ন্যায়, মানবিকতা ও দায়িত্ববোধ স্থায়ী শান্তির ভিত্তি : ত্রাণ উপদেষ্টা

বাসস
প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ১৪:৩১ আপডেট: : ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ১৪:৫০
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম আজ ‘জাতীয় শান্তি সহায়ক সম্মেলন ২০২৫’-এ প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা দেন। ছবি : পিআইডি

ঢাকা, ২৪ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীর প্রতীক বলেছেন, পৃথিবী, দেশ, সমাজ কিংবা ব্যক্তি জীবনে সবচেয়ে কঠিন বিষয় হলো শান্তি অর্জন করা। 

তিনি বলেন, শান্তি প্রতিষ্ঠা বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জের বিষয়। শান্তি একদিনে অর্জিত হয় না। এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া, যা ব্যক্তিগত আচরণ, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র ও বৈশ্বিক ব্যবস্থার প্রতিটি স্তরে গড়ে ওঠে। 

আজ রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে দ্য হাঙ্গার প্রোজেক্ট বাংলাদেশ আয়োজিত তিন শতাধিক পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপ সদস্যদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত ‘জাতীয় শান্তি সহায়ক সম্মেলন ২০২৫’-এ প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা বলেন, যে সমাজে ন্যায়, মানবিকতা, শিষ্টাচার, সহমর্মিতা ও দায়িত্ববোধ লালিত হয়, সেই সমাজেই স্থায়ী শান্তির ভিত্তি গড়ে ওঠে। আর সেই মানসিকতা জাগ্রত করাটাই আজকের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্যে ‘সংঘাত নয়, শান্তি সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ি’-এর সঙ্গে গভীরভাবে সংযুক্ত।

ফারুক-ই-আজম আরও বলেন, দ্য হাঙ্গার প্রোজেক্ট যে ‘শান্তি সহায়ক’ ধারণাটি সামনে এনেছে, তা অত্যন্ত সময়োপযোগী। আমাদের সমাজে যে অসহিষ্ণুতা, উত্তেজনা ও অস্থিরতা ক্রমশ দৃশ্যমান হচ্ছে— তার পেছনে দীর্ঘ দিনের নানা বঞ্চনা ও ক্ষোভ জমে আছে। 

তিনি বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ছাত্র-জনতার যে গণ-অভ্যুত্থান আমরা প্রত্যক্ষ করেছি, তা ছিল অন্যায় ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে, বিচারহীনতার বিরুদ্ধে ও অস্থিরতার বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ মানুষের সমষ্টিগত প্রকাশ। 

উপদেষ্টা আরও বলেন, শান্তি যদিও আমাদের চূড়ান্ত কামনা, কিন্তু অনেক সময় সেই শান্তির পথ আমাদের কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড়াতে বাধ্য করে। স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তাই ন্যায়, জবাবদিহিতা, ত্যাগ, সমতা ও মানবিকতার ভিত্তি মজবুত করা একান্ত প্রয়োজন।

এ সময় তিনি বলেন, শান্তিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হলে পরিবার থেকে শুরু করে রাজনৈতিক দল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্থানীয় সরকার, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যম— এমনকি ব্যক্তি পর্যায়েও সবার সক্রিয় অংশগ্রহণ অপরিহার্য। শান্তি প্রতিষ্ঠা কেবল নীতিগত বা প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের বিষয় নয়। এটি মানুষের মনন, মূল্যবোধ ও আচরণের ওপর নির্ভরশীল একটি সামাজিক প্রক্রিয়া। প্রত্যেক ব্যক্তি শান্তি-নির্মাণের একটি শক্তিশালী স্তম্ভ হতে পারেন।

উপদেষ্টা আরও বলেন, আপনারা যারা তৃণমূল পর্যায়ে নীরবে কাজ করছেন— আপনাদের নিষ্ঠা ও প্রচেষ্টা অবশ্যই সমাজে স্থিতিশীলতা, বোঝাপড়া ও মানবিকতার ভিত্তি আরও সুদৃঢ় করবে বলে আমি বিশ্বাস করি। 

তিনি বলেন, আমরা যদি ব্যক্তি ও সমাজের ভেতরে শান্তির মানসিকতা ও প্রবণতা দৃঢ়ভাবে প্রোথিত করতে পারি, তাহলে জাতীয় উন্নয়ন আরও শক্তিশালী হবে, সমাজে সহযোগিতা বাড়বে এবং আমরা একটি নিরাপদ, স্থিতিশীল ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হব।

রাজশাহীর পবা উপজেলার পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপের পিস অ্যাম্বাসেডর শেখ মো. মকবুল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন— সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন-এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. দাউদ মিয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক ও গবেষক অধ্যাপক ড. মেঘনা গুহঠাকুরতা, ব্রিটিশ হাইকমিশনের রাজনৈতিক ও সুশাসন বিভাগের প্রধান টিমোথি ডাকেট।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
রাবির ২ শিক্ষককে সাময়িক বহিষ্কার 
মালয়েশিয়ায় ১৬ বছরের কমবয়সীদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধের পরিকল্পনা 
উত্তরাঞ্চলে ছুটে আসছে পরিযায়ী হিমালয়ান গৃধিনী পাখি
সিলেটে বিপুল পরিমাণ চোরাচালান পণ্য জব্দ
সুন্দরবনের অপরাধ দমন ও মানচিত্র আধুনিকায়ন বিষয়ে কর্মশালা
ন্যায়, মানবিকতা ও দায়িত্ববোধ স্থায়ী শান্তির ভিত্তি : ত্রাণ উপদেষ্টা
বাউফলে নবনির্মিত পাবলিক লাইব্রেরি ভবনের উদ্বোধন
বগুড়ায় মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুই বন্ধু নিহত, আরেক বন্ধু আহত
শতবর্ষের শিক্ষার আলোকবর্তিকা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ
সুদানের সেনাপ্রধান কোয়াড যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবকে 'সবচেয়ে খারাপ' বলে নিন্দা জানিয়েছেন
১০