ঢাকা, ১৬ জুন, ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, দেশের রাজনীতিকে ইতিবাচক ধারায় নিয়ে যেতে সকল রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা রাখতে হবে।
তিনি বলেন, ‘একটি ফ্যাসিবাদমুক্ত মানবিক বাংলাদেশ গড়তে জামায়াতে ইসলামীর আমীর জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন। জন আকাঙ্ক্ষা পূরণ ও দেশের স্বার্থে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে জামায়াতে ইসলামী প্রয়োজনে যেকোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐক্যে যেতে রাজি আছে।’
সোমবার বিকেলে ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে স্থানীয় উলা মাজিদিয়া ইসলামীয়া দাখিল মাদরাসা ময়দানে অনুষ্ঠিত ঈদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জামায়াত সেক্রেটারি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘দেশের আদর্শ ও মূল্যবোধ যাতে কেউ ধ্বংস করতে না পারে, সে জন্য দেশপ্রেমিক ও গণতান্ত্রিক ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা করে একটি বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে। জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে ছাত্র-জনতার ত্যাগ ও কোরবানির বিনিময়ে অর্জিত সফলতা ধরে রাখতে হলে ফ্যাসিবাদীদের বিচার ও সংস্কার ত্বরান্বিত করতে হবে। তাই ইতিবাচক ধারায় দেশের রাজনীতিকে নিয়ে যেতে সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা রাখতে হবে।’
ডুমুরিয়া উপজেলা আমীর মাওলানা মুখতার হুসাইনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা জেলা সেক্রেটারি মুন্সী মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মুন্সী মঈনুল ইসলাম ও অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস। সমাবেশে বক্তৃতা করেন উপজেলা নায়েবে আমীর মাওলানা হাবিবুর রহমান ও গাজী সাইফুল্লাহ, সেক্রেটারি মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, হিন্দু কমিটির ডুমুরিয়া উপজেলা সভাপতি কৃষ্ণ নন্দী, সাহস ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি আব্দুল হান্নান, হিন্দু কমিটির উপজেলা সেক্রেটারি দেব প্রসাদ, স্বদেশ হালদার, যুব বিভাগের সেক্রেটারি বি এম আলমগীর হোসাইন, ছাত্রশিবিরের দক্ষিণ শাখার সভাপতি আবু তাহের, আব্দুল হাকিম, কামরুজ্জামান, শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, নির্বাচন সামনে আসলে রাজনীতিতে অনেক মেরুকরণ হয়। ইতোমধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোটের মধ্যে সমঝোতার উদ্যোগ শুরু হয়েছে। আমরা চাই দেশে আর কোনো ফ্যাসিবাদের জন্ম না হোক।
ফ্যাসিস্ট সরকারের বিচার সময়ের দাবি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ যেভাবে মানুষ হত্যা করেছে, তার বিচার এ সরকারের অধীনে হওয়া উচিত। দেশের সব সেক্টরে সংস্কার প্রয়োজন। তবে নির্বাচনের জন্য যে-সব সংস্কার প্রয়োজন, সেসব সেক্টরে অবশ্যই সংস্কার করতে হবে। অন্যথায় আরেকটি ফ্যাসিস্ট হাসিনা তৈরি হবে। সরকারের কাছে আমাদের কয়েকটি প্রস্তাব জানানো হয়েছিল স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রতিনিধি নির্বাচিত করে ক্ষমতা হস্তান্তর করা দরকার। পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন করার দাবি জানানো হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য আনয়নের জন্য প্রস্তাবনা পেশ করা হয়েছে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, জামায়াতের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও আনুগত্যের ক্ষেত্রে সংগঠনের অনেক অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সংগঠনকে এগিয়ে নিতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একে অপরের প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ পোষণ করে মন্তব্য করা এই সংগঠনের ঐতিহ্য নয়। তাই আশা করি, সংগঠনের ইতিহাস ও ঐতিহ্য রক্ষার্থে সবাই কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি বন্ধ করে সংগঠনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে ঐক্যবদ্ধভাবে ঝাঁপিয়ে পড়বে।