
ঢাকা, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস): ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্র ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে নবীনবরণ ও কৃতী শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে ৪টি সেশনের শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ এবং গ্র্যাজুয়েট সম্পন্ন করা মেধাবী শিক্ষার্থীদেরকে কৃতী সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আকরাম হোসেন (রাজ)-এর সভাপতিত্বে এবং আবু রায়হান ও শ্রাবণী আক্তারের যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জজ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক মহাসচিব ও ঢাকা বিভাগের সাবেক স্পেশাল জজ রেজাউল করিম খান চুন্নু। এ সময় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান।
এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. হেলাল উদ্দিন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শাহজাহান, ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক থট (যুক্তরাষ্ট্র)-এর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ প্রফেসর ড. এম. আবদুল আজিজ, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের অতিরিক্ত আইজিপি মো. আকরাম হোসেন, দৃষ্টি উন্নয়ন সংস্থা (ডাস) এর প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. শাহীন রেজা চৌধুরী, লার্নিং এক্সিলারেশন ইন সেকেন্ডারি এডুকেশন (লেইস) প্রজেক্টের উপ-প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সাইদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
আয়োজনের শুরুতে টিএসসি মাঠে শান্তির প্রতীক খ্যাত সাদা পায়রা অবমুক্ত করার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন নবীনবরণ ও কৃতী শিক্ষার্থী সংবর্ধনা-২০২৫ আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান আসাদ। পরে অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের ফুল ও উত্তরীয় দিয়ে বরণ করে নেন কমিটির দায়িত্বে থাকা সদস্যরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রেজাউল করিম খান চুন্নু বলেন, ‘মানুষ চেষ্টা করলে পারে না এমন কোনো কাজ পৃথিবীতে নেই। কেউ যদি মনোযোগ দিয়ে প্রতিদিন মাত্র দুই ঘণ্টা লেখাপড়া করে, তবে সেই দুই ঘণ্টা লেখাপড়াই তাদেরকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ শিখরে নিয়ে যাবে। তবে লেখাপড়ার সময় হাতে মোবাইল, খাবার, গান কিংবা টেলিভিশন থাকা চলবে না। কেননা শিক্ষিত হয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত প্রত্যেক মানুষেরই দেশের প্রতি দায়িত্ব ও অবদান রাখা জরুরি।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে একসময় প্রাচ্যের অক্সফোর্ড বলা হলেও এখন আর তা সেই অবস্থানে নেই। তাই শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিজেদেরকে এমন অবস্থানে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে, যেন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আবারও গর্বের সঙ্গে বলতে পারে তারা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।’
প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্যকালে কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, ‘আমি কিশোরগঞ্জকে ধারণ করি। আজকে এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমি আমার পরিবারের কাছে ফিরে এসেছি। গত তিন দশক ধরে আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু অন্তত দেড় দশক পরে আমি জেলাভিত্তিক এমন কোনো অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেলাম। আমি ধন্যবাদ জানাই আমাদের এই বর্তমান নেতৃত্বকে, যারা আজকে এতগুলো কৃতী মানুষকে এই মঞ্চে উপস্থিত করতে পেরেছেন এবং সেই মঞ্চের একজন হিসেবে আমাকেও বেছে নিয়েছেন।’
এ সময় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঐক্য এবং পারস্পরিক সহায়তার উপর জোর দেন তিনি। একইসঙ্গে, তাদের প্রতিভা এবং কঠোর পরিশ্রম নিজের ও পরিবারের পাশাপাশি দেশ ও জাতির কল্যাণে ব্যবহার করার জন্য উৎসাহ প্রদান করেন।
আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, গত ১০০ বছরে কিশোরগঞ্জ যে পর্যায়ে এগিয়ে যাওয়ার কথা ছিল, আমরা সেই পর্যায়ে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেনি। কিশোরগঞ্জকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব এখন আমাদের এই নবীন শিক্ষার্থীদের উপর। যদি তোমরা সঠিক দায়িত্ব নাও, তাহলে কিশোরগঞ্জ আরো আলোকিত হবে, থাকবে না কোনো সংকট।
অনুষ্ঠান শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনার আয়োজন করা হয়।