ঢাকা, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বরের মধ্যে শীতল আবহাওয়ার লা নিনা পরিস্থিতি ফিরে আসতে পারে। তবে এই সময় লা নিনা বিরাজ করলেও গড় তাপমাত্রার চেয়ে বেশি তাপমাত্রা বজায় থাকবে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
জেনেভা থেকে এএফপি এই খবর জানায়।
লা নিনা একটি প্রাকৃতিক জলবায়ুগত ঘটনা, যা মধ্য ও পূর্ব বিষুবীয় প্রশান্ত মহাসাগরের পৃষ্ঠের তাপমাত্রা কমিয়ে দেয়। এর ফলে বাতাস, চাপ ও বৃষ্টিপাতের ধরণেও পরিবর্তন ঘটে।
এই সময় পরিস্থিতি লা নিনা ও তার বিপরীত এল নিনোর মধ্যে দোদুল্যমান থাকে। আর মাঝে মাঝে নিরপেক্ষ অবস্থায়ও দেখা যায়।
জাতিসংঘের বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) জানায়, দুর্বল লা নিনা পরিস্থিতির একটি সংক্ষিপ্ত সময়ের পর মার্চ থেকে নিরপেক্ষ অবস্থা বিরাজ করছে। সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর সময়কালে বিষুবীয় প্রশান্ত মহাসাগরে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা লা নিনা পর্যায়ে নামার সম্ভাবনা ৫৫ শতাংশ।
জাতিসংঘের আবহাওয়া ও জলবায়ু সংস্থার ত্রৈমাসিক হালনাগাদ এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অক্টোবর-ডিসেম্বর ২০২৫ সময়কালে লা নিনা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা সামান্য বেড়ে প্রায় ৬০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর সময়কালে এল নিনো গঠিত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।
বিশ্বের অনেক স্থানে বিশেষ করে উষ্ণমণ্ডলে, লা নিনা এল নিনোর বিপরীত প্রভাব ফেলে। এল নিনো সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যার ফলে বিশ্বের কিছু অঞ্চলে খরা দেখা দেয় এবং অন্যত্র প্রবল বর্ষণ হয়।
গত বছর এল নিনো পরিস্থিতি শেষ হওয়ার পরও তাপমাত্রা প্রায় রেকর্ড পর্যায়ে ছিল। সে অনুযায়ী ২০২৪ সাল ছিল ইতিহাসের সবচেয়ে উষ্ণ বছর।
ডব্লিউএমও উল্লেখ করেছে, লা নিনা ও এল নিনোর মতো প্রাকৃতিক জলবায়ুগত ঘটনাগুলো মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে ঘটে, যা বৈশ্বিক তাপমাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে, চরম আবহাওয়ার ঘটনাকে বাড়াচ্ছে এবং মৌসুমি বৃষ্টিপাত ও তাপমাত্রার ধরণে প্রভাব ফেলছে।
ডব্লিউএমও’র সর্বশেষ হালনাগাদে বলা হয়েছে, সেপ্টেম্বর-নভেম্বর সময়কালে উত্তর গোলার্ধের বেশিরভাগ অঞ্চল ও দক্ষিণ গোলার্ধের বিস্তৃত অংশে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তাপমাত্রা আশা করা যায়।
ডব্লিউএমও প্রধান সেলেস্ট সাওলো বলেন, এল নিনো ও লা নিনো এবং আমাদের আবহাওয়ার ওপর এই গুলোর প্রভাব সম্পর্কিত মৌসুমি পূর্বাভাস জলবায়ু পরিস্থিতি পর্বেক্ষণের গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার।
তিনি বলেন, এই পূর্বাভাস কৃষি, জ্বালানি, স্বাস্থ্য ও পরিবহন খাতের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে কোটি কোটি ডলারের আর্থিক সাশ্রয় নিশ্চিত করেছে এবং প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়ামূলক পদক্ষেপ গ্রহণে দিকনির্দেশনা দিয়ে হাজারো মানুষের জীবন বাঁচিয়েছে।