বাসস
  ১৫ নভেম্বর ২০২৩, ২০:২৩

গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন, দখলদারিত্ব দ্রুত বন্ধের দাবি বাংলাদেশের 

ঢাকা, ১৫ নভেম্বর, ২০২৩ (বাসস) : রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের সহধর্মিনী ড. রেবেকা সুলতানা আজ ইস্তাম্বুলে একটি বিশেষ আন্তর্জাতিক সম্মেলনে গাজার জনগণের শান্তি ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে, ইসরায়েলের আগ্রাসন ও দখলদারিত্ব রোধে বিশ্ব সম্প্রদায়কে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আজ বিকেলে তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুলে রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধানদের স্ত্রীদের "ফিলিস্তিনে শান্তির জন্য একতা" শীর্ষক সম্মেলনে এ আহ্বান জানান। তুরস্কের ফার্স্ট লেডি এমিন এরদোগান এর আয়োজনে মিশর, লেবানন, লিবিয়া, মালয়েশিয়া, কাতার, তুর্কমেনিস্তান, পাকিস্তান, স্কটল্যান্ড, কঙ্গো, সেনেগাল, সংযুক্ত আরব আমিরাত, উজবেকিস্তান এবং ফিলিস্তিন সহ অনেক রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকার প্রধানের সহধর্মিনীরা এ সভায় যোগ দেন। এই বিশেষ সভায় একটি যৌথ প্রস্তাব পাস হয়।
তিনি বলেন, “এই মুহূর্তে, গাজায় এই নির্বোধ রক্তপাত বন্ধ করা ছাড়া আমাদের আর কোনো লক্ষ্য নেই। আমরা এই মানবিক বিপর্যয়ের অবিলম্বে অবসানের লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ।” গাজার জনগণের উপর হামলাকে "গণহত্যা" অভিহিত করে তিনি বলেন, এই অভিযান অবশ্যই গাজা এবং তাদের মাতৃভূমি থেকে ফিলিস্তিনিদের নিশ্চিহ্ন করার অপচেষ্টার অংশ। রেবেকা সুলতানা বলেন, “বর্তমানে ফিলিস্তিনে চলমান নৃশংসতা এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য ইসরাইলকে জবাবদিহি করার জন্য এখন আমাদের আওয়াজ তোলার উপযুক্ত সময় এসেছে।” তিনি বলেন, এই সহিংসতা ও সশস্ত্র সংঘাতের অবসান ঘটাতে আমাদের সমন্বিত প্রচেষ্টা চালাতে হবে তবে আমাদের ফিলিস্তিনিদের একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের ন্যায্য দাবির প্রতি মনোযোগ হারানো উচিত নয় । 
তিনি বলেন, ২৭ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে ১০ তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের জরুরি বিশেষ অধিবেশন এবং ১৮ অক্টোবর ওআইসি কার্যনির্বাহী কমিটির বিশেষ বৈঠকের সিদ্ধান্ত ছাড়াও,  বাংলাদেশ একটি মানবিক যুদ্ধবিরতির পক্ষে ভোট দিয়েছে। 
ডঃ রেবেকা জানান, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ একটি সাধারণ প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। এতে গাজায় ইসরায়েলি নৃশংসতার নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি ও জানানো হয়েছে। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির স্ত্রী বলেন, এছাড়াও  অতি সম্প্রতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফিলিস্তিনিদের প্রতি তাঁর দৃঢ় সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন এবং নারী ও শিশুদের নৃশংস হত্যাকা-ের নিন্দা জানিয়েছেন।  বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির স্ত্রী অভিযোগ করেন যে, বিশ্ব সম্প্রদায় বিশেষ করে পশ্চিমারা বর্বরতার প্রতি উদাসীন বলে মনে হচ্ছে এবং পশ্চিমা বিশ্বের নীরবতা ইসরাইলকে জবাবদিহিতা থেকে মুক্ত করার সুযোগ করে দেয়।  ইসরায়েলকে তার নিষ্ঠুরতা, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ এবং আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘনের জন্য জবাবদিহি করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই সভার উদ্দেশ্য ও চেতনার সাথে একাত্মতা পোষণ করছে বাংলাদেশ।
ফিলিস্তিনের জনগণ গত ৭৬ বছর ধরে ইসরায়েলের আগ্রাসন ও দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে তাদের 'আত্ম-নিয়ন্ত্রণের অধিকার' এবং স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করে আসছে উল্লেখ করে ড. রেবেকা বলেন, বর্তমান ইসরায়েলি আক্রমণ ইতিহাসের সবচেয়ে মারাত্মক হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। এ পর্যন্ত ১১০০ এরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে। এদের মধ্যে বেশিরভাগই অরক্ষিত বেসামরিক নাগরিক - শিশু এবং নারী। বৈঠকে হাসপাতাল স্কুল, মসজিদ, গির্জা, শরণার্থী শিবির এবং জাতিসংঘের সুযোগ-সুবিধার জায়গাগুলিতে নির্বিচারে বোমাবর্ষণ, হত্যা, খাদ্য ও ওষুধ, জল, জ্বালানি এবং বিদ্যুৎ ব্যবহারের অধিকার সীমিত করে, গাজার নিরীহ জনগণের উপর ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংস দমন-পীড়নের তীব্র নিন্দা করা হয়।