গুমের মামলায় ট্র্যাইব্যুনালে নেওয়া হয়েছে ১৩ সেনা কর্মকর্তাকে

বাসস
প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৩:২৭

ঢাকা, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : আওয়ামী লীগের শাসনামলে গুম করে নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দুই মামলায় গ্রেফতার ১৩ সেনা কর্মকর্তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যাইব্যুনালে নেওয়া হয়েছে।

ঢাকা সেনানিবাসে স্থাপিত সাময়িক কারাগার থেকে বিশেষ প্রিজন ভ্যানে করে আজ (রোববার) সকাল ১০ টায় তাদের ট্রাইব্যুনালে আনা হয়।

এই প্রেক্ষাপটে ট্রাইব্যুনালকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়। ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সেনা, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবির বিপুল সংখ্যক সদস্যদের উপস্থিতি দেখা যায়।

আওয়ামী লীগের শাসনামলে গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক দুই মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার নিরাপত্তা উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিকী এবং ডিজিএফআইয়ের সাবেক পাঁচ মহাপরিচালসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে গত ৮ অক্টোবর গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। 

এই দুই মামলায় পরোয়ানাভুক্ত আসামিদের গত ২২ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী আসামি সেনা কর্মকর্তাদের হাজিরের পর ওইদিন তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন  আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যাইব্যুনাল-১। 

বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর অপর দুই সদস্য হলেন বিচারক মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

কারাগারে পাঠানো সেনা কর্মকর্তারা হলেন: র‌্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কে এম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন ও কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (এখন অবসরকালীন ছুটিতে); র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম ও ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী।

অন্যদিকে, জুলাই-আগস্টে রাজধানীর রামপুরায় ২৮ জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধে মামলায় গ্রেফতার লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেদোয়ানুল ইসলাম ও মেজর মো. রাফাত বিন আলম মুনকে আগামীকাল (সোমবার) ট্রাইব্যুনালে হাজিরের দিন ধার্য রয়েছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যাইব্যুনালের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর গত ১১ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে কর্মরত ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে হেফাজতে নেওয়ার কথা জানায় সেনাবাহিনী। 

আর্মি অফিসার্স মেসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর অ্যাডজুটান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো.হাকিমুজ্জামান বলেন, দুটি মামলার ৩০ জন আসামির মধ্যে ২৫ জনই সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা। তাদের মধ্যে নয় জন অবসরপ্রাপ্ত এবং একজন এলপিআরে গেছেন। আর বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন ১৫ জন।

পরবর্তীতে ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে সাময়িকভাবে কারাগার ঘোষণা করে গত ১২ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। 

রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের উপ সচিব মো. হাফিজ আল সাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, 'বাংলাদেশ ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ধারা ৫৪১(১) এর ক্ষমতাবলে এবং দি প্রিজন অ্যাক্ট এর ধারা ৩ এর বি অনুসারে ঢাকা ঢাকা সেনানিবাসের বাশার রোড সংলগ্ন উত্তর দিকে অবস্থিত 'এমইএস' বিল্ডিং নং-৫৪-কে সাময়িকভাবে কারাগার হিসেবে ঘোষণা করা হল'।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
বাংলাদেশে কারখানা স্থাপনে জাপানি কোম্পানির প্রতি আহ্বান রাষ্ট্রদূতের
লালমনিরহাটে ৮৬ হাজার হেক্টরে আমন চাষ, উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়ানোর আশা
রংপুরে দুই ব্যক্তি হত্যা মামলার প্রধান আসামি গ্রেপ্তার
আয়ারল্যান্ডকে ২১৭ রানে হারিয়ে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ
ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে মার্কিন পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনার ইঙ্গিত যুক্তরাষ্ট্রের
রাজশাহীতে পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার ১৮
চাঁদপুরে নিখোঁজের ৫ দিন পর নদী থেকে কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার
দেশের কোথাও কোথাও হালকা কুয়াশা পড়তে পারে
গুমের দুই মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানি ৩ ও ৭ ডিসেম্বর
অস্ট্রেলিয়ার উত্তরাঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছে প্রশাসন
১০