
ঢাকা, ২ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : ভূমিসেবা নিশ্চিতের মূল ভিত্তি হলো সঠিক সার্ভে ও সেটেলমেন্ট উল্লেখ করে ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, পৃথিবীর প্রতিটি জীব ভূমির সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে যুক্ত।
তিনি বলেন, গৃহপালিত প্রাণীরা মাঠে চরে, বন্য প্রাণীরা জঙ্গলে থাকে, পাখিরা বনাঞ্চলে আশ্রয় নেয়। ভূমি কেবল মানুষের সম্পত্তি নয়, এটি পৃথিবীর সমস্ত জীবের যৌথ সম্পদ।
আজ রোববার রাজধানীর ডেমরায় করিম জুট মিলস্ লিমিটেড এর সভাকক্ষে বিসিএস ক্যাডারভুক্ত (প্রশাসন, পুলিশ, বন ও রেলওয়ের) এবং জুডিসিয়াল সার্ভিস এর কর্মকর্তাগণের ‘১৪১তম সার্ভে ও সেটেলম্যান্ট প্রশিক্ষণ কোর্সে’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
এবারে প্রশিক্ষণ কোর্সের আয়োজন করে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর। ৫২ দিনের এই প্রশিক্ষণে মোট ৬০ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশগ্রহণ করেন।
উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেন, মানুষকে উচিত হবে দায়িত্বশীলভাবে ভূমির ব্যবহার করা, পশু-পাখির আবাসস্থল সংরক্ষণ করা ও প্রকৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া। তবেই পৃথিবী সুন্দর, ভারসাম্যপূর্ণ ও প্রাণবন্ত এক আবাসভূমি হিসেবে টিকে থাকবে।
তিনি আরো বলেন, ভূমি ব্যবহারের ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে হলে, আমাদের ভাবতে হবে এই ভূমি সবার। মানুষ যেমন জীবনের জন্য ভূমির প্রয়োজন অনুভব করে, পশুরাও তেমনভাবে ভূমির ওপর নির্ভর করে বেঁচে থাকে।
উপদেষ্টা বলেন, ভূমি শুধু উৎপাদনের মাধ্যম নয়, এটি জীববৈচিত্র্যেরও আশ্রয়স্থল। তাই পশুদের বেঁচে থাকার জন্য তাদের প্রাকৃতিক বাসস্থান রক্ষা করা মানবিক ও নৈতিক দায়িত্ব।
তিনি আরও বলেন, সার্ভে ও সেটেলমেন্টের কাজগুলো যথাযথভাবে সম্পাদনের জন্য কর্মকর্তাদের পেশাগত দক্ষতা, কারিগরি জ্ঞান ও বাস্তব অভিজ্ঞতা থাকা অপরিহার্য। তাই সার্ভে এন্ড সেটেলমেন্ট ট্রেনিং একটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি হিসেবে বিবেচিত।
তিনি বলেন, ভূমি প্রশাসন ব্যবস্থায় সার্ভে ও সেটেলমেন্ট কার্যক্রম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। এর মাধ্যমে ভূমির সঠিক মালিকানা নির্ধারণ, রেকর্ড সংরক্ষণ ও হালনাগাদ করা হয়।
আলী ইমাম মজুমদার বলেন, এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মকর্তারা আধুনিক জরিপ পদ্ধতি সম্পর্কে গভীর জ্ঞান অর্জন করেন। এতে ভূমি জরিপ কার্যক্রম আরও দ্রুত, নির্ভুল ও স্বচ্ছ হয়। প্রশিক্ষণকালে সেটেলমেন্ট প্রশিক্ষণে ভূমি রেকর্ড প্রস্তুত, হালনাগাদ ও সংরক্ষণের প্রক্রিয়া শেখানো হয়, যা নাগরিকদের সঠিক মালিকানা নিশ্চিত করতে সহায়তা করে।
তিনি বলেন, এতে ভূমি সংক্রান্ত বিরোধ, দখল সমস্যা ও মামলা-মোকদ্দমা অনেকাংশে হ্রাস পায়। এই প্রশিক্ষণ কর্মকর্তাদের মধ্যে দায়িত্ববোধ, সততা ও সেবার মনোভাব বৃদ্ধি করে। ভূমি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও জনসেবার মান বাড়াতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। এই প্রশিক্ষণ মাঠ পর্যায়ের কাজে বাস্তব জ্ঞান অর্জনের সুযোগ সৃষ্টি করে। ভূমি পরিমাপ, মানচিত্র অঙ্কন ও রেকর্ড সংশোধন ইত্যাদি কাজের বাস্তব অনুশীলন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দক্ষ করে তোলে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের পরিচালক (যুগ্মসচিব) ও কোর্স পরিচালক মো. মোমিনুর রশীদ। এতে সভাপতিত্ব করেন ভূমি রেকর্ড এ জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সাইদুর রহমান।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন ভূমি রেকর্ড এ জরিপ অধিদপ্তরের পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো. শাহাদাত হোসেন।