ময়মনসিংহ, ৬ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : ময়মনসিংহ জেলা ও সিটি কর্পোরেশন এলাকায় মোট ১৫ লাখ ৪ হাজার ৮৯৩ জন শিশুকে টাইফয়েড টিকাদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর মধ্যে ময়মনসিংহ জেলায় ১৩ লাখ ৪৫ হাজার ৯৩৯ জন শিশুকে টাইফয়েড টিকা দেওয়া হবে, যার মধ্যে বিদ্যালয় পর্যায়ে ৮ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ জন এবং কমিউনিটি পর্যায়ে ৪ লাখ ৮৪ হাজার ১৫৪ জন শিশু অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় মোট ১ লাখ ৫৮ হাজার ৯৫৪ জন শিশুকে টিকা দেওয়া হবে, যার মধ্যে বিদ্যালয় পর্যায়ের ১ লাখ ৩ হাজার ৭৭৬ জন এবং কমিউনিটি পর্যায়ের ৫৫ হাজার ১৭৮ জন শিশু অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
আজ সোমবার জেলা পরিষদের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন ভিআইপি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক কর্মশালায় সাংবাদিকদের এ তথ্য জানানো হয়। দেশব্যাপী টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ময়মনসিংহ জেলা তথ্য অফিসের উদ্যোগে এবং ইউনিসেফের সহযোগিতায় জেলার প্রায় ৪০ জন সংবাদকর্মী এই বিশেষ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) লুৎফুন নাহারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফায়জুল হক। জেলা তথ্য অফিসের পরিচালক মীর আকরাম উদ্দীন আহমেদের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহের সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ছাইফুল ইসলাম খান।
প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, টাইফয়েড মূলত অনিরাপদ খাবার ও পানীয় গ্রহণের ফলে হয়ে থাকে। ঢাকার আশপাশের এলাকায় পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, রাস্তার পাশের প্রায় ৯০ শতাংশ দোকানের খাবারই অনিরাপদ। এই বাস্তবতা বিবেচনায় গুজব প্রতিরোধ করে সাংবাদিকদের সহযোগিতায় শতভাগ টাইফয়েড টিকা প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, যেভাবে গুটিবসন্ত, হাম, হেপাটাইটিস-বি ও ধনুষ্টংকার বাংলাদেশ থেকে নির্মূল করা গেছে, ঠিক সেভাবেই টাইফয়েডকেও নির্মূল করা সম্ভব।
তিনি আরও জানান, এবার যে টাইফয়েড টিকা দেওয়া হবে তা সম্পূর্ণ হালাল ও নিরাপদ। একবার টিকা গ্রহণ করলে শিশু পাঁচ বছর পর্যন্ত টাইফয়েড থেকে সুরক্ষিত থাকবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্য বক্তারা বলেন, ২০২১ সালে বিশ্বজুড়ে সাত লাখেরও বেশি মানুষ টাইফয়েডে আক্রান্ত হন এবং ৯৩ হাজারের বেশি মানুষ মারা যান, যার মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর অংশ সবচেয়ে বড়। বাংলাদেশে সে বছর প্রায় ৮ হাজার মানুষ টাইফয়েড জ্বরে মারা যান, যার মধ্যে প্রায় ৬ হাজার ছিল ১৫ বছরের নিচের শিশু।
প্রতিবছর দেশে গড়ে তিন লাখ শিশু টাইফয়েডে আক্রান্ত হয় এবং প্রায় ৬ হাজার শিশুর মৃত্যু ঘটে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে টাইফয়েড আক্রান্তের হার সবচেয়ে বেশি বলে তাঁরা উল্লেখ করেন।