বিদেশি রামবুটান চাষে সফল দিনাজপুরের আব্দুর রহমান 

বাসস
প্রকাশ: ০৮ আগস্ট ২০২৫, ১৭:২৩
ছবি : সংগৃহীত

রোস্তম আলী মন্ডল

দিনাজপুর, ৮ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : কৃষি জমিতে থোকায় থোকায় ঝুলছে ভিনদেশি ফল রামবুটান। দেখতে অনেকটা লিচু বা কাঠলিচুর মতো। পুষ্টিগুণে ভরপুর এ ফলের ত্বক লোমশ, আকারেও কিছুটা বড়। বিদেশি এ ফল চাষে সফল হয়েছেন দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের যুবক আব্দুর রহমান।

সম্প্রতি উপজেলার কপালদাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুর রহিমের ছেলে যুবক  আব্দুর রহমানের (৩৮) সঙ্গে কথা হয় এ বিদেশি ফল নিয়ে। রামবুটান ফল চাষের সফলতার বিষয় জানতে চাওয়া হয়। 

তিনি বলেন, ৬ বছর আগে মালয়েশিয়ায় থাকাকালীন রামবুটানের সঙ্গে পরিচয়। দেশে ফেরার সময় সঙ্গে নিয়ে এসে ছিলাম রামবুটানের বীজ। কিন্তু সেই বীজ দিয়ে চারা তৈরিতে ব্যর্থ হয়েছি। 

পরে ইউটিউব দেখে ২০২০ সালে জুলাই মাসে ফরিদপুর সদর উপজেলার একটি গ্রাম থেকে রামবুটান ফলের চারা গাছ সংগ্রহ করে আনি। বাড়ি সংলগ্ন জমিতে ১০টি চারা রোপণ করি। গত বছর একটি গাছে সীমিত আকারে কিছু ফল ধরে ছিল। তবে চলতি বছর সব কয়'টি গাছে ব্যাপক ফলন হয়েছে। প্রতিটি গাছে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ কেজি রামবুটানের ফলন হয়েছে। ফলগুলো পুরোপুরি পাকা শুরু হয়েছে। 

তিনি জানান, কয়েক দিন থেকে বাগানে বিদেশি ফল রামবুটান দেখতে এসে দর্শনার্থীরা প্রতি কেজি এক হাজার টাকা দরে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।  প্রতিদিন জেলাসহ পাশ্রে জেলা রংপুর, গাইবান্ধা, জয়পুরহাট ও বগুড়া থেকে লোকজন ফলের বাগান দেখতে আসছেন। তাদের অনেকে এই ফলের বাগান করতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন।

আব্দুর রহমান বলেন, দর্শনার্থীরা রামবুটান চাষ নিয়ে নানা প্রশ্ন করছেন। এই ফল চাষের বিষয় তাদের চারা সংগ্রহ থেকে সার্বিক বিষয়ে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করছি।

সরেজমিনে আব্দুর রহমানের বাগানে গিয়ে দেখা যায়, বিদেশি এই ফলের আকার মাঝারি ধরনের লিচুর সাদৃশ্য। লাল বর্ণের আকারে গাছে ফল থোকায় থোকায় ঝুলে রয়েছে। ফলন ভালো, পুষ্টিকর আর সুস্বাদু হওয়ায় এর চাহিদা বাড়তে শুরু করেছে। ফল ভালো দামে বিক্রি করায় অন্যরাও চাষে আগ্রহ প্রকাশ করছেন।

দিনাজপুর হর্টিকালচার বিভাগের সহকারী পরিচালক মোঃ জাহিদুর রহমান বলেন, রামবুটান ফল চীন, মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়াসহা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বেশি চাষ হয়। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এই ফলের চাষ শুরু হয়েছে। চাহিদা ও লাভজনক হওয়ায় এ ফল চাষে সফলতা পেয়েছেন যুবক আব্দুর রহমান। 

তিনি বলেন, এ অঞ্চলের মাটিতে ফলন ভালো হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে রামবুটান চাষে অপার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। হর্টিকালচার বিভাগ থেকে যুবক আব্দুর রহমানকে রামবুটান চাষে সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে আসছি।

কৃষিবিদ জাহিদুর রহমান বলেন, জৈব সার আর অল্প সেচ দিয়ে রামবুটান ফলের চাষ করা যায়। ইতোমধ্যে চাষীদের মধ্যে এ ফল ছড়িয়ে দিতে হর্টিকালচার বিভাগ কলম চারা তৈরি প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এ বছর বেশ কিছু চারা তৈরি করার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। 

কপালদাড়া গ্রামের মশফিকুর রহমান বলেন, প্রতিদিনই বিদেশি এই ফল দেখতে আব্দুর রহমানের বাগানে ভিড় করছেন নানা বয়সের মানুষ। অনেকেই এই ফল শখের বসে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। ভালো ফলন ও সুস্বাদু হওয়ায় এই ফল চাষে অনেকে আগ্রহী হচ্ছেন।

নবাবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তাপস কুমার রায় বলেন, পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এ ফলটি উপজেলায় নতুন চাষ শুরু হয়েছে। যুবক আব্দুর রহমান এ ফল চাষে সফল হয়েছেন। তার মত আরও অনেকেই এ ফলের গাছ রোপণ করেছেন। কৃষি বিভাগ থেকে চাষীদের রামবুটান ফল চাষে পরামর্শসহ সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
জনপ্রশাসন বিষয়ক কমিটি বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি
কুমিল্লায় ১৯ বাংলাদেশিকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করল বিএসএফ
গণভোট সংসদ নির্বাচনের পর হতে পারে : আহমেদ আজম খান
ইকুইটি সিকিউরিটিজ বিধি-২০২৫ খসড়া প্রকাশ: দুই সপ্তাহের মধ্যে মতামত দেয়ার আহ্বান
আগামী ১ নভেম্বর উদ্যাপিত হবে ৫৪তম জাতীয় সমবায় দিবস
যুক্তিবোধে উজ্জীবিত তরুন প্রজন্ম নেতৃত্ব দিবে আগামীর বাংলাদেশ : চসিক মেয়র
প্রশিক্ষিত আনসার সদস্যরা স্থানীয় উন্নয়ন ও সামাজিক অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখছেন: ডিজি
নীতিনির্ধারণে নমনীয়তা ও নাগরিক দায়িত্বের ওপর প্রধান উপদেষ্টার গুরুত্বারোপ
অনলাইনে রিটার্ন দাখিলে অক্ষম করদাতাদের আবেদনের সময়সীমা বাড়ালো এনবিআর
১৫ নভেম্বর থেকে মহানগর ও বিশেষায়িত পুলিশ ইউনিটে নতুন পোশাক
১০