ঢাকা, ২৯ জুন, ২০২৫ (বাসস) : রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ও গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে বিধিবহির্ভূতভাবে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দের অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) জানান, সংস্থার প্রধান কার্যালয় থেকে আজ এই এনফোর্সমেন্ট অভিযান চালানো হয়। অভিযান পরিচালনাকালে টিম রাজউক থেকে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট প্লট সম্পর্কিত রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে। রেকর্ডপত্র পর্যালোচনাকালে দেখা যায় যে, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ১ নং সেক্টরের ১০২ নং সড়কের ৪৪ নম্বর প্লটটি সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নামে লিজ দলিলে রেজিস্ট্রিকৃত, যা তিনি ২০০১ সালে বিচারপতি কোটায় আবেদন সাপেক্ষে পেয়েছিলেন। ২০০৪ সালে ওই প্লটটি তার নামে সাময়িক বরাদ্দ করে প্রথম কিস্তির জন্য পত্র পাঠানো হলেও তিনি কিস্তি পরিশোধ করেননি। ফলে তার নামে বরাদ্দকৃত প্লটটি বিধিমোতাবেক বাতিল করার কথা হলেও তা করা হয়নি। পরে ২০০৯ সালে পুনরায় তিনি প্লটটি তার নামে বরাদ্দের জন্য আবেদন করেন। পরবর্তীতে রাজউক থেকে বিগত ২০০৫ সাল থেকে পুঞ্জীভূত সুদসহ টাকা জমা করে প্লটটি তার নামে বরাদ্দের সিদ্ধান্ত হয়। তথাপি, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ও রাজউকের কর্মকর্তাদের সাথে অসাধু যোগসাজশে সুদবিহীন কেবল প্রথম কিস্তি পরিশোধ ও বাকী টাকা অবসর গ্রহণের পর পরিশোধের শর্তে তিনি প্লটটি তার নামে বরাদ্দ নেন। এমতাবস্থায়, অভিযোগের সত্যতা রয়েছে বলে অভিযানকালে টিমের কাছে প্রতীয়মান হয়। এ বিষয়ে পরবর্তী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের লক্ষ্যে টিম কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবে।
এছাড়া টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলা বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ অফিস -এ অতিরিক্ত বিল তৈরি, গ্রাহকদের সাথে দুর্ব্যবহারসহ নানাবিধ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের টাঙ্গাইল জেলা কার্যালয় থেকে অপর একটি অভিযান চালানো হয়। অভিযানকালে টিম সরেজমিনে ঘাটাইল উপজেলার দিঘলকান্দি ইউনিয়নের আনার গ্রাম পরিদর্শন করে। এ সময় স্থানীয় লোকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং অভিযোগ সংশ্লিষ্ট মিটারসমূহের রিডিং ও পিডিবির বিলিং যাচাই করা হয়। প্রাথমিক যাচাইয়ে দেখা যায়, গ্রাহকদের প্রতি মাসের বিল প্রতি মাসে না দিয়ে চার/পাঁচ মাসের বিল একসাথে দেয়া হয়, ফলে গ্রাহকের বকেয়া বিল জরিমানার পাশাপাশি একসাথে বড় অঙ্কের বিল পরিশোধ করতে হয়। বিদ্যুৎ অফিসের এ গাফিলতি গ্রাহকদের ভোগান্তির কারণ বলে টিমের কাছে প্রতীয়মান হয়। এছাড়া অভিযানকালে মিটার রিডিংয়ের ক্ষেত্রেও বেশ কিছু অনিয়ম টিমের কাছে পরিলক্ষিত হয়।
এদিকে চট্টগ্রামের রহমতগঞ্জের গণপূর্ত বিভাগ-২ এ দরপত্র ছাড়া বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়, থেকে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান চালানো হয়। টিমের সদস্যরা গণপূর্ত বিভাগ-২ এ উপস্থিত হয়ে অভিযোগসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে অভিযোগের বিষয়ে অবহিত করে। পরবর্তীতে অভিযোগসংশ্লিষ্ট প্রয়োজনীয় রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয় বলে দুদকের জনসংযোগ শাখা জানায়।