ঢাকা (উত্তর), ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : ভারতকে রাষ্ট্র হিসেবে আমরা শত্রু মনে করি না উল্লেখ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ভারতের জনগণের সাথে আমাদের আগামীতেও বন্ধুত্ব হবে। বিদেশে আমাদের বন্ধু থাকবে প্রভু নয়।
তিনি বলেন, 'আমাদের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, সেটা আমাদের জনগণ ঠিক করবে। কোন দেশের পররাষ্ট্র সচিব এদেশে এসে সেটি ঠিক করে দেওয়ার কোন অধিকার নেই। ভারত যদি মনে করে আওয়ামী লীগের পতনের পর তারা অন্য কোন দলকে সমর্থন দিয়ে সরকারে বসিয়ে এদেশে আবারো তাবেদারি করবে, তবে এদেশের ছাত্র-জনতা সেই সরকারকেও উৎখাত করে ভারতে পাঠিয়ে দিবে।'
আজ সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলরুমে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে আয়োজিত 'ভাষা আন্দোলন থেকে গণঅভ্যুত্থান অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ' - শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
‘৫২ ‘৭১ ‘৯০ ও ‘২৪ একসূত্রে গাঁথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণের সকল আন্দোলন সংগ্রাম ছিল বৈষম্যের বিরুদ্ধে, অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে।
তিনটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তিনটি শাসক গোষ্ঠীর পতন হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ৬৯ এর গণ-অভ্যুত্থানে আইয়ুব খান, ৯০ এর গণ-অভ্যুত্থানে এরশাদ এবং সবশেষে ২০২৪ এর গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পৃথিবীর ইতিহাসে নিকৃষ্টতম স্বৈরাচার খুনি হাসিনার পলায়নের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে। এই পতনের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণ ফ্যাসিবাদের হাত থেকে মুক্তি লাভ করেছে।
২০২৪-এ গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে বিপ্লব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ মানে হচ্ছে যাকে বাঁধা দেওয়া যায় না। বাংলাদেশের জনগণ ২৪
এর গণ-অভ্যুত্থানে সেটি বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছে। দুই হাজারের অধিক মানুষ গণহত্যার শিকার হয়েছে। হাজার হাজার আহত-পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। তবুও ছাত্র-জনতাকে দাবিয়ে রাখা যায়নি। এই গণ-অভ্যুত্থান এককভাবে কোন রাজনৈতিক দলের নয়, এদেশের ছাত্র-জনতার।
অনেক সত্য ইতিহাস কেন লেখা হয় না প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের মাষ্টার মাইন্ড কারা? এটাও কেউ কেউ ছিনতাই করার চেষ্টা করছে। অনেক বড় দলের নেতারা বলে, 'এই আন্দোলনে আমরা সম্পৃক্ত নই'। আর তাদের ছাত্র সংগঠন দাবি করে তাদের নেতৃত্বে বিপ্লব হয়েছে! অথচ যারা বিপ্লবের নেতৃত্ব দিয়েছে সেই ইসলামি ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, এই গণ-অভ্যুত্থানের মাস্টার মাইন্ড শহীদ ও আহত-পঙ্গুত্ব বরণকারী সকলে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সাক্ষী এই গণ-অভ্যুত্থানের মাস্টার মাইন্ড কারা।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ভারতের বিজেপি সরকার পরিচয় দিয়েছে যে তারা বাংলাদেশের জনগণের দুশমন। তারা আমাদের ভূখণ্ডকে আসামের সাথে যুক্ত করে মানচিত্র প্রকাশ করে সরাসরি বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করেছে। আমাদের বিজয় দিবসকে ভারতের বিজয় দিবস দাবি করে পোস্ট করার মাধ্যমে নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশের স্বাধীনতা ছিনতাই করতে চেয়েছে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারী ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন
জেডএনআরএফ ইউনিভার্সিটি অব ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সেসের অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুল আজিজ।