ঢাকা, ১৪ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিচার চলাকালীন সাক্ষীদের বিদেশ থেকে আসতে না দেওয়ার সাইফার বার্তাসহ অন্যান্য বার্তা উদ্ধারে আগামী রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে লিগ্যাল নোটিশ দেবে তার পরিবার।
আজ বৃহস্পতিবার সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ধানমণ্ডির বাসায় পরিবারের সদস্যদের পক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তার ছোট ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী এসব কথা বলেন। এসময় তার স্ত্রী, বড় ছেলে ও মেয়ে উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেন, ‘১৯৭১ সালে আমার বাবা যে দেশের বাইরে ছিলেন, তার সাক্ষী হিসেবে বিচার চলাকালীন চারজন ব্যক্তি বাংলাদেশে আসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তখন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সেটি নাকচ করে দিয়েছিল। ওই চারজন হলেন, মুনীম আরজুমান খান, আম্বার হারুন সায়গাল, ইশহাক খান খাগওয়ানি ও নিয়াজ আহমেদ নূর। এই চার জন ব্যক্তি বাংলাদেশে আসতে না পেরে পরবর্তীতে ইউটিউবের মাধ্যমে তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেছিলেন। তারা যদি আসতে পারতেন, তাহলে তারা এটা প্রমাণ করতে পারতেন যে, আব্বা সেসময় পাঞ্জাব ইউনিভার্সিটিতে ছিলেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘তাদের নামগুলো বলার কারণ হচ্ছে, বাংলাদেশ ফরেন মিনিস্ট্রি তাদের বিদেশি দূতাবাস যেগুলো আছে, সেখানে যখন কোনো ম্যাসেজ পাঠানো হয়, সেগুলোকে সাইফার বলা হয়। সেই সাইফার ম্যাসেজগুলো বেশিরভাগ সময় কোডেড সিক্রেট থাকে। এটার একটি সাইফার ম্যাসেজ আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে। এতে এই চারজনের নাম উল্লেখ করে বলা আছে যে, কোনোভাবে তাদেরকে যেন ভিসা না দেওয়া হয়। এই সাইফার মেসেজের মাধ্যমে প্রমাণ হচ্ছে যে, আব্বার সঙ্গে একটা খুব বড় অন্যায় হয়েছে। আমার বাবাকে হত্যা করা হয়েছে। এটা একটা জুডিশিয়াল মার্ডার ছিল। এর সাথে আওয়ামী লীগের রেজিমের সরকার সরাসরি জড়িত ছিল।’
হুম্মাম বলেন, ‘আপনারা বুঝতে পারছেন যে, সাক্ষীদেরকে বাংলাদেশে না আসতে দেওয়া একজন মানুষকে ডিফেন্স ঠিক মতো না দিতে দেওয়া কত বড় অনিয়ম হয়েছিল। আমরা আহ্বান করতে চাই, আমরা বর্তমান ফরেন মিনিস্ট্রিকে একটা লিগ্যাল নোটিশ পাঠাচ্ছি। আমরা তাদের কাছে ডিমান্ড করছি, এই সাইফার ম্যাসেজগুলো ডি-ক্লাসিফাই করে দেওয়া হোক। আমার বাবার ট্রায়ালের সঙ্গে যতগুলো সাইফার মেসেজ জড়িত আছে, প্রতিটা যেন ডি-ক্লাসিফাই করে দেওয়া হয় এবং সেগুলোকে যেন আমাদের কাছে হস্তান্তর করা। একই সঙ্গে এই সাইফার মেসেজের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যারা জড়িত ছিল, তাদের নামও প্রকাশের দাবি জানান তিনি।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা প্রমাণ করতে পারব যে, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী নির্দোষ ছিলেন এবং তাকে জুডিশিয়াল মার্ডার করা হয়েছে।’
হুম্মাম আরো বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে আইনজীবীদের সাথে আলাপ করেছি। আমরা রিটের মাধ্যমে ইনশাল্লাহ কোর্টে যেতে পারব। আমরা যদি সরকারের সহযোগিতা পাই, এগুলো যদি ডি-ক্লাসিফাই হয়ে যায়। তাহলে ওই এভিডেন্সটা নিয়েই আমরা আদালতে যাব। আমরা এখন কোর্টে যেতে পারি, কিন্তু আমরা সব ফর্মালিটি মেইন্টেন করেই কোর্টে যাব।’
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ২২ নভেম্বর রাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। এর আগে ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর মুক্তিযুদ্ধের সময় সংগঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।