ঢাকা, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র আগামী ডিসেম্বরে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হবে। এ জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানি ইতোমধ্যে দেশে পৌঁছে গেছে।
আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে নিজের দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান। উপদেষ্টা বলেন, আমরা নভেম্বরে চালু করার জন্য রাশিয়াকে চিঠি দিয়েছিলাম। তারা জানিয়েছে, ডিসেম্বরে (পরীক্ষামূলকভাবে) চালু করবে।
ড. সালেহউদ্দিন বলেন, আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) একটি টিম পর্যবেক্ষণ করে কিছু সুপারিশ করেছে। আমরা সেগুলো বাস্তবায়ন করছি। তারা আবার এসে চূড়ান্ত সম্মতি দেবে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম এখনো নির্ধারণ করা হয়নি বলেও জানান তিনি।
আইএইএ টিম গত ২৭ আগস্ট পর্যবেক্ষণ শেষে পর্যালোচনায় বলেছে, রূপপুরে বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পরীক্ষামূলক চালু সংক্রান্ত নিরাপত্তার ক্ষেত্রে দৃঢ় অঙ্গীকার দেখিয়েছে।
আইএইএ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ঢাকার অনুরোধে পরিচালিত প্রি-অপারেশনাল সেফটি রিভিউ টিম পরিদর্শনে গিয়ে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বাণিজ্যিক উদ্বোধনের আগে ইউনিট ১ মূল্যায়ন করেছে। জ্বালানি লোড শুরু করার আগে এ ধরনের মিশন বৈশ্বিক নিরাপত্তা মানদণ্ডের সঙ্গে পারমাণবিক স্থাপনার মানদণ্ড তুলনামূলক বিচার করে থাকে।
পদ্মা নদীর তীরে পাবনায় এ দুই-ইউনিটের প্ল্যান্টটি রাশিয়ার নির্মিত ভিভিইআর-১২০০ রিঅ্যাক্টর দুটি চালু হলে বাংলাদেশের গ্রিডে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ যোগ হবে। এর মধ্যে ইউনিট ১-এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৭ সালে এবং ২০১৮ সালে ইউনিট ২ এর কাজ শুরু হয়।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য রাশিয়ার ঋণের অর্থ ছাড়ের মেয়াদ ২০২৭ সাল পর্যন্ত বাড়াতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে মূল আন্তঃসরকারি চুক্তিতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের জন্য ঋণ বিতরণের সময়কাল ২০১৭ থেকে ২০২৪ (ডিসেম্বর) পর্যন্ত ছিল।
১০ বছরের গ্রেস পিরিয়ড শেষে, ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে ঋণের মূল পরিশোধ শুরু হওয়ার কথা ছিল, যা পরবর্তীতে ২০২৭ সালের মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। নতুনভাবে সিদ্ধান্তের ফলে ২০২৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ঋণ পরিশোধ শুরু হবে।
রূপপুর প্রকল্পের আনুমানিক ব্যয় ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যার মধ্যে রাশিয়া ৯০ শতাংশ বা ১১ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দেবে এবং বাকি ১০ শতাংশ বহন করবে বাংলাদেশ সরকার।