বাসস
  ০২ এপ্রিল ২০২৩, ১০:২৬
আপডেট : ০২ এপ্রিল ২০২৩, ১০:২৯

জয়পুরহাটের চাহিদা মিটিয়ে সজিনা যাচ্ছে বিভিন্ন জেলায়

জয়পুরহাট, ২ এপ্রিল, ২০২৩ (বাসস) : প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না থাকায় জেলায় এবার সজিনার বাম্পার ফলন হয়েছে। জয়পুরহাটের চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। এতে আর্থিক ভাবেও লাভবান  হচ্ছেন জেলার  কৃষকরা।    
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র বাসস’কে জানায়, জয়পুরহাট জেলায় এবার ২ হাজার ১ শ হেক্টর জমিতে সজিনা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হলেও চাষ হয়েছে ২ হাজার তিনশ হেক্টর জমিতে। এতে সজিনার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১০ হাজার ৭ শ মেট্রিক টন। জেলার পাঁচ উপজেলাতেই বিশেষ করে সদর উপজেলার মোহাম্মাদাবাদ, বম্বু, ভাদসা, দোগাছী, জামালপুর, দোগাছী, চকবরকত, ধলাহার ও  পাঁচবিবি উপজেলার আয়মারসুলপুর, মোহাম্মদপুর, আওলাই, ধরঞ্জি, বাগজানা, মোহাম্মদপুর ও কুসুম্বা  ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় বাড়ির পাশের অনাবাদি ও পতিত জমিতে সাধারণ চৈতালি সজিনার পাশাপাশি বারোমাসি সজিনার ও  চাষ হয়েছে। এ ছাড়াও কালাই উপজেলার মাত্রাই, উদয়পুর, পুনট, জিন্দারপুর ও আহম্মেদাবাদ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায়  অকৃষি বা পতিত জমিতে হাইব্রিড, বারোমাসি ও দেশী জাতের সজিনার চাষ হচ্ছে। বসতবাড়ির আশে পাশে, পুকুর পাড়ে, ছাদে ও হাসপাতাল, স্কুল, কলেজের মাঠে এবং রাস্তার দু’পাশে অকৃষি বা পতিত জমিতে পুষ্ঠিগুণে ভরপুর ও আশঁজাতিয়  সজিনার সারি সারি গাছ গুলো  এখন সজিনার ভারে ন্যুয়ে পড়েছে। জেলায়  পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ সজিনা চাষ দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। এখানকার সজিনা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হয়ে থাকে বলে জানান স্থানীয় কৃষক নাজমুল হোসেন। নতুনহাটের পাইকারী ক্রেতা আইয়ুব আলী জানান, জয়পুরহাটের চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ নাটোর, খুলনা, চূয়াডাঙ্গা, যশোর, ভোলা জেলায় পাঠানো হচ্ছে। এতে পারিবারিক চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি সজিনা বিক্রি করে অনেকেই অর্থিক ভাবেও লাভবান হচ্ছেন। বাজারে ওঠা প্রথম দিকে আগাম জাতের ও বারোমাসি সজিনা ২০০ টাকা  কেজি বিক্রি হলেও  বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। এবার সজিনার ভালো দাম পেয়ে কৃষকরাও খুশি। সজিনা চাষ ইতোমধ্যেই অর্থকরি ফসল হিসেবে সকলের কাছে বিবেচিত হচ্ছে। প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না থাকায় এবার সজিনা বাম্পার ফলন হয়েছে বলে জানান কৃষকরা।  সদর উপজেলার ধলাহার এলাকার  সজিনা চাষি মো: রফিকুল ইসলাম  বলেন, বাড়ির সমনে রাস্তার দু’ধারে ১৫টি সজিনার গাছ লাগানো হয়েছিল। গত বছর ওইসব সজিনার গাছ থেকে প্রায় ৮ মণ সজনা পেলেও এবার ৯ মণ সজিনা  বিক্রি করা সম্ভব হয়েছে। এবার সজিনার বাম্পার ফলন পেয়ে খুশি বলে জানান তিনি। জয়পুরহাটের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা: মনিরুজ্জামান মানিক বলেন, সজনা পুষ্ঠিগুণে ভরপুর একটি ডাটা জাতীয় সবজি। সজনার মধ্যে ভিটামিন-এ ও সি আছে। এটি মানব দেহে কোলেষ্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। সজিনা উচ্চরক্ত চাপ ও ডায়াবেটিস জনিত রোগীদের জন্য বিশেষ উপকারী। তা ছাড়া সজিনার পাতাও  শাক হিসেবে খাওয়া যায়। এটিও  প্রচুর পুষ্টি গুণাগুন সমৃদ্ধ। 
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ রাহেলা পারভীন বলেন, সজিনা একটি পরিবেশবান্ধব ও অর্থকরি আশঁজাতীয় সবজি। এবার জয়পুরহাটে সজিনার বাম্পার ফলন হয়েছে এবং জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্যান্য জেলায় যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি আরও জানান, এটি বসতবাড়ির আশপাশের অনাবাদি ও পতিত জমিতেও চাষ করা যায়। সজিনা চাষে তেমন খরচ  লাগে না। বাজারে দামও ভালো পাওয়া যায়। সজিন গাছের তেমন কোন রোগ-বালাই নেই বললেই চলে। একটু পরিচর্যা করলেই অনেক ভালো ফলন পাওয়া যায় বলে জানান তিনি।