স্কুল মাঠে পোড়ানো হচ্ছে বিটুমিন, কালো ধোঁয়ায় ক্লাস ছুটি! 

বাসস
প্রকাশ: ২১ মে ২০২৫, ১৮:২০ আপডেট: : ২১ মে ২০২৫, ১৮:৩৮
ছবি : বাসস

ঝিনাইদহ, ২১ মে, ২০২৫ (বাসস) : জেলার সদর উপজেলায় স্কুলের মাঠে সড়ক নির্মাণের ইট, বালু ও পাথর রেখে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় ব্যাঘাত ঘটানোর অভিযোগ উঠেছে। স্কুলের মাঠেই চলছে ইট,পাথর ও বিটুমিন  পোড়ানোর কাজ। ফলে ক্ষতিকর কালো ধোঁয়া ও ছাই ছড়িয়ে পড়ছে শ্রেণিকক্ষসহ আশেপাশের এলাকায়। 

সরেজমিনে দেখা যায়, আজ বেলা ১০টার দিকে সদর উপজেলার কালীচরণপুর ইউনিয়নের মোসলেম উদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে সড়ক নির্মাণের পাথর, বালু ও বিটুমিনের ব্যারেল পড়ে আছে। পাশেই বিটুমিন  পোড়ানো হচ্ছে। এতে ঘন কালো ক্ষতিকর ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ছে পুরো এলাকায়। ধোঁয়া এড়াতে স্কুলের বারান্দা ঢেকে ফেলা হয়েছে পলিথিনে। ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। প্রকাশ্য দিবালোকে স্কুলের মাঠে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের এমন কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।

পরে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কায় বেলা ১১টার দিকে বাধ্য হয়ে স্কুল ছুটি ঘোষণা করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। 
সাকিব হোসেন, সুমাইয়া আক্তার ও সোহেল রানাসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, আমাদের স্কুলের মাঠে রাস্তা নির্মাণের পাথর, বালু ও পিচ জ্বালানোর কাজ করছে। স্কুল মাঠে পাথর ছড়িয়ে পড়েছে। এতে আমাদের খেলাধুলা বন্ধ হয়ে গেছে। কালো ধোঁয়ার কারণে স্কুলে ক্লাস করাও কষ্টকর।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলিবর্দ্দি বিশ্বাস বলেন, স্কুলের মাঠে সড়ক নির্মাণ সামগ্রী রাখার ব্যাপারে আমরা সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বিরোধিতা করেছিলাম। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালীদের চাপে আমরা কিছু করতে পারিনি। আমরা বাধ্য হয়েছি ক্লাস এবং পরীক্ষা বন্ধ করতে।

জানা গেছে, ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের সামনে হামদহ স্টান্ড থেকে নারিকেলবাড়িয়া বাজার পর্যন্ত সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু হয় মাস চারেক আগে। ওই সড়ক নির্মাণের জন্য পাথর, বালু ও বিটুমিনের ব্যারেল মোসলেম উদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে রাখে প্রতিষ্ঠানটি। এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্থানীয় নেতাদের ম্যানেজ করে প্রভাব খাটিয়ে ঠিকাদার মিঠু খাঁন ও রাসেল আহমেদ স্কুল মাঠে মালামাল রেখেছে। শেষ পর্যন্ত স্কুলের মাঠেই বিটুমিন জ্বালানোর কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি।

এ বিষয়ে ঠিকাদার মিঠু খাঁ বলেন, সড়কটির অবস্থা খুবই নাজুক ছিল। এলাকার মানুষ ও স্কুল কমিটির লোকজন সবাই বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে স্কুলের মাঠ ব্যবহারের জন্য আমাদের অনুমতি দেয়। বিটুমিন এক থেকে দুইদিন  পোড়ানো হয়। মাঠে ধান ও অন্যান্য ফসল থাকায় আমরা খোলা জায়গা না পেয়ে স্কুলের মাঠ ব্যবহার করেছি। আর কখনোই কোনো স্কুলের মাঠে এই কাজ করব না।

সদর উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ওই সড়কটির কাজ করছে ঠিকাদার মিঠু খাঁ ও রাসেল। তারা সড়ক নির্মাণের মালামাল স্কুলের মাঠে রেখেছে কিনা জানা নেই। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নাম কাগজপত্র দেখে জানাতে পারব।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. লুৎফর রহমান বলেন, স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি যদি চায়, তাহলে তারা স্কুলমাঠ ব্যবহার করার অনুমতি দিতে পারে। তবে পাঠদান ব্যাহত হয় বা শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি হয়, এমন কাজ করার কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখব।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
দুর্ঘটনার শিকার বাংলাদেশের অর্থনীতি কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে : বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর
নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের মেয়াদ বাড়লো ১০ দিন
পাকুন্দিয়ায় দুই ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগ
ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে সর্বসাধারণের কাছে টিসিবির পণ্য বিক্রয় শুরু বৃহস্পতিবার
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ফায়ার সার্ভিস সদস্যদের প্রশিক্ষণ কোর্স সম্পন্ন
কোরবানির চামড়া সংরক্ষণে সহায়তা দেবে সরকার: বাণিজ্য উপদেষ্টা
‘সুস্থ হয়ে উঠেছেন’ আসাঞ্জ, গাজা-শার্ট পরে কানসে প্রামাণ্যচিত্র প্রচার
বাংলাদেশের বিপক্ষে ঐতিহাসিক সিরিজ জয় সংযুক্ত আরব আমিরাতের
ভূমিকম্প মোকাবিলায় জনসচেতনতার বিকল্প নেই: দুর্যোগ উপদেষ্টা
আর্কটিক দূষণ নিয়ে আলোকপাত করবে মেরু ভালুকের বায়োপসি
১০