ঢাকা, ২৪ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষিকা মেহেরীন চৌধুরীর আত্মত্যাগ জাতির কাছে এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। তার এই সাহস, ভালোবাসা ও ত্যাগকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছে সমগ্র জাতি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির মহাসচিব প্রফেসর ড. মোর্শেদ হাসান খান তার ফেসবুক পেইজে এক পোস্টে এ কথা বলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ শিক্ষক ও শিক্ষক নেতা বলেন, ‘রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় চারদিকে যখন শোকের মাতম, তখন উঠে এসেছে এক শিক্ষিকার আত্মত্যাগের গল্প। সেই গল্পে চোখ পড়তেই আবার স্তম্ভিত হয়েছেন সবাই। দুর্ঘটনায় ২০ শিক্ষার্থীকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়ে নিজে প্রাণ হারিয়েছেন শিক্ষিকা মেহেরীন চৌধুরী।’
তিনি আরো বলেন, প্রত্যক্ষদর্শী ও উদ্ধারকর্মীদের বর্ণনায় উঠে এসেছে, বিধ্বস্ত বিমানের আগুন ও ধোঁয়ার ভয়াবহ পরিবেশে মেহেরীন চৌধুরী নিজের জীবনের কথা চিন্তা না করে আতঙ্কিত শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। আগুন ছড়িয়ে পড়ার আগেই তিনি একের পর এক শিক্ষার্থীকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে সক্ষম হন।
প্রফেসর ড. মোর্শেদ হাসান খান বলেন, তার এই অসাধারণ প্রচেষ্টায় অন্তত ২০ শিক্ষার্থী প্রাণে বাঁচে- কেউ কেউ অক্ষত, কেউ সামান্য আহত। কিন্তু সাহসিকতা আর কর্তব্যের এই যুদ্ধে শেষ পর্যন্ত নিজেই জীবন হারান মেহেরীন।
ড. মোর্শেদ হাসান খান পোস্ট আরও বলেন, নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের চৌধুরীপাড়ার কৃতী সন্তান মেহেরীন চৌধুরী ছিলেন মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একজন আদর্শ ও নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষিকা। শিক্ষার্থীদের প্রতি দায়িত্ববোধ আর ভালোবাসায় তিনি ছিলেন অনন্য।
তার স্বামী মনসুর হেলাল জানান, গতকাল ভোরে শিক্ষিকা মেহেরীনের লাশ ঢাকা থেকে নিজ গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে নীরব শোক আর অশ্রু সংবরণে তাকে সমাহিত করা হয় জলঢাকার বোগলাগাড়ী চৌধুরীপাড়ার পারিবারিক কবরস্থানে।
ড. মোর্শেদ হাসান খান বলেন, ‘শিক্ষিকা মেহেরীনের এই আত্মত্যাগ জাতির কাছে এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। তার এই সাহস, ভালোবাসা ও ত্যাগকে গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছে সমগ্র জাতি।’