রাজশাহী, ১৮ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস): ক্রমবর্ধমান প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে দেশীয় মাছের প্রজাতি ও মৎস্য জীববৈচিত্র্য রক্ষায় রাজশাহীতে অভয়াশ্রমের সংখ্যা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
তাদের মতে, এক সময় এ অঞ্চল নানান প্রজাতির মাছ, বিশেষ করে ছোট দেশীয় মাছে ভরপুর ছিল। কিন্তু বর্তমানে নানা কারণে বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে অনেক মাছ বিলুপ্তির মুখে।
রাজশাহী জেলা প্রশাসন ও মৎস্য অধিদপ্তরের (ডিওএফ) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৫’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তা ও মৎস্য বিশেষজ্ঞরা আজ এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কালেক্টরেট ভবনের পুকুরে মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়। পরে একটি র্যালি শেষে প্রাইমারি টিচার্স ইনস্টিটিউটের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাজশাহীর অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার হাবিবুর রহমান।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন মৎস্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক সাইফুদ্দিন ইয়াহিয়া, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরিফুল ইসলাম, মৎস্য অধিদপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক আবদুল ওয়াহেদ মণ্ডল এবং মোহাম্মদ মুনিরুজ্জামান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাবিবুর রহমান বলেন, প্রাকৃতিক সম্পদগুলো যথাযথভাবে কাজে লাগানোর মাধ্যমে মাছ উৎপাদন বহুলাংশে বৃদ্ধি করা সম্ভব।
তিনি কৃষকদের মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ করা, তাদেরকে আধুনিক বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি সরবরাহ এবং উন্নত মানের মাছের পোনা উৎপাদনে প্রশিক্ষণ প্রদানের সুপারিশ করেন।
সাইফুদ্দিন ইয়াহিয়া তার বক্তব্যে বলেন, রাজশাহী ও এর আশপাশের এলাকায় দেশীয় মাছ চাষে ইতিবাচক প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এখানে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি, প্রজাতির বৈচিত্র্য এবং অর্থনৈতিক সুযোগ ক্রমেই বাড়ছে।
সরকারি উদ্যোগ, জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং আধুনিক চাষাবাদ কৌশল গ্রহণের সমন্বয়ে এ অঞ্চলে দেশীয় মাছ চাষের বিকাশ ত্বরান্বিত হচ্ছে। এর ফলে কৃষকরা মাছের উৎপাদনে বৈচিত্র্য আনছেন এবং আরও কার্যকর ও টেকসই পদ্ধতি ব্যবহার করছেন।
আলোচনায় অংশ নেওয়া কয়েকজন জেলে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে মৎস্য চাষীদের সমস্যাগুলো সমাধানের ওপর জোর দেন।
পরে অতিথিরা মাছ চাষ ও উৎপাদনে প্রশংসনীয় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে চারজন মাছচাষি এবং তিনটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির হাতে পুরস্কার তুলে দেন।