জহুরুল ইসলাম
পাবনা, ১৬ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : ইতিহাস ঐতিহ্যে ঘেরা প্রাচীন জেলা পাবনা। এ জেলায় জন্ম নিয়েছেন বহু গণীজন। ব্রিটিশ শাসিত থেকেই এ জেলায় রয়েছে শিক্ষা ব্যবস্থার পাশাপাশি নামকরা সব প্রতিষ্ঠান। প্রায় দুই শতাব্দীর ইতিহাস বয়ে চলা পাবনা জেলার ১৯৭তম জন্মদিন উদযাপন করা হয়েছে।
এ উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার পাবনা প্রেসক্লাবের পক্ষে এর মিলনায়তনের অডিটরিয়ামে প্রীতি সম্মিলনসহ নানা আয়োজন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলার বিশিষ্টজন, সাংবাদিক, সুধী সমাজ ও জনপ্রতিনিধিরা।
সম্মিলনে সভাপতিত্ব করেন পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি আখতারুজ্জামান আখতার। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এবি ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট শ্রমিক নেতা এ্যাড. শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস।
এ ছাড়া অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মো. মফিজুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মো. গোলাম মর্তুজা, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি প্রফেসর শিবজিৎ নাগ, এবিএম ফজলুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতীন খান, আখিনুর ইসলাম রেমনসহ প্রেসক্লাবের সদস্য, স্থানীয় রাজনীতিবিদ, স্বেচ্ছাসেবী ও সুধিজনরা যোগ দেন।
এ সময় বক্তারা তাদের আলোচনায় তুলে ধরেন পাবনা শহরের অবকাঠামোগত ঘাটতি ও নাগরিক সমস্যার নানা চিত্র। কিভাবে এই ঐতিহ্যবাহী শহরকে আধুনিকতার ছোঁয়ায় গড়ে তোলা যায়— সেই বিষয়ে করণীয় নিয়ে প্রাণবন্ত আলোচনা হয়। তারা আশা প্রকাশ করেন, জেলার ২০০তম জন্মদিনে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ পাবনা উপহার দিতে পারলে সেটি হবে ইতিহাসের মাইলফলক।
অনুষ্ঠানে কেক কেটে ও মিষ্টি বিতরণের মাধ্যমে এক আনন্দঘন পরিবেশে জেলার প্রতিষ্ঠা দিবসের বিশেষ আয়োজন সম্পন্ন হয়।
উল্লেখ্য, ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে ১৬ অক্টোবর সরকারের ৩১২৪ স্মারকে জেলা হিসেবে পাবনা গঠিত হয়। ২ হাজার ৩৭১.৫০ বর্গকিমি আয়তন বিশিষ্ট পাবনা জেলা ৯টি উপজেলা ও ৭৩টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। আদমশুমারি অনুযায়ী পাবনায় মোট জনসংখ্যা ২৯ লাখ ৯ হাজার ৬২৪ জন।
ইতিহাস ঐতিহ্য সংস্কৃতিতে পাবনা জেলার রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান। বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন, ভাষাসংগ্রাম আর স্বাধীনতা সংগ্রামে এই জেলার মানুষদের বীরত্বপূর্ণ অবদান ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা আছে।
বিশ্ব বরেণ্য কবি-সাহিত্যিক, রাজনীতিক, সাংবাদিক, শিল্প উদ্যোক্তা, বরেণ্য ব্যক্তিত্ব, বিজ্ঞানী, অভিনেতা-অভিনেত্রী পাবনা তথা গোটা দেশকে বিশ্ব দরবারে স্বগৌরবে তুলে ধরেছে। বৃটিশ স্থাপত্যের টেকসই নিদর্শন দেশের একমাত্র বৃহত্তর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ রেল সেতু, লালন শাহ সেতু ও দেশের একমাত্র পারমাণবিক প্লান্ট পাবনায় অবস্থিত।
পাবনায় রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ সব দর্শনীয় স্থান। পাবনার হেমায়েতপুরে রয়েছে বাংলাদেশের একমাত্র মানসিক হাসপাতাল, সনাতন ধর্মালম্বীদের তীর্থস্থান শ্রী শ্রী অনুক’ল ঠাকুরের জন্মস্থান।