বাসস
  ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭:২০

যৌক্তিক সংস্কারের পরই নির্বাচন চায় জামায়াত : গোলাম পরওয়ার

শনিবার ভোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জামায়াতের সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। ছবি: বাসস

ভোলা, ২৫ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল এবং সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, যৌক্তিক সংস্কারের পরই নির্বাচন চায় জামায়াতে ইসলামী। 

একই সাথে মানবতা বিরোধী অপরাধেরও বিচার সম্পন্ন করতে হবে। 

তিনি বলেন, ‘আমরা খুব দ্রুত নির্বাচন চাই। তার আগে যৌক্তিক সংস্কার হওয়া দরকার।’

আজ শনিবার ভোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভোলা জেলা কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, কথিত মানবতাবিরোধী সাজানো অপরাধের নামে জামায়াতের যে সব নেতৃবৃন্দ হত্যার শিকার হয়েছে আমরা তাদের কাছে ঋণী। তাদের ঋণ পরিশোধ করতে হবে। আজকে যেই বাংলাদেশ হয়েছে মানবতাবিরোধী অপরাধে শহিদরাও সেই বাংলাদেশ চেয়েছিল। সুতরাং সেই বিচার হতেই হবে। জুডিশিয়াল কু করে জামায়াত নেতৃবৃন্দকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। সেই জুডিশিয়াল ক্যু'র সঙ্গে যারা জড়িত রয়েছে তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ ফ্যাসিবাদ কখনো মেনে নেবে না। আমরা সবাই ঐক্যমতের ভিত্তিতেই চলতে চাই। যারা কিছু কিছু সুবিধা নিচ্ছেন, তারা আমাদের সঙ্গে একমত নাও হতে পারেন। আমরা গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচন চাই, তা হবে সুষ্ঠুভাবে, সঠিকভাবে। আমরা নিয়ম তান্ত্রিকভাবে বাংলাদেশের সরকার গঠন করতে চাই।’ 

তিনি আরও বলেন,  ফ্যাসিবাদের মত অগণতান্ত্রিক পন্থা আমরা পছন্দ করি না। তবে নির্বাচন সুস্থ করতে হলে রাষ্ট্রের ক্ষতিগ্রস্ত বিভাগগুলো সংস্কার করতে হবে। বিশেষ করে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট যেই ৬-৭ বিভাগ রয়েছে। এসব বিভাগ সংস্কার না করে নির্বাচন দেয়া হলে কখনো নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনে করে আগামী ছয় মাসের মধ্যে বিশেষ দিকগুলো সংস্কার সম্পন্ন করে, সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাপ করে নির্বাচনের রোড ম্যাপ ঘোষণা করা দরকার। 

ভোলার দাবিদাওয়ার বিষয়ে মিয়া গোলাম পরোয়ার বলেন, ভোলার সাবেক এমপিদের লজ্জা হওয়া উচিত। 

ভোলার মানুষের যেই দাবি রয়েছে এগুলো আরও ২০ বছর আগের দাবি। এগুলো আপনারা কেন বাস্তবায়ন করতে পারলেন না। ভোলার ২০ লাখ মানুষের প্রাণের দাবি ভোলার গ্যাস ভোলায় ঘরে ঘরে গৃহস্থালি কাজের জন্য সংযোগ দিতে হবে। ভোলা- বরিশাল সেতু নির্মাণ করতে হবে। ভোলার আরেকটি সুন্দর দ্বীপ মনপুরা। এ দ্বীপকে বিদ্যুতের ক্ষেত্রে জাতীয় গ্রিডে সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে। ভোলার শিক্ষার্থীরা বরিশাল, ঢাকা গিয়ে পড়াশোনা করে। ভোলার খেটে খাওয়া অভিভাবকদের জন্য এটা অত্যন্ত কষ্টকর। এজন্য ভোলায় মেডিক্যাল কলেজ ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ভোলার মানুষের এ দাবির সঙ্গে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী একমত। আগামী দিনে বাংলাদেশ জামাতে ইসলামী ক্ষমতায় আসলে আমরা আপনাদের এই সব দাবি বাস্তবায়নে অগ্রাধিকার দিবো।

কেন্দ্রীয় মজলিসে সুরার সদস্য ও ভোলা জেলা আমির মাস্টার জাকির হোসাইনের সভাপতিত্বে জেলা সেক্রেটারি মাওলানা হারুনুর রশিদের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও বরিশাল অঞ্চল পরিচালক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসাইন হেলাল, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ও বরিশাল মহানগর আমির অধ্যক্ষ জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর, ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি, মজলিসে সুরার সদস্য ও কেন্দ্রীয় সাহিত্য সংস্কৃতি ও কেন্দ্রীয় গবেষণা বিভাগের সদস্য সচিব আ জ ম ওবায়েদুল্লাহ, কেন্দ্রীয় মজলিসে সুরা ও বরিশাল অঞ্চল টিম সদস্য এ কে এম ফখরুদ্দিন খান রাযি।

সম্মেলনে  বক্তব্য রাখেন, সাবেক জেলা আমির, কেন্দ্রীয় গবেষণা বিভাগের সদস্য মাওলানা ফজলুল করিম, সাবেক জেলা আমির অধ্যক্ষ মোস্তফা কামাল, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ও ঢাকার চরফ্যাশন সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট  পারভেজ হোসেন, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি মো. মহিবুল্লাহ, জেলা নায়েবে আমির অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, জেলা প্রচার সেক্রেটারি অধ্যাপক আমির হোসেন,  বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয়  কার্যকরী পরিষদ সদস্য, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মু.  হেলাল উদ্দিন রুবেল, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য, নারায়ণগঞ্জ মহানগর সভাপতি হাফেজ ইসমাঈল হোসেন প্রমুখ। 

সম্মেলনে ভোলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে লক্ষাধিক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন। 

সম্মেলনে আসার পথে বোরহানউদ্দিন উপজেলার জামাতের কর্মী আব্দুল হালিম হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ায় তার প্রতি সম্মেলন থেকে শোক জানানো হয়।