ঢাকা, ১৩ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস): পড়ালেখার পাশাপাশি অটোরিকশা চালানো একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী হৃদয়কে গুলি করে হত্যার হৃদয়বিদারক দৃশ্য ফুটে উঠলো আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।
হৃদয়কে গুলি করার ভিডিওটি আজ বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ চলা প্রসিকিউসন পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সময় প্রদর্শন করা হয়।
হৃদয়কে গুলি করার হৃদয়বিদারক ভিডিওটিতে দেখা যায়, গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনার পতনের পর গাজীপুরের কোনাবাড়ী থানা এলাকায় বিজয় মিছিল বের করে ছাত্র-জনতা। আর এ মিছিলে অংশ নেন হৃদয়। মুহূর্তেই ছাত্র-জনতার ওপর গুলি ছুড়তে থাকে পুলিশ। জীবন বাঁচাতে সবাই আশ্রয় নেয় নিরাপদ স্থানে। কিন্তু হৃদয়কে ধরে আনেন কয়েকজন পুলিশ সদস্য। ঘিরে রাখা হয় তাকে। এক পর্যায়ে বড় লাঠি নিয়ে একজন আঘাত করতে এগিয়ে আসতেই আরেকজন এই কলেজ ছাত্রকে চড় মারেন।
হঠাৎ কিছু বুঝে না উঠতেই হৃদয়কে পেছন থেকে গুলি করেন কনস্টেবল আকরাম। আর এতেই প্রাণ হারান তিনি।
হৃদয়ের বিষয়ে ট্রাইব্যুনালকে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, কলেজছাত্র হৃদয়ের লাশটি রাতের আঁধারে গাজীপুরের কড্ডা নদীতে ফেলে দেয় পুলিশ। শহীদ হৃদয়কে কাছ থেকে গুলি করেন কোনাবাড়ী থানার কনস্টেবল আকরাম। এ ব্যপারে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন ওই কনস্টেবল।
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল বলেন, পরবর্তীতে তদন্ত সংস্থা শহীদ হৃদয়ের লাশের সন্ধানে কড্ডা নদীতে ডুবুরি নামিয়ে খোঁজ করে। কিন্তু নদীটি প্রচণ্ড খরস্রোতা হওয়ায় লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তবে লাশ না পেলেও হৃদয়কে গুলি করা পুলিশ কনস্টেবল আকরাম স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ২০ বছর বয়সী হৃদয় পড়ালেখার পাশাপাশি কোনাবাড়ীতে অটোরিকশা চালাতেন। তার বাড়ি টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার আলমনগর গ্রামে।