চট্টগ্রাম, ১৭ জুন, ২০২৫ (বাসস) : কক্সবাজারে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে ভূমি অধিগ্রহণের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় কক্সবাজারের সাবেক জেলা ও দায়রা জজ মো. সাদিকুল ইসলাম তালুকদার এবং সাবেক জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিনসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য ১ জুলাই দিন ধার্য করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মিজানুর রহমান এ আদেশ দেন। এসময় পাঁচ আসামি আদালতে হাজির ছিলেন।
মামলার বাকি আসামিরা হলেন-জেলা ও দায়রা জজ আদালতের স্টেনোগ্রাফার জাফর আহমদ, আইনজীবী মোস্তাক আহমদ চৌধুরী এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নাজির স্বপন কান্তি পাল।
আদালত সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি এলাকায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ভূমি অধিগ্রহণের প্রায় ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে স্থানীয় বাসিন্দা এ কে এম কায়সারুল ইসলাম চৌধুরী ২০১৪ সালের ১৯ নভেম্বর আদালতে মামলা করেন। মামলায় তৎকালীন জেলা প্রশাসক রুহুল আমিনকে প্রধান আসামি করে মোট ২৮ জনকে আসামি করা হয়। আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্তের দায়িত্ব দেন দুদককে।
তবে তৎকালীন জেলা ও দায়রা জজ মো. সাদিকুল ইসলাম তালুকদার ওই মামলার তদন্তের জন্য নথি দুদকে পাঠানোর সময় প্রধান আসামি রুহুল আমিনের নাম বাদ দেন। বিষয়টি জানার পর বাদী ওই জজসহ সাতজনের বিরুদ্ধে নথি জালিয়াতির মামলা করেন।
পরে মামলাটির তদন্ত করে দুদকের কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। তদন্তে সাবেক ডিসি ও জেলা জজের পাশাপাশি বাদীপক্ষের আইনজীবী, নাজির এবং স্টেনোগ্রাফারের জড়িত থাকার তথ্য উঠে আসে। তবে তদন্তে অভিযোগের প্রমাণ না মেলায় দুদকের কক্সবাজার আদালতের সাবেক সরকারি কৌঁসুলি আবদুর রহিম ও কক্সবাজারের সাবেক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এস এম শাহ হাবিবুর রহমানকে অব্যাহতি দেয়।
চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি কক্সবাজারের বিশেষ জজ আদালতে জালিয়াতির বিষয়ে দুদকের দেওয়া প্রতিবেদনের ওপর শুনানি হয়। ২৩ জানুয়ারি আদালত ওই প্রতিবেদন আমলে নিয়ে অভিযুক্ত পাঁচজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। পরে তারা আদালতে হাজির হয়ে অন্তর্বর্তী জামিন পান। সম্প্রতি মামলাটি চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে বিচারের জন্য স্থানান্তর করা হয়। মামলাটি বর্তমানে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
দুদক চট্টগ্রাম আদালতের বিশেষ কৌঁসুলি কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাবলু বলেন, আজ মামলার ধার্য তারিখে অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে থাকা পাঁচ আসামি আদালতে হাজির হন। আদালত অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন পর্যন্ত তাঁদের জামিনের মেয়াদ বাড়ান।