ঢাকা, ১০ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : শান্তিতে এ বছর নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ভেনেজুয়েলার বিরোধীদলীয় নেতা মারিয়া কোরিনা মাচাদো। শুক্রবার নরওয়ের নোবেল কমিটি শান্তিতে নোবেল বিজয়ী হিসেবে মারিয়া কোরিনা মাচাদোর নাম ঘোষণা করে।
অসলো থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
কমিটির চেয়ারম্যান ইয়র্গেন ওয়াতনে ফ্রিডনেস অসলোতে এক ঘোষণায় বলেন, ভেনেজুয়েলার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় তার নিরলস প্রচেষ্টা এবং স্বৈরতন্ত্র থেকে ন্যায়সঙ্গত ও শান্তিপূর্ণ গণতন্ত্রে রূপান্তরের সংগ্রামে ভূমিকার রাখায় তাকে এ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘মাচাদো এক নিষ্ঠুর কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্রে গভীরভাবে বিভক্ত বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরকে ঐক্যবদ্ধ করার অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব। দেশটি বর্তমানে মানবিক ও অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে।’
কমিটি তাকে সাম্প্রতিক সময়ে লাতিন আমেরিকায় ‘সাহসী ব্যক্তি হিসেবে অনন্য দৃষ্টান্ত’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। গত এক বছর তাকে লুকিয়ে থাকতে বাধ্য করা হয়েছে।
ফ্রিডনেস বলেন, ‘জীবন নিয়ে গুরুতর হুমকি থাকা সত্ত্বেও তিনি দেশে থেকে গেছেন, যা লাখ লাখ মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে’।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ বছর এই পুরস্কার পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রকাশ্যে ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন। দ্বিতীয় মেয়াদে জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর থেকে তিনি বারবার দাবি করেন, বিভিন্ন সংঘাত নিরসনে ভূমিকার জন্য তিনি নোবেল পাওয়ার যোগ্য। তবে পর্যবেক্ষকদের মতে, এ দাবি অতিরঞ্জিত।
অসলোতে নোবেল বিশেষজ্ঞরা পুরস্কার ঘোষণার আগেই বলেছিলেন, ট্রাম্প নোবেল পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। কারণ তার ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতি আলফ্রেড নোবেলের ১৮৯৫ সালের উইল অনুযায়ী শান্তি পুরস্কারের আদর্শের পরিপন্থী।
গত বছর এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার পায় পরমাণু অস্ত্রবিরোধী জাপানের সংগঠন ‘নিহন হিদানকায়ো’। এটি হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পরমাণু বোমা হামলায় বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের উদ্যোগে গড়ে ওঠা একটি তৃণমূল আন্দোলন।
আগামী ১০ ডিসেম্বর আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুবার্ষিকীতে অসলোতে এক অনুষ্ঠানে বিজয়ীর হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, শুধু শান্তিতে নোবেল পুরস্কারই অসলোতে ঘোষণা দেওয়া হয়। বাকি সবগুলো স্টকহোমে ঘোষণা ও প্রদান করা হয়। নোবেল পুরস্কারে একটি সনদপত্র, একটি স্বর্ণপদক এবং ১২ লাখ মার্কিন ডলার সমমূল্যের চেক প্রদান করা হয়।
গতকাল সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। এ বছর এই পুরস্কার পেয়েছেন হাঙ্গেরির সমকালীন গুরুত্বপূর্ণ লেখক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই। তার রচনাগুলো বহুমাত্রিক চিন্তাধারা, হতাশা ও বিষণ্নতার বিষয়বস্তুকে গভীরভাবে বিশ্লেষণ করেছে।
আগামী সোমবার অর্থনীতির পুরস্কার ঘোষণার মধ্য দিয়ে ২০২৫ সালের নোবেল মৌসুম শেষ হবে।