ঢাকা, ২ জুন, ২০২৫ (বাসস) : অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ দেশের তিনটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
দুদক জানায়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে শিক্ষা গবেষণায় অনিয়ম ও সরকারি অর্থের অপচয়ের অভিযোগে দুদক প্রধান কার্যালয়ের একটি টিম অভিযান চালায়। প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রকিউরমেন্ট আইন ও বিধিমালা উপেক্ষা করে সিঙ্গেল সোর্স পদ্ধতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইআর)-কে ৫ কোটি ৭৮ লাখ ২৯ হাজার টাকার ৮টি গবেষণার কাজ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, ৬ মাস মেয়াদি গবেষণাগুলো মাত্র ২ মাসে শেষ করা হয়েছে। এছাড়া গবেষণার প্রশ্নপত্র, ডেটা সংগ্রহ পদ্ধতি ইত্যাদি অনুমোদনের কোনো প্রমাণ না পাওয়ায় গবেষণার মান নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। টিম সংগৃহীত তথ্য যাচাই করে কমিশনে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবে।
এদিকে ভিএফএস গ্লোবাল বাংলাদেশ (প্রা.) লিমিটেডের বিরুদ্ধে ইতালিসহ বিভিন্ন দেশে যেতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের ভিসা প্রক্রিয়ায় ইচ্ছাকৃত জটিলতা তৈরি, হয়রানি ও অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগে দুদক প্রধান কার্যালয়ের অন্য একটি টিম অভিযান করে। অভিযানে সেবাপ্রার্থীদের সাক্ষাৎকারে জানা যায়, ইতালির ‘নুলা অস্তা’ বা ওয়ার্ক পারমিট থাকা সত্ত্বেও কারো কারো ক্ষেত্রে ভিসা পেতে ৬ মাস থেকে ১ বছর পর্যন্ত দেরি হচ্ছে অথবা ভিসাই মঞ্জুর হচ্ছে না, যার ফলে সেবাগ্রহীতারা ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছে। অভিযানকালে প্রয়োজনীয় দলিলপত্র জব্দ করা হয় এবং সেবার মানোন্নয়নে কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দেওয়া হয়। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কোনো অসাধু কর্মকর্তার ভিএফএসের সঙ্গে যোগসাজশ আছে কিনা, তা তদন্তে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে টিম কমিশনে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করবে।
এছাড়া, টাঙ্গাইলের ঘাটাইল এলএসডি সরকারি খাদ্য গুদামে চাল বিক্রির সময় মিল মালিকদের কাছ থেকে ঘুষ আদায়ের অভিযোগে দুদকের টাঙ্গাইল জেলা কার্যালয়ের একটি টিম অভিযান চালায়। সরেজমিন পরিদর্শন ও মিল মালিকদের সাক্ষাৎকারে চাল সংগ্রহে কেজিপ্রতি ৭৫ পয়সা হারে ঘুষ আদায়ের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া যায়। এছাড়া চাল সংগ্রহ ও বিতরণ প্রক্রিয়ায় নানাবিধ অনিয়ম ধরা পড়ে। টিম সংশ্লিষ্ট গুদাম থেকে রেকর্ডপত্র জব্দ করে এবং গুদামটি তৎক্ষণাৎ সিলগালা করে। সংগৃহীত দলিলপত্র বিশ্লেষণ করে টিম কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন পাঠাবে।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, সংগৃহীত তথ্য ও প্রমাণের ভিত্তিতে এই অভিযোগগুলোর তদন্ত চূড়ান্ত করা হবে এবং প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।