ঢাকা, ২৫ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস): মজুরি পরিশোধ সংক্রান্ত তথ্য প্রতি মাসে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে অনলাইনে জমা বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে শ্রম সংস্কার কমিশন গত সোমবার তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ প্রতিবেদন হস্তান্তর করে তারা।
সুপারিশে বলা হয়েছে, ‘মজুরি পরিশোধ সংক্রান্ত তথ্য প্রতি মাসে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে অনলাইনে জমা বাধ্যতামূলক করা।’
বাধ্যতামূলক তহবিল ও আপদকালীন মজুরি বিমা বিষয়ে সুপারিশে বলা হয়েছে, 'মজুরি নিয়মিত রাখতে নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় ক্যাশ ফ্রো ঠিক রাখার জন্য ব্যবস্থাসমূহ, যেমন-ব্যাংক ওভারড্রাফট, বাধ্যতামূলক আপদকালীন তহবিল (তিন মাসের মোট বেতন/মজুরির সমপরিমাণ) এবং অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা। একই সঙ্গে দেউলিয়া আইনে সংশোধন করে শ্রমিকদের পাওনা প্রথমে পরিশোধের বিধান নিশ্চিত করা।’
সুপারিশে বলা হয়েছে, ‘রপ্তানিমুখী শিল্পের সকল প্রতিষ্ঠানের জন্য সরকার একটি আপদকালীন তহবিল গঠন করবে; যেখানে নিয়োগকারী কারখানা/প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের ২ মাসের মজুরি/বেতনের সমপরিমাণ টাকা উক্ত তহবিলে জমা রাখবে। এই তহবিল প্রতিষ্ঠানের নিয়োগকারী, সরকার ও উক্ত শিল্পের মালিকদের অ্যাসোসিয়েশন (যদি থাকে) এর যৌথ ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হবে। তবে কোনো কারণে নিয়োগকারীর অবর্তমানে সরকার জরুরি পরিস্থিতিতে নিজস্বভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবে।’
সুপারিশে আরো বলা হয়, 'জাতীয় মজুরি নিশ্চয়তা বীমা স্কিম চালু করা, যাতে করে কোনো প্রতিষ্ঠান মজুরি প্রদানে ব্যর্থ হলে, কোনো শ্রমিক ছাঁটাই হলে, পুনরায় কম বেতনে নিযুক্ত হলে, এই বীমার আওতায় তা পরিশোধ করা যায়।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গত ১৭ নভেম্বর বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিআইএলএস) নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদকে প্রধান করে ১০ সদস্যের একটি শ্রম সংস্কার কমিশন গঠন করে।
কমিশন শ্রম বিষয়ে অংশীজন ও বিভিন্ন সংগঠন এবং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মতবিনিময় করে সুপারিশসহ প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা কাছে দাখিল করে।