ঢাকা, ২১ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে চীনের এক্সিম ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট ইয়াং ডংনিং এর বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল বুধবার চীনের এক্সিম ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়। সেগুলো হলো— ‘এক্সপানশন এন্ড মডার্নাইজেশন অব মোংলা পোর্ট’ এবং বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের ‘দুটি ক্রুড অয়েল ট্যাংকার ও দুটি বাল্ক ক্যারিয়ার সংগ্রহ’ শীর্ষক প্রকল্প।
বৈঠকে নৌপরিবহন উপদেষ্টা মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে ‘এক্সপানশন এন্ড মর্ডানাইজেশন অব মোংলা পোর্ট’ প্রকল্পের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, প্রকল্পটি ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুমোদিত হয়েছে। চায়না জিটুজি ও জিওবি’র অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য লোন এগ্রিমেন্ট জরুরি ভিত্তিতে হওয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে জিওবি অংশে অর্থায়ন নিশ্চিত, কিন্তু চায়না অংশে লোন এগ্রিমেন্ট না হওয়ায় প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, মোংলা বন্দর এবং বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের উভয় প্রকল্পই গুরুত্বপূর্ণ। তবে মোংলা বন্দরের ‘এক্সপানশন এন্ড মর্ডানাইজেশন অব মোংলা পোর্ট’ প্রকল্পটি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শুরু করা প্রয়োজন।
মোংলা বন্দরকে ‘রিজিওনাল ট্রান্সপোর্ট হাব’ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রকল্পটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, মোংলা বন্দরের অবস্থান কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এখানে এ অঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটও ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মোংলা বন্দরে বর্তমানে কোনো টার্মিনাল জেটি না থাকায় এ প্রকল্পের আওতায় দুটি টার্মিনাল জেটি নির্মাণ করা হবে, যা মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে।
ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে দুটি ক্রুড ওয়েল ট্যাংকার এবং দুটি বাল্ক ক্যারিয়ার সংগ্রহ প্রকল্পটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের জন্য আরও দুটি জাহাজ ক্রয়ের কার্যক্রম চলমান আছে এবং শিগগিরই আরও তিনটি জাহাজ ক্রয়ের কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।
এক্সিম ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের জাহাজ ক্রয়ের লোন এগ্রিমেন্ট এ বছরের মধ্যেই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং চলতি অর্থ বছরের প্রকিউরমেন্ট প্ল্যানে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে মোংলা বন্দরের বিষয়ে আগামী বছরের শুরুতে চুক্তি সম্পন্ন করার বিষয়টি বিবেচনায় আছে।
এছাড়া মোংলা বন্দরের প্রকল্পের লোন এগ্রিমেন্ট বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করে ব্যাংকের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়, চলতি বছরের মধ্যেই সিডকার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল মোংলা বন্দরের জন্য প্রকল্পটির অপরিহার্যতা ও প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে জানায়, ইতোমধ্যে মোংলা বন্দরের প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে কমার্শিয়াল কনট্রাক্ট স্বাক্ষরিত হয়েছে এবং লোন এপ্লিকেশন চায়না এক্সিম ব্যাংকের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে।
এক্সিম ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট ইয়াং ডংনিং বাংলাদেশে বিনিয়োগ সম্ভাবনা তুলে ধরে বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ রয়েছে। সরকার যেকোনো প্রকল্প বাস্তবায়নে দক্ষতার পরিচয় দিয়ে আসছে।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত বলেন, ভবিষ্যতে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে বন্দর অবকাঠামো ও শিপিং খাতে আরও প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।
বৈঠকে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহীন রহমানসহ উভয় দেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।