ঢাকা, ১২ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সরকার পুলিশ, বিজিবি এবং আনসারসহ প্রায় ৭ লাখ ৬৮ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।
আজ রোববার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত কোর কমিটির সভা শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, “গত ৫ অক্টোবর থেকে প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে এবং আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে তা সম্পন্ন হবে।”
তিনি বলেন, “নির্বাচনে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রায় দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। ২৮টি ব্যাচে তিনদিন মেয়াদি এ প্রশিক্ষণ সারাদেশে জেলা, মহানগর ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে ১৩০টি ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে। পুলিশের চূড়ান্ত (চতুর্থ পর্যায়ের) প্রশিক্ষণ ৫ অক্টোবর শুরু হয়েছে এবং ১৫ জানুয়ারি ২০২৬-এর মধ্যে সকল ব্যাচের প্রশিক্ষণ শেষ হবে।”
আনসার ভিডিপি সদস্যদের জন্য ‘প্রাক-নির্বাচনী প্রশিক্ষণ’ শিরোনামে প্রতি কেন্দ্রে ১৩ জন হারে আনুমানিক ৪৫ হাজার ভোটকেন্দ্রের জন্য মোট ৫ লাখ ৮৫ হাজার সদস্যকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এর মধ্যে ১ লাখ ৩৫ হাজার জনকে অস্ত্রসহ এবং ৪ লাখ ৫০ হাজার জনকে নিরস্ত্র প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে এ প্রশিক্ষণ শেষ হবে।
উপদেষ্টা আরও জানান, এবারের নির্বাচনে বিজিবির ১১০০ প্লাটুনে ৩৩ হাজার সদস্য নিয়োজিত থাকবে। ইতোমধ্যে ৬০ শতাংশ নির্বাচনী প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে এবং ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বিজিবির প্রশিক্ষণ শেষ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
তিনি বলেন, “নির্বাচনের সময় প্রায় ৮০ হাজার সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থার সমন্বয়ে একটি সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে।”
যেকোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান উপদেষ্টা। মাঠ পর্যায়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ওসিদের নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যেন কোনো আইনবহির্ভূত কাজ না করেন, সে বিষয়েও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঝুঁকিপূর্ণ সকল ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন এবং কার্যকর মনিটরিং ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক বডি ওর্ন ক্যামেরার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি রোধে টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।