পদ্মার চরে ‘অপারেশন ফার্স্ট লাইট’, গ্রেপ্তার ৬৭

বাসস
প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৩৬
পদ্মার চরাঞ্চলে পুলিশ, র‌্যাব ও এপিবিএন সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে দেশি-বিদেশি অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী বাহিনীর ৬৭ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। ছবি: কোলাজ বাসস 

রাজশাহী, ১০ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস): রাজশাহী, নাটোর, পাবনা ও কুষ্টিয়ার পদ্মার চরাঞ্চলে দাপিয়ে বেড়ানো ১১টি সন্ত্রাসী বাহিনীর ৬৭ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী। 

গতকাল রোববার ভোর রাত থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশ, র‌্যাব ও এপিবিএন সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে। 

যৌথ বাহিনীর এ অভিযানে গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে বেশিরভাগই দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ইঞ্জিনিয়ার হাসিনুজ্জামান কাকনের ‘কাকন বাহিনী’র সদস্য। অভিযানে দেশি-বিদেশি অস্ত্র, মোটরসাইকেল, মাদকদ্রব্য, নৌকা ও স্পিড বোটসহ সরঞ্জমাদি উদ্ধার করা হয়েছে।

অভিযানের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বিকেলে রাজশাহী রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মোহাম্মদ শাহজাহান তার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান।

সংবাদ সম্মেলনে ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান জানান, ‘কাকন বাহিনী’ দমনে পুলিশ, র‌্যাব ও এপিবিএন সদস্যদের নিয়ে যৌথ অভিযান চালানো হয়। এই অভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন ফার্স্ট লাইট’। এতে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ টিমের ১ হাজার ২০০ সদস্য অংশ নেয়। 

অভিযানে মোট ৬৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরমধ্যে ৫৮ জন গ্রেপ্তার হয়েছে রাজশাহী, পাবনা ও নাটোর জেলার চরাঞ্চল থেকে। অন্য নয়জন গ্রেপ্তার হয়েছে পুলিশের খুলনা রেঞ্জের কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার চরাঞ্চল থেকে। এরা কাকন বাহিনীসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্য। তাদের কয়েকজন সাজাপ্রাপ্ত আসামিও। 

ডিআইজি জানান, অভিযানে রাজশাহী, নাটোর ও পাবনা জেলা থেকে ১০টি আগ্নেয়াস্ত্র, চারটি গুলি, দুটি গুলির খোসা, ২৪টি হাসুয়া, ছয়টি ডোসার, দুটি ছোরা, চারটি চাকু, তিনটি রামদা, দুটি চাইনিজ কুড়াল, একটি লোহার পাইপ, একটি টিউবওয়েল, পাঁচটি মোটরসাইকেল, ২০ বোতল ফেনসিডিল, ৮০০ গ্রাম গাঁজা ও ৫০ পিস ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করা হয়েছে। আর কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের চর থেকে একটি ইঞ্জিন চালিত নৌকা, একটি স্পিড বোড, অস্ত্র রাখার একটি সিলিন্ডার, দুটি তাবু ও পাঁচটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে। 

ডিআইজি বলেন, এই অভিযানই শেষ নয়। অভিযান শুরু হলো। মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এখন থেকে নিয়মিত অভিযান চলবে। সন্ত্রাসী বাহিনীর কার্যক্রম পুরোপুরি নির্মূল সম্ভব না হলেও নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে।

পুলিশ জানিয়েছে, পদ্মার চরের কাকন বাহিনী ছাড়াও সন্ত্রাসী বাহিনীগুলোর মধ্যে রয়েছে মন্ডল বাহিনী, টুকু বাহিনী, সাঈদ বাহিনী, লালচাঁদ বাহিনী, রাখি বাহিনী, শরীফ কাইগি বাহিনী, রাজ্জাক বাহিনী, চল্লিশ বাহিনী, বাহান্ন বাহিনী, সুখচাঁদ ও নাহারুল বাহিনী। এসব বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, পারস্পরিক দ্বন্দ্বের ফলে খুন, চরের চাষী ও জেলেদের হত্যা, চরের জমি দখল, বাথানের রাখাল ও মালিকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়, মাদক ও অস্ত্র পাঁচার, বেআইনী অস্ত্র দখলে রাখা, নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠন ও সর্বহারাদের আশ্রয় দান, পদ্মা চরের খড়ের মাঠ দখল এবং ডাকাতি। এতে অশান্ত থাকে চরাঞ্চল।

গত ২৭ অক্টোবর কুষ্টিয়ার দৌলতপুর, রাজশাহীর বাঘা ও নাটোরের লালপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী মরিচা ইউনিয়নের চৌদ্দহাজার মৌজার নিচ খানপাড়া এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় তিনজন নিহত হন। পরবর্তীতে কাকন বাহিনীর প্রধান হাসিনুজ্জামান কাকনসহ বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে দৌলতপুর থানায় মামলা হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে রোগী সেজে চুরি,৭ নারী গ্রেফতার
জাতীয় ঈদগাহ মাঠে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ
নড়াইলে পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত
দৈনিক আজকের কণ্ঠ পত্রিকার ছদ্মবেশে প্রপাগাণ্ডা মেশিন 
যশোরে ২টি সোনার বারসহ এক ব্যক্তি আটক
বরিশালে বিশ্ব সাদাছড়ি নিরাপত্তা দিবস পালিত 
ফেনীতে সম্প্রীতির বাংলাদেশ বিনির্মান বিষয়ক মতবিনিময় সভা
সংযুক্ত আরব আমিরাত গাজা স্থিতিশীলতা বাহিনীতে যোগ দেবে না : জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা
দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউনের বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ
রাজবাড়ীতে শিশু-কিশোরদের সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী 
১০