ঢাকা, ২ জুন, ২০২৫ (বাসস): রাজস্ব আয় বাজেট প্রণয়নের ভিত্তি হওয়া উচিত। কিন্তু আগামী অর্থবছরের (২০২৫-’২৬) বাজেটে রাজস্ব আয়ের সাথে মূল বাজেটের আকারের সম্পৃক্ততা লক্ষণীয় নয়। প্রস্তাবিত এই বাজেট বাস্তবায়ন আগামী দিনে সরকারের জন্য সহজ কিছু হবে না।
প্রস্তাবিত বাজেট সম্পর্কে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া এমন মন্তব্য করেছেন।
তিনি বলেন, ‘গুণগত দিক বিবেচনা করলে এই বাজেটে আমরা কোনো কিছুরই পরিবর্তন দেখি না। শুধু সংখ্যার সামান্যতম পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু বাজেটের সার্বিক কাঠামো আগের মতোই রয়েছে।’
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে আগামী ২০২৫-’২৬ অর্থবছরের জন্য উপস্থাপিত বাজেট সম্পর্কে তার ব্যক্তিগত অভিমত ব্যক্ত করেন।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ আজ সোমবার বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) আগামী অর্থবছরের (২০২৫-২৬) জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন।
বিএনপি আগামী বুধবার বাজেটের বিষয়ে দলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাবে উল্লেখ করে আমির খসরু মাহমুদ বলেন, ‘ওই দিন (বুধবার) সকাল ১১টায় রাজধানীর গুলশানস্থ দলীয় চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন মাধ্যমে বাজেটের ওপর দলের (বিএনপির) যে চিন্তা-ভাবনা তা আমরা দেশের মানুষের কাছে তুলে ধরবো।’
প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়নযোগ্য কিনা, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মূল বাজেট প্রণয়নে অবশ্যই রাজস্ব আয়কে মাথায় রাখতে হবে। এ বিষয়টি বিবেচনায় বাজেট সম্পর্কে ‘আমার মন্তব্য হচ্ছে, এবারের প্রস্তাবিত বাজেটের সাইজটা (আকার) আরও ছোট হওয়া উচিত ছিল।’
প্রস্তাবিত বাজেট কি গতানুগতিক ? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ ‘গতানুগতিক শব্দটা আমি বলতে চাই না। তবে এ কথা বলা যায় যে, এই বাজেট আগের সরকারের ধারাবাহিকতা মাত্র। অন্তর্বর্তী সরকার সেই জায়গা থেকে বের হতে পারেনি।’
আমির খসরু মাহমুদ বলেন, ‘রাজস্ব আয়কে ভিত্তি করেই আসলে বাজেট করা উচিত। তাহলে প্রাইভেট সেক্টরে মানি ফ্লো এবং বিনিয়োগ উভয়ই থাকলো। এতে সুদের হার এবং বিদেশ থেকে ঋণের পরিমাণ কমার সম্ভাবনাও থাকলো । ’
তিনি বলেন, ‘বিদেশি ঋণের সুদ কম পরিশোধ করতে হবে, সেই জায়গা থেকে আমরা সরে আসতে পারিনি। আমি মনে করি, মৌলিক জায়গায় গলদটা রয়েই গেছে !’
রাজস্ব আয়ের সাথে বাজেটের আকারের সম্পৃক্ততা নেই উল্লেখ করে সাবেক বাণিজ্য মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা সীমিত । কারণ হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ের ব্যাপার আছে, একটা নির্বাচিত সরকারের বাজেটের প্রতি যে আকর্ষণ, তা হচ্ছে দীর্ঘ সময় থাকার-এই ব্যবধানগুলো আমাদের বুঝতে হবে। এজন্য আমি মনে করি যে, বাজেটের সাইজটা কমানো দরকার ছিল। বিগত সরকার বাজেটের আকার বাড়াতে বাড়াতে যে জায়গায় নিয়ে গেছে সেটার সাথে বাংলাদেশের রাজস্ব আয়ের কোনো সম্পর্ক নাই।’
তিনি বলেন, ‘যখন রাজস্ব আয়ের পুরোটাই পরিচালন ব্যয়ের মধ্যে চলে যাবে, তখন উন্নয়ন বাজেট মোকাবেলায় দেশের বাইরে থেকে ধার বা ঋণ করে চালাতে হয়। এতে করে সরকার যখন দেশের ভেতর থেকে অতিরিক্ত ঋণ নেয় তা ওভারঅল বাজেটকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে গেলে ব্যাংকের সুদের হারও বেড়ে যায়।’