কক্সবাজার, ২১ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস): কক্সবাজারের রামুতে সহোদর দুই শিশুকে অপহরণের পর হত্যার দায়ে পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এছাড়া তিন নারীসহ চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে কক্সবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-০২ এর বিচারক মো. ওসমান গণি রায় প্রদান করেন। তথ্য নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মীর মোশারফ হোসেন টিটু।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের বড়বিল এলাকার জাহাঙ্গীর আলম, আব্দুল শুক্কুর, আলমগীর হোসেন প্রকাশ বুলু, মিজানুর রহমান ও মো. শহীদুল্লাহ। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- একই এলাকার আবদুল মজিদ বদাইয়া, ফাতেমা খাতুন, রাশেদা বেগম ও লায়লা বেগম।
হত্যার শিকার মো. হাসান ওরফে শাকিল (১১) ও মো. হোসেন ওরফে কাজল (৮) এলাকার দোকান কর্মচারী মো. ফোরকান ওরফে মিন্টুর ছেলে। হাসান বাইশাঁরী শাহনূর উদ্দিন দাখিল মাদ্রাসায় এবং হোসেন বড়বিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল।
মামলার নথির বরাতে আইনজীবী মীর মোশারফ হোসেন টিটু বলেন, ২০১৬ সালের ১৭ জানুয়ারি বিকেলে বড়বিল এলাকায় হাসান শাকিল ও তার ছোট ভাই হোসেন কাজল বাড়ির পাশে খেলাছিল। এ সময় পাখির ছানা দেয়ার লোভ দেখিয়ে এলাকার জাহাঙ্গীর আলমসহ একটি চক্র তাদের অপহরণ করে।
অপহরণের পর ওই দিন রাতে মুঠোফোনের মাধ্যমে পরিবারের কাছ থেকে চার লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারী চক্রটি। পরে শিশুদের বাবা বাদী হয়ে গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়িতে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একই বছরের ১৯ জানুয়ারী মামলা করেন। মামলাটি নথিভুক্ত হওয়ার পরপরই দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পরে গ্রেপ্তারদের স্বীকারোক্তি মতে স্থানীয় একটি পাহাড়ের জঙ্গল থেকে ওই দুই শিশুর মৃতদেহ পুলিশ উদ্ধার করে। একই বছরের ৭ এপ্রিল মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। আদালত ২০ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের এই আইনজীবী জানান, সাক্ষী-প্রমাণসহ পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আসামিদের বিরুদ্ধে সন্দেহাতীতভাবে অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। আদালত আইনের বিধি মোতাবেক সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে পাঁচ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং চার আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। এছাড়া তাদের বিভিন্ন অঙ্কের অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রায় ঘোষণাকালে প্রধান আসামি জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন। অন্য আসামিরা পলাতক। নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় মোকারমা সুলতানা পুতুল নামের এক তরুণীকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
এদিকে রায়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করে বাদী পক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, এ রায়ের ফলে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।