ঢাকা, ১৫ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর এনফোর্সমেন্ট ইউনিট দেশের তিনটি জেলায় অভিযান চালিয়ে স্বাস্থ্য, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ও খাদ্য খাতে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে।
দুদক জানায়, মঙ্গলবার রাজউক, সাতক্ষীরা ও যশোরে পরিচালিত এসব অভিযানে দালালচক্র, অননুমোদিত প্রতিষ্ঠান, নথিপত্রে গরমিল ও নিম্নমানের পণ্য মজুদের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।
রাজধানীতে, রাজউক-এর অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে দুদক প্রধান কার্যালয়ের একটি এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান চালায়। টিমটি প্লট বরাদ্দসংক্রান্ত আবেদনপত্র, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, এমআইএস তথ্যসহ বিভিন্ন নথি সংগ্রহ করে এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বক্তব্য গ্রহণ করে।
অন্যদিকে, সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসাসেবা না দিয়ে রোগীদের প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠানোর অভিযোগে দুদক, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, খুলনা অভিযান চালায়। এ সময় দালালচক্রের সক্রিয়তা পাওয়া যায়। দুদক টিম সাতজন দালালকে হাতেনাতে আটক করে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কাছে সোপর্দ করে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেন।
স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতেও অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় দেখা যায়, অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান লাইসেন্স ছাড়া পরিচালিত হচ্ছে এবং দালালদের মাধ্যমে রোগী সংগ্রহ করছে।
কয়েকটি সেন্টারের মালিক অভিযান টের পেয়ে কার্যক্রম বন্ধ করে পালিয়ে যান। সরেজমিন পর্যবেক্ষণ, রোগী ও সেবাগ্রহীতাদের বক্তব্য এবং রেকর্ডপত্র বিশ্লেষণে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে।
এছাড়া, যশোরের শার্শা উপজেলার নাভারণ সরকারি খাদ্য গুদামে নিম্নমানের চাল মজুদ ও পরিমাণ কম দেখিয়ে অবশিষ্ট চাল বিক্রির অভিযোগে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় অভিযান পরিচালনা করে।
চালের প্রকৃত পরিমাণ যাচাইয়ের সময় ১০টি বস্তায় নিম্নমানের চালের প্রমাণ পাওয়া যায়। এসময় গুদাম কর্মকর্তা কৃষকদের কাছ থেকে সংগৃহীত ধানের তালিকা দেখাতেও ব্যর্থ হন। পরিদর্শন ও নথি বিশ্লেষণে এখানেও অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।
দুদক জানায়, অভিযানে সংগৃহীত তথ্য, উপাত্ত ও প্রমাণের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে কমিশনের কাছে বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।