চট্টগ্রাম, ২৫ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা একটি মামলায় কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান জাফর আহমদের স্ত্রী আমিনা খাতুনকে তিন বছর ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
সোমবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ মিজানুর রহমানের আদালত এ রায় দেন। এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন আসামি আমিনা খাতুন (৫৫)। তিনি টেকনাফ উপজেলার উত্তর লেংগুর বিল এলাকার জাফর আহমদের স্ত্রী।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, আমিনা খাতুন দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ২৬ লাখ ৫৭ হাজার ৭৩৪ টাকার সম্পদের তথ্য অসৎ উদ্দেশ্যে গোপন করে মিথ্যা তথ্য প্রদান করেছেন। এ ছাড়া ৩১ লাখ ৪৬ হাজার টাকার সম্পদ তার জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণভাবে অর্জন ও ভোগ দখলে রাখার অভিযোগে মামলাটি করে দুদক।
২০১৯ সালের ১ এপ্রিল তৎকালীন দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দীন নগরের ডবলমুরিং থানায় মামলাটি করেন। তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ১ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
দুদক জানায়, টেকনাফের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমদ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের খোঁজ পায় দুদক। পরে কমিশনের অনুমোদন নিয়ে ২০১৭ সালের ৯ জুলাই আমেনা খাতুনের বিরুদ্ধে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ দেওয়া হয়। এক দফা সময় বাড়িয়ে ওই বছরের ৩০ জুলাই তিনি দুদকে সম্পদ বিবরণী জমা দেন। সম্পদ বিবরণীতে তিনি কোনো স্থাবর সম্পদ প্রদর্শন করেননি। দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে তার নিজ নামে ৩ লাখ ৪৫ হাজার ২৯৮ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে ৩০ লাখ ৩ হাজার ৩২ টাকার অস্থাবর সম্পদের তথ্য-প্রমাণ পান দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা। ২৬ লাখ ৫৭ হাজার ৭৩৪ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জনে উৎসের সঙ্গে অসংগতি থাকায় ২০১৯ সালের ১ এপ্রিল নগরের ডবলমুরিং থানায় মামলা করে দুদক। তদন্ত শেষে দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক রিয়াজউদ্দিন ২০১২ সালের ১২ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। এতে বলা হয়, আমেনা খাতুন একজন গৃহিণী। তবে মোট সম্পদ ও খরচ মিলে তার ৪৬ লাখ ৯৩ হাজার ৩২ টাকার তথ্য পাওয়া গেছে। এতে গ্রহণযোগ্য আয় রয়েছে ১৫ লাখ ৪৭ হাজার ৩২ টাকা। ৩১ লাখ ৪৬ হাজার টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ।
দুদক চট্টগ্রামের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোকাররম হোসাইন বলেন, অবৈধ সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের অভিযোগে দায়ের করা দুদকের মামলায় টেকনাফ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান জাফর আহমদের স্ত্রী আমিনা খাতুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত কারাদণ্ড দিয়েছেন।
টেকনাফের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা কারবারি। তালিকায় তার তিন ছেলে শাহজাহান মিয়া, দিদার মিয়া ও ইলিয়াছের নামও রয়েছে। ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি টেকনাফের ১০২ জন ইয়াবা কারবারির মধ্যে জাফর আহমদের ছেলে দিদার মিয়াও আত্মসমর্পণ করেন।