
ঢাকা, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস): রাজধানী ঢাকায় প্রথমবারের মতো দেশের বিভিন্ন মসজিদের ইমাম-খতিবদের নিয়ে বৃহৎ পরিসরে অনুষ্ঠিত হয়েছে সম্মিলিত ইমাম-খতিব জাতীয় সম্মেলন-২০২৫।
ইমাম-খতিবের দ্বিনি দায়িত্ব স্বাধীনভাবে পালন, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে তাঁদের মর্যাদা সমুন্নত রাখা এবং সামগ্রিকভাবে খতিব সমাজের ৭ দফা দাবি তুলে ধরার লক্ষ্যে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওস্থ বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে এ সম্মেলন শুরু হয়। সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ বাকী। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মুফতি আজহারুল ইসলাম ও মুফতি শরিফুল্লাহ।
সম্মেলনের ৭ দফা দাবি উপস্থাপন করেন সম্মেলন বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব মুফতি আজহারুল ইসলাম। দাবিগুলো হলো-
১. রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে সব ধর্মের অধিকার সংরক্ষণ করে ইসলামি শরিয়াহকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া।
২. রাষ্ট্রের জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডে ইমাম-খতিবদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য প্রতিটি জেলা, উপজেলা ও থানা পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটি, গ্রাম আদালত, দুর্যোগ প্রতিরোধ কমিটি এবং ইউনিয়নভিত্তিক সেবা কার্যক্রমে ইমাম-খতিবদের সম্পৃক্ত করতে হবে।
৩. সব মাদরাসার বিদ্যুৎ বিল মসজিদের ন্যায় ডি-ট্যারিফের আওতায় আনা এবং সব মসজিদ ও মাদরাসার পানি বিল ৫০ শতাংশ মওকুফ করা।
৪. দেশের সব মসজিদের ইমাম-খতিব, মুয়াজ্জিন ও খাদেমদের জন্য পৃথক চাকরি বিধি প্রণয়ন করা এবং প্রতিটি মসজিদ কমিটিতে ইমাম-খতিবকে পদাধিকারবলে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালনের বিধান করতে হবে।
৫. উপর্যুক্ত প্রমাণ ও সুষ্ঠু তদন্ত ছাড়া কোনো ইমাম-খতিব বা আলেমকে গ্রেফতার বা হয়রানি করা যাবে না।
৬. দাওরায়ে হাদিসসহ সরকার স্বীকৃত সনদপ্রাপ্ত আলেমদের সরকারি মসজিদের ইমাম-খতিব, স্কুল-কলেজের ধর্মীয় শিক্ষক এবং কাজি হিসেবে নিয়োগে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
৭. ওয়াক্ফ সম্পত্তির আয়ের অপচয় রোধে প্রচলিত ওয়াক্ফ প্রশাসন আইনকে বিশেষজ্ঞ মুফতি ও ইমাম-খতিবদের সম্পৃক্ত করে শরিয়াহর আলোকে যুগোপযোগী করতে হবে। একই সঙ্গে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন কমিটি এবং শিক্ষা কমিশনে বিশেষজ্ঞ ওলামায়ে কেরাম ও ইমাম-খতিবদের সম্পৃক্তকরণ নিশ্চিত করতে হবে।
উক্ত সম্মেলনে (ভার্চুয়ালি) বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ভিপি নুরুল হক নূর, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি রেজাউল করিম পীর সাহেব চরমোনাই, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমির মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী এবং হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমিরের প্রতিনিধি মুফতি হাবিবুর রহমান কাসেমী।