দিনাজপুরে হিলি স্থলবন্দরে হানাদার মুক্ত দিবস পালিত

বাসস
প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩:৫৪
ছবি : সংগৃহীত

দিনাজপুর, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস): জেলার  হিলি স্থলবন্দর আজ ১১ ডিসেম্বর পাক-হানাদার মুক্ত দিবস বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন যৌথ ভাবে পালন করেছেন।

জেলার হাকিমপুর উপজেলা যুদ্ধ সংসদের কমান্ডার মো. লিয়াকত আলী বলেন। ১৯৭১-এ মহান যুদ্ধের পর থেকে প্রতিবছর ১১ ডিসেম্বর ‘ক্ষনিকের জন্য হলেও কাঁদিয়ে তোলে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা,সে সময়ে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও হিলিবাসীকে’। পাক হানাদার বাহিনীর নির্মম নির্যাতন, হত্যা যজ্ঞ আর সম্ভ্রম হানীর ঘটনা স্বরণ করিয়ে দেয় সেই ১৯৭১ সাল, ১১ ডিসেম্বরের ভয়াল দিনের কথা। 

আজকের এই দিনে জেলার হাকিমপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী ‘হিলি স্থলবন্দর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাক হানাদার বাহিনীর দীর্ঘ সময় সম্মুখ যুদ্ধের পর শত্রুপক্ষ টিকতে না পেরে পালিয়ে যায়। এই সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে হিলি স্থলবন্দর তথা হাকিমপুর উপজেলা  শক্র মুক্ত হয়েছিলো’।

এই অঞ্চলের স্বাধীনতাকামী মানুষ সেদিনের হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে ছিলো চরম সাহসিকতায়। হানাদার বাহিনী থেমে থেমে মেতে উঠেছিলো নির্মম হত্যাযজ্ঞে। আক্রমন চালিয়ে ছিল নিরীহ হাকিমপুর উপজেলার হিলি সীমান্তবাসীর উপর। ‘সম্মুখ সমর যুদ্ধ ও তৎকালীন ইপিআর ক্যাম্প এলাকায় প্রায় এক কিলোমিটার সুরঙ্গ পথে সন্মুখ যুদ্ধে মেতে ছিল পাক হানাদার বাহিনীর শত্রুরা।

পাকহানাদার বাহিনীরা হাকিমপুর উপজেলার ছাতনী গ্রামে শক্ত ঘাটি প্রতিষ্ঠা করে। বিভিন্ন দিকে ক্যাম্প গঠনের মাধ্যমে ভারী অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অবস্থান গ্রহণ করে। সে সময় পাক হানাদার বাহিনী ওই উপজেলার মুহাড়া পাড়া গ্রামে তারা একটি গভীর খাল কেটে বেশ কয়েকটি বাংকার তৈরী করে। ৬ থেকে ৭ হাজার পাক সেনা ৪০'টি ট্যাংক নিয়ে সেখানে অবস্থান করেছিল। ১৯৭১-এ ৬ ডিসেম্বর ভারত সরকার বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারকে সমর্থন দেয়ার পর হিলিতে ভারত-বাংলাদেশ মিত্র বাহিনীর সঙ্গে পাক সেনাদের প্রচন্ড যুদ্ধ শুরু হয়।

প্রথমদিকে মুহাড়া পাড়া এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাসহ মিত্র বাহিনী ব্যাপক তীরের সম্মুখিন হয়। পরবর্তীতে মিত্র বাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধারা আরো সু-সংঘঠিত হয়ে ১০ ডিসেম্বর মুহাড়া পাড়া এলাকাসহ পাক সেনাদের বিভিন্ন আস্তানায় আকাশ পথে এবং স্থলপথে একসঙ্গে হামলা চালায়। দু'দিন ধরে প্রচন্ড যুদ্ধের পর পাকহানাদার বাহিনী পরাস্থ হয়।১৯৭১-এ ১১ ডিসেম্বর বেলা ১টায় মুক্তিযুদ্ধের ৭ নম্বর সেক্টরের আওতায় দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী হিলি স্থলবন্দর হানদার মুক্ত হয়েছিল। সেদিনের শহীদদের স্বরনে হিলিতে নির্মাণ করা হয়েছে স্মৃতিস্তম্ভ “সন্মুখ সমর”।

প্রতি বছরের ন্যায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি হিসাবে আজ ১১ ডিসেম্বর দুপুরে সীমান্তের জিরো পয়েন্টে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ থেকে বর্ণাঢ্য মিছিল বাহির হয়ে সম্মুখ সমর এ গিয়ে শেষ করা হয়েছে। মিছিল শেষে সেখানে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা করা হয়েছে। বাদ যোহর শহীদদের স্বরণে তাদের রুহের মাগফেরাত কামনায় উপজেলার প্রত্যেকটি মসজিদে বিশেষ দোয়া করা হয়েছে। কর্মসূচি গুলোতে বীর মুক্তিযোদ্ধারাসহ স্বাধীনতার স্বপক্ষের জনসাধারণ ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা কর্মচারীরা অংশ গ্রহণ করেন। শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি চারণ, রুহের মাগফেরাত কামনাসহ বিভিন্ন কর্মসুচির মাধ্যমে দিবসটি সফল ভাবে পালন করা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
গুলিবিদ্ধ হাদির পরিবারের পাশে ডা. জুবাইদা রহমান
ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় ছাত্র অধিকার পরিষদের বিক্ষোভ মিছিল
২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন তারেক রহমান
শামীম নির্বাচিত হলে হাতিয়া মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে : আমীর খসরু
ওসমান হাদির ভাইয়ের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ, সর্বোচ্চ সহযোগিতার নিশ্চয়তা
হাদিকে গুলির ঘটনা নির্বাচনের জন্য অশনিসংকেত : ইসলামী আন্দোলন
ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীদের গ্রেফতারে কাজ করছে ডিএমপি
আবদুল মোমেন খান দেশে সর্ব প্রথম দারিদ্র্য ও খাদ্য সমস্যা থেকে উত্তরণ ঘটান : মঈন খান
অতীতের যে কোনো সময় থেকে সবচেয়ে বেশি ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : তারেক রহমান
শিল্পকলায় আগামীকাল মঞ্চস্থ হবে যাত্রাপালা ‘কাশেম মালার প্রেম’
১০