কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের প্রতি সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদন

বাসস
প্রকাশ: ১১ অক্টোবর ২০২৫, ১৬:৫৫
শনিবার রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এমেরিটাস অধ্যাপক, বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বাসস এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ। ছবি: বাসস

ঢাকা, ১১ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস): এমেরিটাস অধ্যাপক, বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে আজ রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জনসাধারণের ঢল নামে।

তিনি গতকাল বিকেল ৫টায় রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

মুষল বৃষ্টির মধ্যেও সরকারি কর্মকর্তা, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা অনুরাগীরা তাঁর প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের পক্ষ থেকেও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এর মধ্যে ছিল— প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, কপিরাইট অফিস, আর্কাইভস ও গ্রন্থাগার অধিদপ্তর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্যকলা বিভাগ, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, কালি ও কলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ, লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন, ব্র্যাক পরিবার, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব), শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি, এশিয়াটিক সোসাইটি অব বাংলাদেশ, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র, জাতীয় জাদুঘর, বাংলাদেশের জাসদ, বাসদ, ছায়ানট, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এবং বাংলা একাডেমি।

প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ প্রফেসর সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী তাঁর প্রাক্তন ছাত্র ও পরবর্তী সময়ের সহকর্মী সৈয়দ মনজুরুল ইসলামকে স্মরণ করে বলেন, 'মনজুর শুধু মেধাবী ছাত্রই ছিলেন না, তিনি ছিলেন অসাধারণ শিক্ষকও। তাঁর পিতা ছিলেন শিক্ষক, আর সেই উত্তরাধিকার তিনি গৌরবের সঙ্গে বহন করেছেন। তাঁর সব ছাত্র-ছাত্রী তাঁকে গভীরভাবে ভালোবাসতেন।'

তিনি আরও বলেন, সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম সাহিত্যিক হিসেবেও উজ্জ্বল ছিলেন, বিশেষত কথাসাহিত্যে। এজন্য তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ও একুশে পদক লাভ করেন।

কথাসাহিত্যের পাশাপাশি তিনি শিল্পসমালোচক হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। চারু ও নন্দনকলার গভীর জ্ঞান ছিল তাঁর। তিনি শেক্সপিয়ারের নাটক অনুবাদ এবং ইংরেজিতেও মৌলিক সাহিত্য রচনা করেছেন।

প্রফেসর চৌধুরী বলেন, 'তিনি ছিলেন বিনয়ী, প্রাণবন্ত ও ইতিবাচক মনোভাবের মানুষ। আমি কখনো তাঁকে দুঃখিত, হতাশ বা অসুস্থ দেখিনি। তাঁর মৃত্যু এক অপূরণীয় ক্ষতি। তবে শিক্ষক, লেখক, সমালোচক এবং সর্বোপরি একজন অসাধারণ মানুষ হিসেবে তাঁর কাজ আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।'

বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বলেন, 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক শিক্ষক আছেন, কিন্তু অল্প কয়েকজনই পুরো জাতির কাছে বুদ্ধিজীবী হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন। প্রফেসর মনজুরুল ইসলাম তাঁদের একজন।'

তিনি বলেন, প্রফেসর ইসলাম শুধু প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ছাত্রদেরই গড়ে তোলেননি, তাঁর সাহিত্যকর্মের মাধ্যমে অসংখ্য তরুণ মনকেও অনুপ্রাণিত করেছেন। তাঁর কথাসাহিত্য নাগরিক জীবনের সংকটকে এমনভাবে ধারণ করেছে, যা খুব কম লেখকই করতে পেরেছেন।

'তাঁর প্রয়াণে আমরা জাতি হিসেবে এক অমূল্য সম্পদ হারালাম। তবে আমি বিশ্বাস করি, তিনি আজীবন আমাদের মাঝে অমর হয়ে থাকবেন,’ বলেন বাসস-এর প্রধান সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ।

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
ইসরাইলি বাহিনী আমাকে মানসিক নির্যাতন করেছে : শহিদুল আলম
মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা বিষয়ে জাকসু’র সেমিনার অনুষ্ঠিত
বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নে কুমিল্লায় কর্মীসভা ও গণসংযোগ
মাদারীপুরে ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানকালে ২৪ জনের কারাদণ্ড 
চাকসু নির্বাচন : ৫টি ভোটকেন্দ্রে থাকবে ৬০টি গোপন ভোটকক্ষ
জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান ১৭ অক্টোবর
আইসল্যান্ডের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ছিটকে গেলেন এমবাপ্পে
বিমানের নিয়োগ পরীক্ষায় অসদাচরণের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি প্রয়োগ
জুলাই সনদ সইয়ের মাধ্যমে সবাই এক জায়গায় ঐক্যবদ্ধ হবে : শামসুজ্জামান দুদু
জমকালো আয়োজনে ঢাকায় শুরু হলো ৩৫তম বাংলাদেশ ওয়ার্ল্ড টেনিস ট্যুর জুনিয়র
১০