বাসস
  ১৩ জুন ২০২৩, ১৯:৩৪

শরীয়তপুরের এক বিচারক-দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে হাইকোর্টে তলব

ঢালা, ১৩ জুন, ২০২৩ (বাসস) : একটি মামলায় উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিন সত্ত্বেও আসামিসহ তাদের স্বজনদের আটক করে শারীরিক নির্যাতন বিষয়ে  ব্যাখ্যা দিতে শরীয়তপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নড়িয়া সার্কেল) রাসেল মনির ও সদ্য প্রত্যাহার হওয়া পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে উচ্চ আদালতের জামিনাদেশ থাকার পরও, আসামিদের জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে তলব করা হয়েছে। আগামী ১৬ জুলাই তাদেরকে সশীররে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা করতে বলা হয়েছে।  ওই আসামিদের আইনজীবী বিষয়টি আদালতে উপস্থাপনের পর বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেন।
পাশাপাশি পুলিশের মহাপরিদর্শক ও শরীয়তপুরের পুলিশ সুপারকে এ বিষয়ে অবস্থান ব্যাখ্যা করতে বলা হয়েছে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মুজিবুর রহমান। তিনি আদালতের আদেশের বিষয়টি জানান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
২৩ মে দ্রুত বিচার আইনে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানায় একটি ছিনতাই মামলা হয়। মামলায় শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা আহম্মেদ চোকদারকান্দি এলাকার সাদ্দাম চোকদার, বকুল চোকদারসহ নয়জনকে আসামি করা হয়। সেই মামলায় ২৯ মে সাদ্দাম, বকুল, সাইদুল উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন নেন। জামিনে আসার পর, ৩০ মে রাতে তারা এ মামলার আরেক আসামি আনোয়ারকে নিয়ে ঢাকা কেরানীগঞ্জ সাদ্দামের বন্ধু আলমগীর চোকদারের বাসায় যান।  ওইদিন রাতে তথ্য পেয়ে সেই বাসায় হাজির হন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনির ও ওসি মোস্তাফিজুর রহমান, জাজিরা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রুবেল বেপারীসহ ১০-১২ পুলিশ সদস্য।
আইনজীবী মুজিবুর রহমান জানান, ২৯ মে তিন আসামি ৬ সপ্তাহের জামিন দেন। পরদিন ৩০ মে আসামিদের গ্রেফতার করা হয়, মারধর করা হয়, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রুবেল ব্যাপারী এ সময় উপস্থিত ছিল। পরদিন থানায় নিয়ে এসে আসামিদের বাবার কাছ থেকে ৭২ লাখ টাকার চেক লিখে নেয় এবং নওডোবা বাজারে দুইটা দোকান লিখে দিতে বলে। এরপরও পুলিশ ক্ষান্ত হয়নি। আসামিরা যখন পানি চায়, তখন এক আসামির প্রস্রাব আরেকজনকে খাওয়ায়। পরে ১ জুন তাদের চিফ জুডিসিয়াল কোর্টে উপস্থাপন করা হয়। উচ্চ আদালতের আদেশ থাকায় চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের উচিত ছিল সঙ্গে সঙ্গে জামিন দেয়া । এটা না করে তিনি কারাগারে পাঠিয়েছেন। এ ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনসহ বিষয়টি আজকে নজরে আনার পর, দুই পুলিশ অফিসার এবং চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে তলব করেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি পুলিশের মহাপরিদর্শক ও শরীয়তপুরের পুলিশ সুপারকে এ বিষয়ে অবস্থান ব্যাখ্যা করতে বলা হয়েছে।