বাসস
  ২০ মে ২০২৩, ২২:১০

মহিলা পরিষদের ৫৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে তারুণ্যের উৎসব অনুষ্ঠিত

ঢাকা, ২০ মে, ২০২৩ (বাসস) : বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের ৫৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘তারুণ্যের উৎসব’ আজ  বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির নন্দন মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
‘কুসংস্কার বৈষম্যের চাই পরিত্রাণ, গাই মানবতার গান’- এই স্লোগান নিয়ে আয়োজিত এই তারুণ্যের উৎসবে  সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক উম্মে সালমা বেগম অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ।
ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, আজকের নারী আন্দোলন এ দেশের তরুণপ্রজন্মের সামাজিক-সাস্কৃতিক আন্দোলনের সাথে গভীরভাবে   সম্পৃক্ত। নারীর মানবাধিকার আন্দোলন যা কিনা মানবতার আন্দোলনেরই একটি অংশ। এই মানবতার আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে তারুণ্যের শক্তিকে কাজে লাগাতে হবে। এই প্রত্যয় নিয়েই তারুণ্যের এ উৎসব আয়োজন করা হয়েছে।
মালেকা বানু বলেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের ৫৩ বছরের সংগ্রামের অর্জন উদ্যাপন করবে এ দেশের তরুণ সমাজ। যে কুসংস্কার বৈষম্যকে বাড়িয়ে দেয়, মানবতাকে পদদলিত করে- সেই কুসংস্কার থেকে আমাদের মুক্ত হতে হবে। আজকের তরুণরাই আগামী দিনের করণীয় নির্ধারণ করবে, দেশ ও সমাজের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে বিকশিত করে মানবিক সমাজ গঠন করবে।
উৎসবে তরুণ প্রজন্মের বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন তাদের নিজস্ব পরিবেশনা নিয়ে অংশগ্রহণ করে। অংশগ্রহণকারী সংগঠনসমূহ হলো: বহ্নিশিখা, স্পর্শ, নৃত্যনন্দন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সংসদ, বহ্নিশিখা গ্রীন ভয়েস, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় আবৃত্তি সংসদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নাট্যসংসদ, ঢাকা ইউনিভার্সিটি মাইম অ্যাকশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা সংসদ এবং ক্রিমিনোলজি বিভাগ, ঢাকা  বিশ্ববিদ্যালয়। একক সঙ্গীত পরিবেশন করেছেন বিশিষ্ট কণ্ঠশিল্পী ও মিডিয়াব্যক্তিত্ব নবনীতা চৌধুরী। উৎসবে সংগঠনসমূহ নাটিকা, কবিতা আবৃত্তি, মাইম শো সঙ্গীত পরিবেশন করেন।
উল্লেখ্য, মহিলা পরিষদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে তারুণ্যের এই উৎসব বাংলাদেশের নারীর অধিকার আদায়ের অন্যতম পথরেখা-নির্মাতা ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের নেত্রী দিপালী সংঘের প্রতিষ্ঠাতা লীলা রায়ের প্রতি উৎসর্গ করা হয়েছে। এ বছর মানবমুক্তি ও নারীমুক্তির লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত ‘দিপালী সংঘ’র প্রতিষ্ঠা-শতবার্ষিকী।
উল্লেখ্য, ১৯৭০ সালের ৪ এপ্রিল কবি সুফিয়া কামালের নেতৃত্বে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে অর্ধ শতাব্দীকাল ধরে নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করে আসছে। সংগঠনটির জন্ম হয়েছিল নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও নারী-পুরুষের সমতাপূর্ণ রাষ্ট্র ও সমাজ নির্মাণের প্রত্যয় নিয়ে। এই আন্দোলন শুধুমাত্র নারীর জন্য আন্দোলন নয়, এটি সার্বিকভাবে সমাজের ও রাষ্ট্রের রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক-অর্থনৈতিক অগ্রগতির আন্দোলন। তাই নারী আন্দোলনকে একটি সামাজিক শক্তি হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সকল শক্তি, বিশেষ করে তারুণ্যের শক্তিকে এগিয়ে আসতে হবে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের নেতৃবৃন্দ, ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন পাড়া শাখার কর্মী-সদস্যবৃন্দ, সাংবাদিক ও তরুণপ্রজন্মের প্রতিনিধিবৃন্দসহ পাঁচ শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের গবেষণা কর্মকর্তা আফরুজা আরমান।