কক্সবাজার, ২৪ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস): কক্সবাজারে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করেছে মাদকবিরোধী টাস্কফোর্স। শক্তিশালী এই টাস্কফোর্সের নেতৃত্ব দেবেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশনের (রামু ক্যান্টনমেন্ট) জেনারেল কমান্ডিং অফিসার (জিওসি)।
টাস্কফোর্স ইতোমধ্যে প্রায় ২২ লাখ পিস ইয়াবা, প্রায় দেড় হাজার লিটার বাংলা মদ, ৩৮ কেজি গাঁজা, ৭৩৫ ক্যান বিয়ার ও প্রায় আড়াই কেজি ক্রিস্টাল মেথ (আইস) জব্দ করেছে। এই সময়ে ৩৪৭ জন মাদক কারবারিকে আটক করে মামলা দেওয়া হয়েছে।
আজ রোববার সকাল সাড়ে ১১টায় কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্র মিলনায়তনে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান টাস্কফোর্সের সদস্য সচিব সোমেন মণ্ডল।
তিনি জানান, কক্সবাজারে উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্য পরীক্ষার জন্য একটি পরীক্ষাগার স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে দ্রুত মাদক সংক্রান্ত মামলার তদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত ও নিষ্পত্তি সম্ভব হবে।
সোমেন মণ্ডল জানান, চলতি বছরের ১৪ জুলাই কক্সবাজার বিয়াম আঞ্চলিক কেন্দ্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফট্যানেন্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক বিশেষ সভায় এই টাস্কফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। ২০ জুলাই টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা ও স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বয়ে এই টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে।
সোমেন মন্ডল বলেন, এই টাস্কফোর্স তিনটি ধারায় কাজ করবে। টাস্কফোর্স মাদক চোরাচালান রোধে সামাজিক সচেতনতার বিশেষ গুরুত্বারোপ করে। সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা গেলে মানুষ নিজেরা মাদক গ্রহণ থেকে বিরত থাকবে। মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তা করবে।
জানা যায়, কক্সবাজার দীর্ঘদিন ইয়াবার প্রধান রুট হিসেবে পরিচিত। মাদকপ্রবণ জেলার ১৯টি সীমান্ত পয়েন্ট রয়েছে। মিয়ানমার থেকে প্রায় প্রতিদিন ইয়াবা, ক্রিস্টাল মেথসহ (আইস) নানা প্রচলিত-অপ্রচলিত মাদক ঢুকছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোও ‘মাদক হটস্পট’ হয়ে উঠছে।
কক্সবাজার ও রোহিঙ্গা ক্যাম্প মাদকমুক্ত করতে বড় ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ জন্য ১৫ সংস্থার প্রতিনিধি নিয়ে টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৫ সদস্য বিশিষ্ট এই টাস্কফোর্সের সদস্যরা হলেন, আহবায়ক সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল কমান্ডিং অফিসার (জিওসি), সদস্য সচিব কক্সবাজার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সোমেন মণ্ডল, সদস্য যথাক্রমে বিজিবির কক্সবাজার রিজিয়ন কমান্ডার, কক্সবাজার এফডিএমএনের ডিআইজি, কক্সবাজার এপিবিএনের ডিআইজি, কক্সবাজার ডিজিএফআইয়ের কর্নেল জিএস, অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার, কক্সবাজার নেভি ফরওয়ার্ড বেইজের কমান্ডার, কক্সবাজার এনএসআইয়ের অতিরিক্ত পরিচালক, কক্সবাজারস্থ র্যাব-১৫ অধিনায়ক, কক্সবাজার আনসার ব্যাটালিয়নের (১ বিএন) অধিনায়ক, বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের চট্টগ্রাম বিসিজি বেইসের অধিনায়ক, কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) ও কক্সবাজারের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি)।