
ঢাকা, ২৪ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস): বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংবাদকর্মীদের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে সংবাদমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনায় নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, আমাদের কমিটমেন্ট খুব পরিষ্কার, আমার ৩১ দফাতে বলেছি, আমরা একটা স্বাধীন গণমাধ্যম দেখতে চাই। বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে সংবাদমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো অগ্রাধিকারভিত্তিতে বিবেচনায় নেবে হবে।
আজ সোমবার দুপুরে বাংলাদেশ চীন-মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সংবাদমাধ্যম সংস্কার নিয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সংবাদমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ পর্যালোচনা, স্বাধীন সাংবাদিকতা ও কর্মীবান্ধব সংবাদমাধ্যম প্রতিষ্ঠায় করণীয় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার-বিজেসি।
বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলেই সংবাদমাধ্যমের উন্নয়নের জন্য কাজ করে দাবি করে দলটির মহাসচিব বলেন, ১৯৭৫ সালে একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। দেশের সমস্ত পত্রিকাগুলোকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, মাত্র চারটি পত্রিকা ছাড়া, সে পত্রিকাগুলো সরকারি নিয়ন্ত্রণে চলছিল। এ অবস্থা থেকে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যখন রাষ্ট্র পরিচালনায় এসেছেন, তখন তিনি মুক্ত-স্বাধীন সংবাদপত্রের ব্যবস্থা করেছেন।
তিনি বলেন, বিএনপি যখনই রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসেছে তখনই গণমাধ্যমকে উন্নত করবার জন্য অনেকগুলো ব্যবস্থা নিয়েছে। তারমধ্যে আজকে টেলিভিশন চ্যানেলগুলো আমরা দেখছি, সেইসময় কিন্তু কাজগুলো শুরু হয়েছিল।
বিগত সময়ে সাংবাদিকরা দলীয় আচরণ করেছেন এমন অভিযোগ তুলে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘সাংবাদিকরা রাজনৈতিক দলগুলোর পকেটে ঢুকে পড়লে সমস্যার সৃষ্টি হয়। জনগণের কাছে অঙ্গীকার করে স্বাধীন সাংবাদিকতা করুন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা দেখেছিতো গত ১৫ বছরে কি হয়েছে। গত ১৫ বছর আপনারা নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে ফ্যাসিস্টকে সমর্থন করেছেন। এটা আমাদের দেখা, এদেশের মানুষের দেখা। সেই জায়গাগুলোতে আপনাদেরও কমিটমেন্টের প্রয়োজন আছে, আপনারা ওই জায়গাগুলো থেকে নিজেরা বাইরে থাকবেন, আপনাদের কমিটমেন্ট থেকে জনগণের কাছে স্বাধীন সাংবাদিকতা করবেন।
মতবিনিময় সভায় বিএনপি ছাড়াও জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ, জাতীয় নাগরিক কমিটি-এনসিপি, এবি পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, সিপিবি, গণ অধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেন।
বিজেসির চেয়ারম্যান রেজোয়ানুল হকের সভাপতিত্বে সভায় অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সদস্যসচিব ইলিয়াস হোসেন।
মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিজেসির নির্বাহী মিলটন আনোয়ার। বিজেসির ট্রাস্টিদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন তালাত মামুন ও ফাহিম আহমেদ।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন, গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক, সিপিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদের সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন প্রমুখ।