঁয়া, একইসাথে সাহসিকতার পরিচয়।
অন্তর্বর্তী সরকারের বর্ষপূর্তীতে বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে সবচেয়ে বড় সাফল্য হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে বাংলাদেশের নারী ফুটবল দলের প্রথমবারের মত এএফসি এশিয়ান কাপের মূল পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন। বাছাইপর্ব পেরিয়ে বাংলাদেশের ফুটবল তথা ক্রীড়াঙ্গনের ইতিহাসে এতবড় সাফল্য এর আগে কখনই আসেনি।
তারুণ্যের উৎসব :
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের গৃহীত পদক্ষেপের গুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রথমে উল্লেখ করতে হয় ‘তারুণ্যের উৎসব’ এর কথা। রেকর্ড সংখ্যক নারীর অংশগ্রহণে ‘এসো দেশ বদলাই, এসো পৃথিবী বদলাই’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে মাসব্যাপী বাংলাদেশের তারুণ্যের উৎসবের প্রথম পর্ব ফেব্রুয়ারিতে শেষ হয়।
এই ধরনের উৎসবের মাধ্যমে দেশের প্রায় প্রতিটি ফেডারেশনই প্রতিভা অন্বেষনের মাধ্যমে নতুন খেলোয়াড় খুঁজে পেয়েছে। একইসাথে সকলের পক্ষ থেকে এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখারও আহবান জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মত বিভিন্ন ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে তরুণীদের ব্যপক অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতন। এই উৎসবে ফুটবল, ক্রিকেট, কাবাডি, ব্যাডমিন্টন, ভলিবল এবং বাস্কেটবলসহ বিভিন্ন ধরণের খেলায় নারীরা অংশগ্রহণ করেছেন।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, তারুণ্যের উৎসবের মাধ্যমে দেশজুড়ে কমপক্ষে ২ লাখ ৭৪ হাজার নারী ও তরুণী ২ হাজার ৯৩১টি ক্রীড়া ইভেন্ট এবং সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন।
বিভিন্ন ইভেন্টে সর্বমোট ম্যাচের মধ্যে কমপক্ষে ৮৫৫টি ছিল ফুটবল ম্যাচ এবং এগুলোর মধ্যে কিছু অনুষ্ঠিত হয়েছে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এ পর্যন্ত এত বেশি নারী এর আগে কখনও এত বিপুল সংখ্যক ক্রীড়া ইভেন্টে অংশগ্রহণ করেননি।
অর্ন্তবর্তী সরকার এবং স্থানীয় কর্তৃৃপক্ষ দেশের ৫শর বেশি গ্রামীণ উপজেলা শহরে নারীদের ক্রীড়া ইভেন্টগুলো ব্যাপক উদ্দীপনার সাথে আয়োজন করে, যেখানে হাজার-হাজার দর্শক উৎসবমুখর পরিবেশে এই ম্যাচগুলো দেখেছেন।
নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে দ্বিতীয় মেয়াদে এই তারুণ্যের উৎসব এ বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষনা দিয়েছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়।
ক্রীড়াঙ্গন সংষ্কারে সার্চ কমিটি গঠন :
দেশের ক্রীড়াঙ্গনে ফেডারেশন, এসোসিয়েশন, বোর্ড ও সংস্থাগুলোর কার্যক্রম সুষ্ঠভাবে পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রস্তাব সরকারের কাছে উপস্থাপনের নিমিত্তে গত বছর ২৯ আগস্ট সার্চ কমিটি গঠন করে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়।
সাবেক জাতীয় ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়ন জোবায়েদুর রহমান রানাকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের সার্চ কমিটি করা হয়।
সার্চ কমিটি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন ২০১৮ এর আলোকে ফেডারেশন, এসোসিয়েশন ও সংস্থাগুলোর চলমান কার্যক্রম সম্পর্কিত বিষয় পর্যালোচনা করে সরকারের কাছে প্রস্তাব আকারে পেশ করতে বলা হয়েছিল। ক্রীড়া প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবস্থাপনা কর্মকান্ডসহ অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ সংক্রান্ত বিদ্যমান নীতিমালা বিশদ পর্যালোচনা করে সুপারিশমালা প্রণয়নেরও নির্দেশ দেয়া হয়।
৫৫ ফেডারেশন/এসোসিয়েশনের কমিটি নিয়ে কাজ করেছে সার্চ কমিটি। এ পর্যন্ত শুধুমাত্র বাংলাদেশ মহিলা ক্রীড়া সংস্থা বাদে সবগুলো ফেডারেশন/এসোসিয়েশনের এ্যাডহক কমিটিও সার্চ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে ঘোষনা করেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)।
ক্রীড়াঙ্গন সংষ্কারে নতুন কমিটি :
সার্চ কমিটির কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শেষের পর ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সাংগঠনিক সংস্কারের জন্য একটি আলাদা কমিটি গঠনের কথা বলেছিলেন। তারই প্রেক্ষিতে সুশাসন প্রতিষ্ঠান নিমিত্তে গত ২৪ জুন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ৭ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। নতুন এই কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে আছেন ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (ক্রীড়া-১) সেলিম ফকির। সদস্য সচিব জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিচালক (ক্রীড়া) হুমায়ন কবীর। কমিটির অন্য পাঁচ সদস্য হলেন জোবায়েদুর রহমান রানা, আজাদ মজুমদার, ব্যারিস্টার শাইখ মাহাদী, উশু ফেডারেশনের সহ-সভাপতি লে. কর্নেল আবু আইয়ুব মোহাম্মদ হাসান ও জিমন্যাস্টিক্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান জামিল।
এই কমিটি গঠনের উদ্দেশ্যের প্রেক্ষাপটে বলা হয়েছে, ‘ক্রীড়াঙ্গনে অধিকতর গতিশীলতা আনয়নের মাধ্যমে সুশাসন নিশ্চিতকরণে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ অধিভুক্ত ফেডারেশন সমূহের গঠনতন্ত্র ও অ্যাফিলিয়েশন প্রাপ্তির বিদ্যমান নীতিমালা যুগপোযোগী করণে সুপারিশ প্রণয়নের লক্ষ্যে নিম্নোক্ত কমিটি গঠন করা হলো।’
আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য কোন ধরনের নীতিমালা এতদিন পর্যন্ত ছিলনা। এই কমিটির মাধ্যমে এই ধরনের নীতিমালার একটি সুপারিশ চাওয়া হয়েছে। একইসাথে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির চার্টার অনুযায়ী বাংলাদেশে বিদ্যমান ফেডারেশনগুলো সংখ্যা ঠিক কতটা হওয়া উচিও সে ব্যপারেও সুস্পষ্ট কিছু দিক নির্দেশনা এই কমিটির কাছে চাওয়া হয়েছে।
বিভাগীয়-জেলা ক্রীড়া সংস্থা ভেঙ্গে এ্যাডহক কমিটি :
রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে দেশের ক্রীড়াঙ্গনেও যে বড় পরিবর্তন আসবে তা অনুমেয় ছিল। তারই ধারাবাহিকতায় ক্রীড়া সংস্থাসমূহের কার্যক্রম সুষ্ঠ, সক্রিয়, সচল ও নির্বিঘ্ন রাখার প্রয়োজনে সরকার গঠনের দুই সপ্তাহের মধ্যে দেশের সব জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা, সব জেলা ও বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া সংস্থা, সব উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা ও উপজেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থা ভেঙে দেওয়া হয়। এটাই ছিল ক্রীড়াঙ্গনকে ঢেলে সাজানোর লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের প্রথম পদক্ষেপ।
ক্রীড়া সংস্থাগুলোতে সর্বজন গ্রহনযোগ্য ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সম্পৃক্ত করে এ্যাডহক কমিটি ইতোমধ্যেই গঠিত হয়েছে।
হামজা খুঁজতে সব ফেডারেশনকে এনএসসির চিঠি :
বিশ্বের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বাংলাদেশে বংশোদ্ভূত নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ। দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে এসব প্রবাসী ক্রীড়াবিদদের দিয়ে সমৃদ্ধ করার প্রয়াস বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই শুরু হয়েছে। এ্যাথলেটিক্সে ইংল্যান্ড প্রবাসী ইমরানুর রহমান, জিমন্যাস্টিক্সে আমেরিকান প্রবাসী সাইক সিজার, নিউজিল্যান্ড প্রবাসী আলি কাদির, লন্ডন প্রবাসী জুনাইনা আহমেদ কিংবা ফুটবলে ডেনমার্কের জামাল ভূঁইয়ার নাম সকলের কাছেই পরিচিত। কিন্তু সবকিছুকে ছাপিয়ে গেছে ইংলিশ ফুটবলার হামজা চৌধুরীর আগমন। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা হামজা চৌধুরীর আগমনে বাংলাদেশের ফুটবল যেন নতুন করে জেগে উঠেছে। তারই পথ ধরে একে একে জাতীয় দলে জায়গা করে নেয় ফাহমিদুল, সামিত সোমরা।
হামজার মতই বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে থাকা ক্রীড়াবিদদের খুঁজে বের করতে গত এপ্রিলে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বিভিন্ন ফেডারেশনে চিঠি দিয়েছে। যা দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য বর্তমান সরকারের একটি সময়োপোযোগী পদক্ষেপ। ইতোমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেছে বিভিন্ন ফেডারেশন। বিশেষ করে আগামী বছর পাকিস্তানে অনুষ্ঠিতব্য এসএ গেমসে সামনে রেখে বিভিন্ন ফেডারেশনে তাদের জাতীয় দলকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে প্রবাসী ক্রীড়াবিদদের সন্ধানে কাজ করছে।
বাধ্যতামূলকভাবে সিএসআর ফান্ডের অংশ স্পোর্টসে ব্যয় করার পরিকল্পনা :
বাংলাদেশের ক্রীড়াক্ষেত্রে উন্নয়নে অন্যতম বড় বাঁধা আর্থিক অস্বচ্ছলতা। প্রতি বছর বাজেটে ক্রীড়াখাতে বরাদ্দের পরিমান বৃদ্ধি পেলেও আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে তা অপ্রতুলই থেকে যায়। ফলে পৃষ্ঠপোষকদের সহায়তা নিয়েই ফেডারেশনগুলোকে কার্যক্রম চালাতে হয়। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে জানা গেছে সিএসআর (কর্পোরেট সোশ্যাল) ফান্ডের অংশ ক্রীড়াঙ্গনে ব্যবহারের প্রক্রিয়া নিয়ে সরকার কাজ করছে। শুধু ব্যাংক নয় অন্যান্য কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্রীড়াকে ম্যান্ডেটরি করার বিষয়ে সরকার মনোযোগী হয়েছে। ক্রীড়াক্ষেত্রে সিএসআর একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে মন্ত্রণালয় বিশ্বাস করে।
গত এক বছরে ক্রীড়াঙ্গনে প্রকল্প সমূহের দৃশ্যমান অগ্রগতী :
দেশের ক্রীড়াকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গত এক বছরে ব্যাপক অবকাঠামোগত উন্নয়ন করেছে।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের তথ্য অনুযায়ী এ সমস্ত অবকাঠামোগত উন্নয়নের মধ্যে রয়েছে জাতীয় স্টেডিয়াম ঢাকার অধিকতর উন্নয় প্রকল্প (প্রকল্পের বাস্তব অগ্রগতি ১০০ ভাগ), বরিশালের কবি জীবনান্দ দাশ স্টেডিয়ামকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীতকরণ এবং বিদ্যমান জেলা সুইমিং পুলের উন্নয়ন প্রকল্প (কাজ চলমান), ভোলা গজনবী স্টেডিয়ামে অধিকতর উন্নয়ন, ইনডোর স্টেডিয়াম ও সুইমিংপুলের নির্মাণ-১ম সংশোধিত প্রকল্প (প্রকল্পের বাস্তব অগ্রগতি ১০০ ভাগ), উপজেলা পর্যায়ে মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ (২য় প্রকল্প), মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলা ও ভোলার চরফ্যাশন উপজেলা মিনি স্টেডিয়ামে অধিকতর উন্নয়ন ও গাজীপুর জেলার সুইমিংপুল নির্মাণ-১ম সংশোধিত প্রকল্প (চরফ্যাশন স্টেডিয়াম ৯৬ ভাগ সম্পন্ন, শিবচর উপজেলা ৯৬ ভাগ সম্পন্ন, গাজীপুর সুইমিংপুল ৮৭ ভাগ সম্পন্ন), টঙ্গী আরচ্যারী প্রশিক্ষণ একাডেমি ও পটুয়াখালী জেলা স্টেডিয়ামের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প (আরচ্যারী স্টেডিয়াম ৮৮ ভাগ সম্পন্ন, পটুয়াখালী স্টেডিয়াম ৮৫ ভাগ সম্পন্ন), চাঁদপুর জেলা স্টেডিয়াম ও সুইমিংপুলের অধিকতর উন্নয়নসহ ইনডোর স্টেডিয়াম (কাজ চলমান), শরীয়তপুর জেলা সদরে ইনডোর স্টেডিয়াম ও টেনিস কোর্ট নির্মান প্রকল্প (ভূমি অধিগ্রহণের পর প্রকল্পের অগ্রগতী ৪৯ ভাগ), নড়াইল বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ স্টেডিয়াম ও টেবিল টেনিস ভবনের অধিক উন্নয়ন এবং ইনডোর স্টেডিয়াম ও ভলিবল স্টেডিয়াম নির্মাণ প্রকল্প (কাজ চলমান)।
দেশের আট বিভাগে স্পোর্টস হাব গড়ে তোলার পরিকল্পনা :
বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া প্রায়শই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বলেছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের সহায়তায় দেশের আট বিভাগে গড়ে তোলা হবে স্পোর্টস হাব। মূলত ক্রীড়াকে বিকেন্দ্রীকরণের লক্ষ্যেই এই পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। এজন্য যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে কাজও শুরু করেছে।
সারা দেশে আটটি বিভাগে স্পোর্টস হাব স্থাপন ক্রীড়া উপদেষ্টার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। ইতোমধ্যেই এই বিষয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে সংযুক্ত আরব আমিরাত স্পোর্টস হাবের জন্য তহবিল প্রদানে তাদের সম্মতি জানিয়েছে।
ক্রীড়াঙ্গনে গত এক বছরে অগ্রগতী প্রসঙ্গে বাসসের সাথে আলাপকালে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব মো: আমিনুল ইসলাম বলেন, ৫৫টি ফেডারেশন এবং এসোসিয়েশনের মধ্যে আমরা শুধুমাত্র বাংলাদেশ মহিলা ক্রীড়া সংস্থা বাদে বাকি সব কমিটি ভেঙে দিয়ে অ্যাড-হক কমিটি গঠন করেছি। আমরা তিনটি ফেডারেশনের সাথে তিনটি ফেডারেশন একীভূত করে দিয়েছি। এছাড়াও স্থানীয় পর্যায়ে স্থানীয় ক্রীড়া সংস্থার (বিভাগীয়, জেলা, উপজেলা এবং মহিলা ক্রীড়া সংস্থা) প্রায় এক হাজার একশ কমিটি রয়েছে। আমরা সকল কমিটি ভেঙে দিয়ে ইতিমধ্যে চৌষট্টি জেলার মধ্যে ৫৭টি অ্যাড-হক কমিটি গঠন করেছি। বিভাগীয় পর্যায়ে ৬টি কমিটি হয়েছে, উপজেলা পর্যায়ে কমিটি প্রক্রিয়াধীন।
এনএসসি সচিব বলেন, এই অ্যাড-হক কমিটিগুলির নেতৃত্বে দেশের খেলাধুলা ছন্দ ফিরে পেয়েছে এবং যুবসমাজ তারুণ্যের উৎসবে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছে। নিয়মিত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় পর্যায়ে টুর্নামেন্টগুলোতে খেলোয়াড়রা অংশগ্রহণ করছে, যেখানে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদেরও সার্বিক তত্বাবধান রয়েছে। আমরা এখন দাবি করতে পারি যে গত এক বছরে আমরা খেলাধুলায় স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি যা আগে স্থবির ছিল। আমরা নিশ্চিত যে সকলের সহযোগিতায় ক্রীড়া ক্ষেত্রে গতিশীলতা আরও বৃদ্ধি পাবে।