মঙ্গলবার রাজশাহীতে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান। ছবি : বাসস

রাজশাহী, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেছেন, এখনও আমাদের দেশে গরীবেরা বেশি কর দেয় তাই বৈষম্যহীনভাবে যার যতটুকু সামর্থ্য আছে সেইভাবে কর নির্ধারণ করতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের করের দুই-তৃতীয়াংশ আসে ভ্যাট থেকে আর এক-তৃতীয়াংশ আয়কর থেকে আসে। 

আজ মঙ্গলবার রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট বিষয়ে মতবিনিময়কালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের কাছাকাছি আমাদের মতো যে দেশগুলো রয়েছে তাদের তুলনায় আমাদের কর-জিডিপি অনুপাত সবচেয়ে কম। এমনকি পাকিস্তান থেকেও এখানো আমরা পিছিয়ে আছি। উন্নত দেশগুলোর কর জিডিপি অনুপাত ৪০ ভাগের উপরে। আর আমাদের তা মাত্র সাত ভাগ।

তিনি বলেন, আমরা যখনই আমাদের প্রশাসনিক সংস্কার বা অর্থনৈতিক অবস্থা অথবা দেশের উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করি তখনই সবশেষ যে কথাটি আসে তা হচ্ছে আমরা রাজস্ব আহরণ করতে না পারলে আমাদের লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয়। ৫৩ বছর ধরে আমরা যে ঋণ করেছি সেই ঋণের আকার শুধু বড় হচ্ছে। এমনও বলা হয় যে, আমরা যদি আজকে ঋণ নেওয়া বন্ধ করে দেই তারপরও বৈদেশিক ঋণ ও অভ্যন্তরীণ ঋণের যে স্টক আছে এগুলো পরিশোধ করা অনেক কঠিন হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, এখন আমাদের ১ কোটি ১২ লাখ আয়কর সনদধারী আছে। গত এক দশকে আয়কর সনদধারী ৮৫ লাখ বেড়েছে, কিন্তু রিটার্ন দেয় মাত্র ৪০ লাখ। এরমধ্যে কর পরিশোধ করেনা ২৫ লাখ। মাত্র ১৫ লাখ মানুষ কর দেয়। এই অবস্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।

গ্রামের অর্থনীতি এখন অনেক বড় হয়েছে। গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে এখন এন্ড্রয়েড ফোন, টেলিভিশন, ওয়াইফাই সংযোগ আছে। উপজেলা পর্যায়ে এখন অনেক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চলছে কিন্তু সেখানকার মানুষ আমাদের ট্যাক্স নেটের আওতায় নেই। তিনি উপজেলা পর্যায়ে ট্যাক্স নেটের আওতায় নিয়ে আসার উপর গুরুত্বারোপ করেন।

এসময় এনবিআর চেয়ারম্যান চাণক্যের উদ্ধৃতি উল্লেখ করে বলেন, কর প্রদানকারীদের সঙ্গে এমনভাবে আচরণ করতে হবে যেন তার পরবর্তী প্রজন্মরা তাদের ব্যবসাটা অব্যহত রাখতে পারে।

মতবিনিময় সভায় বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের সব কর্মকতাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।