ঢাকা, ৩ মার্চ, ২০২৫ (বাসস): চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার অভাবে দেড় বছরের শিশু মিশকাতের মৃত্যুর অভিযোগ তদন্ত করে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট বিভাগ।
স্বাস্থ্য বিভাগের সচিব অথবা অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করে এই তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে শিশু মিশকাতের পরিবারকে কেন ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুলও জারি করেছে হাইকোর্ট বিভাগ।
এসংক্রান্ত এক রিটের শুনানি শেষে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারি আইনজীবী মোহাম্মদ নোয়াব আলী। এই আইনজীবী বলেন, গত ২২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম জেলায় সন্দ্বীপ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুকুরের পানিতে পড়ে দেড় বছরের শিশু মিশকাত আহত হয়। এরপর মুমূর্ষু অবস্থায় মিশকাতকে চিকিৎসার জন্য সন্দ্বীপ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় তার আত্মীয়। কিন্তু ওই সময়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত কোনো চিকিৎসকই ছিলেন না। নার্সরাও ওই শিশুকে গ্রহণ করতে রাজি হচ্ছিলেন না। রোগীর স্বজনেরা অনেক আকুতি মিনতি করলে নার্স একজন চিকিৎসকের মোবাইল নম্বর দেন। অতপর রোগীর স্বজনরা ওই চিকিৎসককে ফোন করলে তখন ওই চিকিৎসক বলেন যে আজ ওনার ডিউটি নেই। তখন তিনি ওইদিনের ডিউটি ডাক্তারের মোবাইল নম্বর দিয়ে ওনার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। তখন রোগীর স্বজনেরা ডিউটি ডাক্তারকে কল দিলে তিনিও বলেন, আজ তার ডিউটি নেই, এই সব করতে করতেই প্রায় দেড় ঘণ্টা সময় চলে যায়। এক পর্যায়ে শিশু মিশকাতের মৃত্যু হয়।
পরবর্তীতে এই মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। গত ৯ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ নোয়াব আলী বিষয়টি তদন্ত করার জন্য এবং এই ক্ষেত্রে হাসপাতালের দায়িত্বরত ডাক্তারদের কোনো অবহেলা কিংবা অসদাচরণ আছে কিনা তা যাচাই করার অনুরোধ জানিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিগ্যাল নোটিশ দেন।
সে নোটিশের বিষয়ে কোনো সাড়া না পেয়ে পরে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে রিটটি করা হয়। সে রিটের শুনানি শেষে আজ আদেশ দেয় উচ্চ আদালত।