ব্রিটিশ একজন বিশ্লেষক জোর দিয়ে বলেছেন, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী ‘হামাস’ যোদ্ধারা কখনো ইসরাইলের কাছে আত্মসমর্পণ করবে না।
হামাসের অন্যতম নেতা ‘মাহমুদ মারদাভি’ সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন, প্রতিরোধ শক্তিগুলোকে নিরস্ত্রীকরণের দাবি সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য এবং এটা আলোচনাযোগ্য বিষয় নয়। এই ধরনের দাবি পুরানো ইহুদি-মার্কিন পরিকল্পনা যা আবারও উত্থাপিত হয়েছে। এইসব দাবি কেবল ফিলিস্তিনি জনগণকে নির্মূল করার জন্য।
ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থা ইরনার উদ্ধৃতি দিয়ে এএফপি জানিয়েছে, ব্রিটিশ বিশ্লেষক ‘ডেভিড হার্স্ট’ বলেছেন, ইহুদিবাদী ইসরাইলকে বুঝতে হবে যে হামাস কখনও আত্মসমর্পণ করবে না। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, আজকের হামাস এবং গাজার আত্মসমর্পণের অর্থ ফিলিস্তিনি ইস্যুকে বিসর্জন দেয়া। কেননা দখলদারিত্বের অবসানের একমাত্র উপায় প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়া।
‘হার্স্ট আরো বলেছেন, ১৮ মাস ধরে চলমান যুদ্ধ এবং দুই মাস ধরে ক্ষুধা ও দুর্ভিক্ষের মধ্যেও গাজার হামাস নেতারা প্রচুর অর্থ নিয়ে অন্যত্র আছেন। এই থেকেই বোঝা যায় যে, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হামাসকে এখনো চিনতে পারেনি।
ব্রিটেনের এই বিশ্লেষক জোর দিয়ে বলেছেন, যুদ্ধের প্রথম থেকেই শত্রুর দুটি শর্তের কাছে মাথা নত করেনি হামাস। এই দুটি শর্ত ছিল গাজাকে নিরস্ত্রীকরণ এবং গাজায় দখলদারিত্ব। ইসরাইল এই পর্যন্ত এ দুটির একটি ইচ্ছাও পূরণ করতে পারেনি।
মিডল ইস্ট আই ওয়েবসাইটের সম্পাদক বলেছেন, বারবার এবং প্রকাশ্যে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, নেতানিয়াহু আলোচনার মাধ্যমে সমাধান অর্জনের পথে প্রধান বাধা। কারণ, তিনি হামাসের সাথে দু’টি পর্যায়ে সমঝোতা স্বাক্ষর করেছিলেন এবং তারপর একতরফাভাবে চুক্তি লঙ্ঘন করেছিলেন।
এই প্রসঙ্গে পশ্চিম এশীয় বিষয়ের একজন ইরানি বিশেষজ্ঞ আলিরেজা আরব বলেছেন, পশ্চিম এশীয় অঞ্চলের সকল ফ্রন্টে ইসরাইলের সাথে প্রতিরোধ শক্তির যুদ্ধ সবচেয়ে স্পর্শকাতর পর্যায়ে পৌঁছেছে। তিনি আরো বলেছেন, ‘হামাস আত্মসমর্পণ করবে না বা নিরস্ত্র হবে না বরং তারা দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে আছে। গাজায় যুদ্ধ অব্যাহত থাকলে এক সময় এটা ইসরাইলেরই ক্ষতি ডেকে আনবে।’
ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মুহাম্মদ আল-কিকও ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের নিরস্ত্রীকরণের দাবিকে একটি ব্যর্থ প্রচেষ্টা হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
অন্যদিকে, ইসরাইলি সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার একজন প্রাক্তন কর্মকর্তা ‘মাইকেল মিলস্টেইন’ হামাস প্রতিরোধ যোদ্ধাদের অবস্থান বিশ্লেষণ করতে গিয়ে স্বীকার করেছেন, হামাসের অটল অবস্থান ও শক্তিশালী মনোবলের পেছনে তাদের ধর্মৗয় বিশ্বাস কাজ করছে যা তাদের শেষ পর্যন্ত সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে।